পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/২১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ১৯৭ ] ধরা পড়িয়া থাকে। আত্মাদর্শনেচ্ছুক হইয়া নামরূপ টোপ, এবং ভক্তিরূপ চার ফেলিয়া বসিয়া থাকিলে একদিন আত্মারূপ মাছ ধরা পড়িবে, সে বিষয়ের সন্দেহ নাই । আমরা আত্মা লইয়া বিচার দ্বারা এই বুঝিলাম ষে, পরমাত্মা সঙ্কল্পাবদ্ধ হইলে তাহাকে আত্মা কহে। প্রত্যেক জীব জন্তু, কীট পতঙ্গ, স্থাবর জঙ্গম পরমাত্মার সঙ্কল্পপ্রস্থত পদার্থ। প্রত্যেক বস্তুই আত্মা । অতএব পুনরায় বলিতেছি যে, পরমাত্মা এবং আত্মা বলিলে সঙ্কল্পবিহীন এবং সঙ্কল্পযুক্ত পরমাত্মাকেই বুঝায়। যে সময়ে তাহার সঙ্কল্প না থাকে, সে সময়ে তিনি পরমাত্মা, সঙ্কল্পযুক্ত হইলেই তাহাকে আত্মা কহা যায়। এক্ষণে আমাদের একটা প্রশ্ন মীমাংসা করিলেই অদ্যকার বিষয় সমাপ্ত হইয়া আইসে। আমি বলিয়াছি যে, আত্মা সঙ্কল্পিত মৃত্যুর পর কিরূপে নরদেহ ধারণ করিয়া সঙ্কল্পের সাধনা করিয়া থাকেন। এই প্রস্তাবট হইতে আত্মাবিশ্বাস করা, বা না করিবার ভাব আসিবে। যদ্যপি আত্মার পারলৌকিক স্বাতন্ত্র্য থাকে, তাহা হইলে সুখ দুঃখ ভোগ সম্বন্ধে তিনিই দায়ী হইয়া থাকেন। অতএব এই গুরুতর বিষয়ে প্রভূ যে প্রকার মীমাংসা করিয়াছেন, তাহা এক্ষণে বলিতেছি । জীবগণ স্কুলে দুই ভাগে বিভক্ত ; যথা, দেহ এবং দেহী । যখন কোন জীব মরিয়া যায়, তখন তাহার দেহ পূৰ্ব্ব সঙ্কল্পানুযায়ী অবস্থালাভ করিয়া থাকে। কেহ সঙ্কল্প করেন যে, তাহার দেহ ভক্ষ্মীভূত হইবে, জীবনাস্তে প্রায় তাহাই হইয়া থাকে । কেহ সঙ্কল্প করেন যে, তাহার দেহ দীর্ঘকাল তদবস্থায় থাকিবে, তাহার মৃত্যু হইলে সেই দেহ সংরক্ষিত হয়। যে দেহ পঞ্চীকৃত করা হয়, তাহার ভূতসকল হয় স্বীয় স্বীয় ভূতে যাইয়া মিলিত হয়, না হয় কোন প্রকার যোগে অবস্থিতি করে। এই ভূত সকল জীবদেহ গঠনোপযোগী হইয়া পুনরায় জীবদেহে