পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৩০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জৈব ভাব বিদূরিত হওয়ার নাম মৃত্যু। যে মুহূৰ্ত্তে জৈবভাব অদৃপ্ত হয়, সেই মুহূর্তে র্তাহার মৃত্যু হইয়া থাকে ; অর্থাৎ সাধনপথে তদবস্তাকে সমাধি শব্দে উল্লেখ করা যায়। প্রভু সৰ্ব্বদা বলিতেন যে, "পাশবদ্ধ জীব, পাশমুক্ত শিব।” সাধারণ নরনারীগণ লজ্জা, ঘৃণা, ভয় প্রভৃতি নানাবিধ পাশে আবদ্ধ হইয়া রহিয়াছেন । এই পাশ উচ্ছেদ না হইলে ভগবান লাভ করা যায় না। তন্নিমিত্ত তিনি বলিতেন যে, “লজ্জ, ঘূণা, ভয়, তিন থাকিতে নয়।” লজ্জা, ঘৃণা এবং ভয় বিবৰ্জ্জি ত নর নারীকে শিব কহে । কারণ, পাশ দ্বার। আবদ্ধ নরনারীর সংসারচক ব্যতীত স্থানান্তরে একপদ অগ্রসর হইবার শক্তি থাকে না । তজ্জন্ত তাহারা সংসারকেই স্বৰ্ব্বস্ব জ্ঞান করিতে বাধ্য হয়। পাশোচ্ছেদ হইলে তাহার নূতন নূতন জ্ঞান সঞ্চার হয়। প্রভু বলিতেন যে, সাধুদিগের মধ্যে এই রীতি আছে যে, নূতন শিষ্য হইলে তাহাকে চারিধাম দর্শন করিবার নিমিত্ত গমন করিতে হয় । চারিধাম বলিলে উত্তরে হরিদ্বর, দক্ষিণে সেতুবন্ধ রামেশ্বর, পূৰ্ব্বে জগন্নাথ এবং পশ্চিমে দ্বারক। এই চারিধাম পর্য্যটন করিলে বহুদৰ্শিতা জন্মে; মন বিস্তীর্ণ হয় এবং বিধাতার অপূৰ্ব্ব স্বষ্টিকৌশল দর্শন করিতে করিতে মহান ভাবের উদ্রেক হইয়া যায়। প্রভু বলিয়াছেন যে, গৃহে বসিয়া স্ত্রীপুত্ৰ কুটুম্বাদি এবং ধনৈশ্বৰ্য্যের জ্ঞান ব্যতীত ভগবানের কোন কার্য্য দেখা যায় না । এষ্ট কলিকাতা নগরে প্রকৃতিপ্রস্তুত দৃশ্য কি কোথাও বিশিষ্টরূপে দেখিবার সম্ভাবনা আছে ? সকলই কৃত্রিম, মনুষ্যশক্তির পরিচয় । গঙ্গার সেতু আশ্চর্য্য ঘটনা বটে, কিন্তু তাহ দর্শন করিলে ইংরাজদিগের দিকে মনাকর্ষণ হইয়া যায়। গ্যাস ইলেকটি কালোকে ভগবানের প্রতি মন যায় না। রাজপ্রাসাদ, রাজপথ, গাড়ী পান্ধি, বিবাহের আড়ম্বর তোপের শব্দ প্রভৃতি মনুষ্যের অভিনয় দেখিয়া ভগবানের প্রতি কি মন