পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ Sb'8 j বৰ্দ্ধিত হইলে যখন অন্যান্য পদার্থ ভোজন দ্বারা জীবন ধারণ করে, তখন তাহাও পরিশেষে শোণিতে পর্য্যবসিত হয় । মনুষ্যের জন্ম হইতে মৃত্যুকাল পর্য্যন্ত বিচার করিয়া দেখিলে শোণিতকেই জীবজীবনের একমাত্র কারণ বলিয়া দেখিতে পাওয়া যায়। শুক্র শোণিত হইতে উৎপত্তি হয়, মাতৃগর্ভস্থিত ওভাম নামক ডিম্ববৎ পদার্থ শোণিত হইতে জন্মে। গর্ভে শোণিত, পৃথিবীতেও শোণিত। এই শোণিতের অভাব হইলে জীব মরিয়া যায়। এই শোণিতের সহিত অন্ত পদার্থ মিশ্রিত হইলে উহার দ্বার। আর সুচারুরূপে কাৰ্য্য হইতে পারে না । বায়ুকেই যে জীবনস্বরূপ কহ যায়, তাহ শোণিতের সহায়তাকারী ব্যতীত অন্য কিছুই নহে। এই নিমিত্ত শোণিতকেই জীবন কহা যায়। সুতরাং আত্মা বলিয়া কিছু মনে করিয়া লওয়া সম্পূর্ণ কাল্পনিক কথা । কেহবা শারীরিক কাৰ্য্য দেখিয়া মনে করেন যে, জীবনীশক্তি বলিয়া স্বতন্ত্র শক্তিও আছে, যাহাকে ইংরাজীতে ভাইট্যাল ফোস (Vital Force) বলে। তড়িৎ, চুম্বক, রাসায়নিক শক্তি যেমন জড় শক্তির বিকাশ, তেমনি চেতন পদার্থ সম্বন্ধে জীবনীশক্তি বুঝিতে হইবে । ■ যেমন তড়িৎ-শক্তির দ্বারা অপর বস্তু তড়িৎ-শক্তিবিশিষ্ট দেখায়, যেমন লৌহাদিতে চুম্বক শক্তির বিকাশ হয়, যেমন এক পদার্থ হইতে অপর পদার্থে উত্তাপ গমন করে, তেমনি জীব, জীবনবিশিষ্ট জীব হইতে জীবনীশক্তি লাভ করিয়া থাকে। পিতা মাতার যে ব্যাধি থাকে, সস্তানে কিরূপে তাহ প্রকাশ পায় ? সস্তানে যেমন ব্যাধি গমন করে, জীবনীশক্তিও তেমনি গমন করিয়া থাকে। মৃত ব্যক্তির জীবনী শক্তি থাকে না, সুতরাং তাহা হইতে জীবনীশক্তি বাহির হওয়াও অসম্ভব ।