পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৩৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঐত্রীরামকৃষ্ণ-প্রদর্শিত বিশ্বজনীন ধৰ্ম্ম । ব্রাহ্মণাদি সকলের চরণে প্রণাম । ঘে সময়ে যে প্রকার বাতাস বহিয়া থাকে, সে সময়ে সকলকে তাহাই সম্ভোগ করিতে হয়। সামাজিক, রাজনৈতিক এবং আধ্যাত্মিক রাজ্যে সময়ে সময়ে নানাপ্রকার বাতাস উঠিয়া থাকে, সে সময়ে সেই বাতাস সকলকে ঘুরাইয়া লইয়া বেড়ায় । ধৰ্ম্ম-জগতে আজ কয়েক বৎসর ধরিয়া এক অভিনব ঝড় উঠিয়া প্রায় পৃথিবীর সৰ্ব্বস্থানে পরিব্যাপ্ত হইয়া পড়িবার অবস্থায় পতিত হইয়াছে । এইরূপ বাতাস চিরকালই উঠে বটে, কিন্তু বৰ্ত্তমান সময়ে তাহ ঘূর্ণ ঝড় অর্থাৎ সাইক্লোনরূপে দর্শন দিয়াছে। বাতাস উঠিলে গ্রীষ্মপ্রপীড়িত ব্যক্তিরা শীতল হয়, তাহাদের প্রাণ জুড়ায়, কিন্তু ঘূর্ণঝড়ে শীতল হওয়া দূরে থাক, প্রাণ জুড়ান দূরে থাক,জীবন রক্ষণ করা বিষম সঙ্কট হইয়া থাকে। বিশ্বজনীন অর্থাৎ একটী ধৰ্ম্মসুত্রে সকলকে গ্রথিত করিবার মানসে,এক ধৰ্ম্ম সৰ্ব্বত্রে পরিব্যাপ্ত করিবার উদেখে, সৰ্ব্বধৰ্ম্মের একাকার করিবার প্রয়াসে, চারিদিক দিয়া বাতাস উঠিয়াছে, সুতরাং চারিদিকের বায়ুর একস্থানে পরস্পর আঘাতপ্রত্যাঘাতে এক ভীষণ ঘুর্ণ ঝড়ের অভিনয় আরম্ভ হইয়াছে। সাইক্লোন হইবার লক্ষণ দেখিলে নাবিকের সতর্ক হয় । নৌকা রক্ষা করিবে বলিয়া সুদৃঢ় বন্ধন দিবার নিমিত্ত স্বপ্রোধিত কীলক অনুসন্ধান করিয়া তাহার আশ্রয় অবলম্বন করে । আমরাও সেইরূপ, যাহাতে সাইক্লোনের প্রবল বিক্রমে আমাদের জর্জরীভূত জীর্ণ ধৰ্ম্মভাবতরী বিচূর্ণিত হইয়া না যায়, তাহার সদুপায় নিরূপণকরণার্থ অঙ্ক সাধারণ সমক্ষে উপস্থিত হইয়াছি।