পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/২১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ و هاد ] সঙ্কল্পবিশেষ। এই সঙ্কল্পই চুম্বক এবং লৌহের সন্মিলন ভঙ্গ করিবার মূল কারণ। যদ্যপি এই কর্দম ধৌত করিয়া দেওয়া যায়, তাহা হইলে বিনা যত্নে-বিনা প্রয়াসে–লৌহ চুম্বক কর্তৃক আকৃষ্ট হইয়া যাইবে । আমরা কামিনীকাঞ্চন সঙ্কল্পে জীবাত্মাকে আবৃত করিয়া রাখিয়াছি, অথবা তিনি আবৃত হইয়া আছেন, সেই সঙ্কল্পের বিরাম হইলেই তিনি স্বপ্রকাশ হইয়া পড়েন। যেমন গঙ্গার জল ঘটরূপ সঙ্কল্পে আবদ্ধ হইলে গঙ্গা হইতে বিচ্ছিন্নভাব দেখায়, কিন্তু ঘট ভাঙ্গিয়া দিলে গঙ্গার জল গঙ্গায়ই মিশাইয়া যায়। রামপ্রসাদ সেন সঙ্কল্পবিহীন হইয়াছিলেন বলিয়া মৃত্যুকালে জীবাত্মার পরিণাম পরমাত্মার বিলীন হওয়া জ্ঞান করিয়া বলিয়াছিলেন যে, “জলের বিম্ব জলে উদয়, জলে হয় সে মিশায় জলে ।” এই নিমিত্ত বলিতেছি যে, আত্মা লইয়া আলোচনা করিলে তাহার কোন ফল ফলিতে পারে না। আত্মা স্থল চক্ষুর আয়ত্তাধীন নহে যে, আমরা তাহার সিদ্ধান্ত করিতে পারিব । আত্মা বুঝিতে হইলে অন্তের কথা শুনিয়া নিশ্চিন্ত হইয়া যাইলে কষ্মিনকালে বাসনা সিদ্ধ হয় না। আত্মা বুঝিতে হইলে আত্মদর্শী ব্যক্তির উপদেশ অবলম্বন পূর্বক স্থির হইয়া অপেক্ষা করিলে কালে আত্মাই আপনি দেখা দিয়া থাকেন। রামকৃষ্ণদেব বলিতেন যে, যে চতুর ব্যক্তি হয়, সে কোন পুষ্কণীতে মাছ ধরিতে যাইলে যাহারা তাহাতে মাছ ধরিয়াছে, তাহাদের নিকট জিজ্ঞাসা করিয়া লয় যে, কিসের টোপে, কি চারে, মাছ ধরা যায়। এইরূপে মৎস্য ধরিবার নানাবিধ বিষয় অবগত হইয়া সে ছিপ ফেলিয়া চুপ করিয়া বসিয়া থাকে। সে কখন ঘাই কখন ফুটু দেখিতে পায়। কখন বা চারে মাছ বেড়াইলে ফাত না নড়িতে থাকে এবং টানের মুখে হয়ত একখানা আঁস উঠিতে পারে। পরে সময়ক্রমে মাছ