পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/২২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ২১৪ ] বিভাগ এবং আশ্ৰমধৰ্ম্ম আমাদের পক্ষে বাস্তবিক হিতকর কি না, অদ্য রামকৃষ্ণদেবের আদেশ মতে তাহার মীমাংসা করিতে আসিয়াছি। দয়াময় ! দয়া করিয়া উনবিংশশতাব্দীর অবোধ নরনারীদিগের জ্ঞানচক্ষু উন্মীলন করিবার নিমিত্ত বিজ্ঞানপূরিত উপদেশ-রস্ত্ররাজি যেমন অকাতরে দান করিয়া থাকেন, অদ্য প্রভু ! তেমনি করিয়া কৃপাকটাক্ষ করুন, যেন আমরা আশা মিটাইয়া যাইতে পারি। অদ্যকার প্রস্তাবটী দুই ভাগে বিভক্ত করিয়া আলোচনা করা যাইবে । বর্ণ এবং আশ্ৰমধৰ্ম্ম কাহাকে কহে ? বর্ণ বলিলে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈপ্ত এবং শূদ্র বুঝায়। এই বর্ণান্তর্গত নরনারীদিগের বাল্য, যৌবন, প্রৌঢ় এবং বৃদ্ধাদি অবস্থাচতুষ্টয়সঙ্গত কাৰ্য্যবিশেষকে আশ্ৰমধৰ্ম্ম বলা যায়। অর্থাৎ জীবনকে চারি ভাগে বিভক্ত করিয়া প্রথমে বিদ্যাদি উপার্জন যাহাকে ব্রহ্মচৰ্য্য, তৎপরে সংসার বা গৃহাশ্রম, তৃতীয়াবস্থায় সংসার পরিত্যাগ করিলে বানপ্রস্থ এবং সন্ন্যাস বা চতুর্থাশ্রম বলিয় উল্লিখিত হয় । যবন এবং স্লেচ্ছাধিকারের পূৰ্ব্বে হিন্দুসমাজ উপরোক্ত নিয়মাধীনে থাকিয়া বর্ণাশ্রম-ধৰ্ম্মমতে পরিচালিত হইত। ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় এবং বৈশ্যাদি উৎকৃষ্ট বর্ণত্রয়ের নিমিত্ত আশ্ৰমধৰ্ম্ম নিরূপিত ছিল, শূদ্রের নিকৃষ্ট বৃত্তি অর্থাৎ ত্রিবর্ণের দাস্তাদি কার্য্যের দ্বারা জীবনযাত্রা নিৰ্ব্বাহ করিতেন। যদিও উৎকৃষ্ট বর্ণত্রয়ের ন্যায় শূদ্রের আশ্ৰমধৰ্ম্মবিশেষ প্রতিপালন করিবার নিয়ম ছিল না, কিন্তু তাহারা ইচ্ছা করিলে তাহাও পারিতেন । কালসহকারে হিন্দুস্থানে হিন্দুরাজাসনে যবনরাজ আসিয়া উপবেশন করিলেন। ক্রমে হিন্দুর আচারব্যবহার এবং আশ্ৰমধৰ্ম্মাদি সঙ্কুচিত হইয়া বৰ্ত্তমান কালে তাহা একেবারে বিলুপ্তপ্রায় হইয়