পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/২৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ২৭৬ ] তাহা তাহার পক্ষে সত্যবং বোধ হয় বলিয়া অন্তের নিকটে তাহ। সম্পূর্ণ অলীক কথা। রোগী বলিল যে,—“দেখ ! দেখ ! কে আমায় ধরিতে আসিয়াছে,” নিকটের ব্যক্তির কিছুই দেখিতে পাইল না। তাহারা ভীত হইল না কিন্তু রোগী ভয়ে মূচ্ছিত হইয়া পড়িল। এ ক্ষেত্রে রোগীর দর্শনকে বাস্তবিক মিথ্যা বলিতে হইবে । যদ্যপি সেই রোগীর স্নায়বীয় দৌৰ্ব্বল্য বিদূরিত হয়, তাহ হইলে, সে আর যমদূতও দেখিবে না, অথবা ভূত পেত্নীর বিকটাকৃতি তাহার নয়নপথে পতিত হইবে না। দুৰ্ব্বল মস্তিষ্কবিশিষ্ট মনুষ্যেরা এইরূপে বিশ্বাসের বশবর্তী হইয়া কুসংস্কারাক্রান্ত হয় এবং তজ্জনিত নানাবিধ ক্লেশ পাইয়া থাকে। সংস্কারবিশেষের প্রাবল্য হইলে স্নায়বীয় কার্য্য সম্বন্ধে পরিবর্তন ঘটিয়া থাকে, তাহার ভূরি ভুরি দৃষ্টান্ত আছে । একদা কোন ব্যক্তির স্ত্রী বিয়োগ হইলে তাহার শিশু সস্তানকে সাম্বন করিবার নিমিত্ত তিনি সময়ে সময়ে বক্ষের উপরে স্থাপন করিয়া রাখিতেন । শিশু বক্ষে শয়ন করিয়া অভ্যাসবশতঃ স্তন পান করিবার জন্য চঞ্চল হইত। পিতা কিঞ্চিৎ স্থূলকায় ছিলেন, কি করেন, আপন স্তন শিশুর মুখে প্রদান পূৰ্ব্বক স্ত্রীকে স্মরণ করিয়া নয়ন জলে ভাসিয়া যাইতেন । এইরূপে কিছু কাল গত হইলে ক্রমে সেই ব্যক্তির স্তনে দুগ্ধের সঞ্চার হইয়াছিল। এই ঘটনার হেতু বাহির করা কঠিন নহে। এ স্থলে সংস্কারই মূলীভূত কারণ বলিয়া প্রতীয়মান হইতেছে। সংস্কার দ্বারা যখন এরূপ পরিবর্তন সংঘটিত হয়, তখন ভগবান সম্বন্ধে কোন প্রকার সংস্কারগ্রস্থ হইলে তদ্বার: যে কাৰ্য্য হয়, তাহা অস্বাভাবিক বলা যাইবে না কেন ? দুষ্ট লোকদিগের দুরভিসন্ধি চরিতার্থের নিমিত্ত সাধারণকে অন্ধ বিশ্বাসী করিতে চেষ্টা পাওয়ী মিথ্যা কথা নহে ।