পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/২৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ २88 ] বিবাহের পাত্র খরিদ কর প্রথা নিবারণ করি বার জন্য সহরের প্রায় সমুদয় সম্রান্ত ব্যক্তির দ্বারে দ্বারে পরিভ্রমণ করিতাম। একদা আমার এক বন্ধুর দ্বার কোন ভদ্রলোকের নিকটে পরিচিত হইয়া আমার অভিপ্রায় প্রকাশ করি। তিনি মনুসংহিতা লইয়। নানাবিধ কুতর্কের পর বলিয়াছিলেন যে, দেখুন সকলেই দেশহিতৈষী, দেশের কল্যাণের জন্য কাহার নিদ্র হইতেছে না । আজকাল অনেকে সম্লান্ত লোকের সহিত আলাপ করিতে চাহেন । তাহদের সহিত আলাপ করিবার অত্য সুবিধা হয় না, দেশহিতৈষী তার দোহাই দেওয়৷ অতি সহজ উপায় । এইরূপে নিজ নিজ পদোন্নতি করিতে পারেন। ভদ্রলোকের বাটিতে অস। যা ওয়া করিলে নিমন্ত্রণাদি ও করিতে হয় । সুতরাং তঁtহাদের বাটীর সম্মুখে সৰ্ব্বদ জুড়ি ফেটিং যাইয়া দাড়ায়, পাড়ার লোকেরা তাহাকে বড়লোক বলিয়। মান্য করিতে বাধ্য হয় । আমি আশ্চর্য্য হইয় তাহার ভাব দেখিয়া লইলাম এবং মনে মনে ভাবিলাম, আমাদের এমন বিকৃত বুদ্ধি ন হইলে এই অবনতি হইবে কেন ? সে যাহ হউক, স্বার্থপরতার এতদূর বিক্রম জমিয়াছে। এই জন্য আমাদের হৃদয়ে আর সহানুভূতি দেখিতে পাওয়া যায় না, দু:খীর দুঃখে আর হৃদয় কঁদে না, দরিদ্রের আর্তনাদে আমাদের হৃদয়তন্ত্রী স্পন্দিত হয় না, ভ্রাতার মুখের গ্রাস কাড়িয়া লইতে প্রাণ কাদিয়া উঠে না, প্রতিবেণীর দুর্দশাপন্ন অবস্থা দেখিয় তাহার দুঃখমোচন করিতে প্রাণ চাহে না, ক্যাভারগ্রস্ত অনন্তোপায় ব্যক্তির শোণিত পান করিতে মৰ্ম্মদেশ প্ৰপীড়িত হয় না। ষে দিকে দেখা যায়, সেই দিকেই স্বার্থপরতা দেদীপ্যমান রহিয়াছে। সামান্য ব্যবসাদার হইতে উচ্চ ব্যবসাদারেরাও স্বার্থ-পরতা-ত্রিশূল হস্তে লইয়া স্বদেশী বিদেশীর শোণিত নির্গত করিবার প্রত্যাশায় অপেক্ষা করিতেছে । ইহাই আমাদের বর্তমান সংসারাশ্রম ।