পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ১৭২ } কাল সঙ্কল্পের জন্য পথের ভিখারী, আজ সঙ্কল্পের নিমিত্ত ব্রাহ্মণ, কাল সঙ্কল্পাকুরোধে যবন বা ম্লেচ্ছ হইতেছি । সঙ্কল্পের হস্ত হইতে পরিত্রাণ পাইব কিরূপে ? সঙ্কল্পের দ্বারা সঙ্কল্পবিহীন হওয়া যায় না। আর্য্যদিগের সঙ্কল্পবিহীন অবস্থার সহিত পূর্ণ সঙ্কল্পযুক্ত বর্তমান হিন্দুদিগের কি তুলনা হয় ? তাহারা সঙ্কল্প পরিত্যাগ করিয়া যে অবস্থায় অবস্থিতি করিতেন, এক্ষণে কি তাহাদের পরমাণু প্রমাণ কোন ভাব কাহাতেও দেখিতে পাওয়া যায় ? তাহদের মস্তিষ্কপ্রস্থত কাৰ্য্যকলাপ স্মরণ করিলে কে না বিমোহিত হইয়া থাকেন ? তাহার। না করিতে পারিতেন কি ? তাহার ইচ্ছা করিলে সৃষ্টি স্থিতি প্রলয় করিতে পারিতেন । কিন্তু বৰ্ত্তমান কালেতে সেই আর্য্যদের ন্যায় কি কেহ আছেন ? কেন নাই ? সঙ্কল্পই সৰ্ব্বতোভাবে সৰ্ব্বনাশ করিয়াছে। আমরা সকলেই সঙ্কল্পের দাস । সঙ্কল্প ব্যতীত একপদ অগ্রসর হই নাই, কোন বিষয় চিন্তা করি না, আমাদের উপায় ভরসা কিছুই নাই। একবার আপনার দিকে আপনি দৃষ্টিপাত করিলে নিজ নিজ অবস্থা বুঝা যাইবে । সঙ্কল্পহিল্লোলে কোথায় ভাসিয়া যাইতেছি । সঙ্কল্প করিতে শিক্ষা করিয়া এতদূর সিদ্ধ হইয়াছি যে, আপনার অনিচ্ছ সত্বেও সঙ্কল্প হইয়া যায়। এ অবস্থায় কস্মিন কালেও সঙ্কল্পের অধিকার বহিভূত হইবার আশা নাই । সংসারে দেখা যায় যে, আতিশয্যাবস্থার একই প্রকার ফল । অবস্থাবিশেষে উত্তাপ এবং শৈত্যের একই প্রকার ফল । জলে উত্তাপ প্রয়োগ করিলে তাহ বিস্তীর্ণ হয় এবং অতি শৈত্যেও উহাতে তদ্রুপ ফল ফলিয়া থাকে। আমীর এবং ফকীরের অবস্থার ফল সমান । সেইরূপ প্রকার সঙ্কল্পবিহীন এবং সঙ্কল্পের আতিশয্যা হইলে উভয়বিধ অবস্থার একই প্রকার ফল। আমরা এক্ষণে সঙ্কল্পের আতিশয্যাবস্থায়