পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/২১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ২০৫ ] চক্ষু হইলেই তাহাকে দেখা যায়। যেমন বায়ু অদৃশু বস্তু, চক্ষে দেখা যায় না, কিন্তু বৈজ্ঞানিক চক্ষু ফুটিলে তাহাতে ইহার ছবি দর্শন করা যায়। এই কথা আমার স্মরণ ছিল, কিন্তু পরমাত্মা যে কিরূপে সৰ্ব্বত্রে পরিব্যাপ্ত হইয়া আছেন, তাহ দর্শন অদৃষ্টক্রমে সংঘটন হয় নাই । একদা পূজার সপ্তমীর দিবস প্রাতঃকালে আমি ট্রাম গাড়ীতে চড়িয়া ধৰ্ম্মতলায় যাইতেছিলাম, পথে মনে হইল যে, ঠাকুর বলিয়াছিলেন যে, সৰ্ব্বত্রে পরমাত্মা বিরাজ করিয়া থাকেন, কিন্তু সে কথা কথাই হইয়া রহিল । এইরূপ মনে করিবামাত্র আমার শরীর কণ্টকিত হইয়া | উঠিল, প্রাণ ব্যাকুলিত হইয়া উঠিল, তখন যে দিকে চাহিয়া দেখি, সেই দিকেই কি অপূৰ্ব্ব ছবি দর্শন করিতে লাগিলাম, তাহা বলিতে পারি না । আহা ? সে দর্শনের উপমা নাই, বলিবার শব্দ নাই, বাস্তবিক বোবার স্বপ্লবৎ । সে দর্শন রূপবিশেষ নহে, জ্যোতিঃবিশেষও নহে। যে দিকে যাহা ছিল, সে দিকেই তাহ দেখিতেছি এবং তাহাদের অন্তর বাহির সেই অপূৰ্ব্ব অব্যক্ত দৃশ্য পদার্থের দ্বারা উলুতঃ ত হইয়া রহিয়াছে। ক্রমে আমি বিহবল হইয়া পড়িলাম । নয়নে বারিধারা আসিতে লাগিল, কিন্তু ছার লোকলজ্জা আসিয়া বলিতে লাগিল, সাবধান ট্রামে অপর ভদ্রলোক রহিয়াছেন, তোমাকে কাদিতে দেখিলে তাহারা কি মনে করিবেন? অতএব ভাব সঙ্কোচ করিতে চেষ্টা কর। লজ্জার পরামর্শই বলবতী হইয়া উঠিল, সুতরাং আমি অন্তমনা হইবার চেষ্টা করিতে লাগিলাম, কিন্তু সেত আমার চিত্তবিকারজনিত ঐন্দ্রজালিক ঘটনা নহে যে, অন্যমন হইলে ভুলিয়া যাইব । সে দৃশ্য কিছুতেই গেল না । নয়ন আর বারিধারা সম্বরণ করিতে পারিল না, আমি কাদিতে লাগিলাম। তখন মনে মনে প্রভুকে জানাইলাম যে, ঠাকুর আমি বুঝি