পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৩৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ৩৫৭ ] স্থিতি করিলে মনে ইহাদের সংস্কার পতিত হয় এবং তদনুরূপ কাৰ্য্য করিতে সকলেই বাধ্য হইয়া থাকে । সাধারণ নরনারী এই ভাবাপন্ন হইয়া যতই বয়োবৃদ্ধি লাভ করে, পরবর্তী শিক্ষা এবং অবস্থার প্রসাদে তাহাদের পার্থক্যজ্ঞান ক্রমে বদ্ধমূল হইয়া যায়। তখন আমি অযুক, আমি ধনী, আমি মানী, আমি পণ্ডিত, আমি সাধু, আমি যাহা বুঝি, এমন আর কেহ বুঝিতে পারে না, আমার অমুক, অমুক আমার কেহ নয়, ইত্যাকার ভাবে দিন যাপন করিয় থাকে। সাধারণ নরনারীর এই অবস্থায় তাহার। ধৰ্ম্ম শিক্ষা করেন, সুতরাং, তাহাও মানসিক ধারণা এবং সংস্কারবশতঃ পার্থক্যভাবে রঞ্জিত হইয়া যায় । সুতরাং, সে অবস্থায় তাহদের পরম্পর অনৈক্যতা বাতীত সমতা উপলব্ধি করিবার শক্তি একবারেই অপনীত হয় । সেইজন্য সমতা স্থাপনের নিমিত্ত অপরকে আপন ভাবে ও ধৰ্ম্মে পরিবর্তন করিবার সর্বদা আয়োজন হইয়া থাকে । স্কুলে থাকিয় স্থলের পরাক্রম অতিক্রম করিয়া কখন কাৰ্য্য কর যায় না । এই নিমিত্ত রামকৃষ্ণদেব সৰ্ব্বাগ্রে অদ্বৈত জ্ঞান লাভ করিতে পলিয়াছেন। অদ্বৈতজ্ঞান লাভ পূৰ্ব্বক ধৰ্ম্মাচরণ করিলে কালে সৰ্ব্বত্রে আকাঙ্ক্ষিত সমতা স্থাপন হইয়া যাইবে । অদ্বৈতজ্ঞান বলিলে সাধারণ হিন্দুমত যাহা, তাহ রামকৃষ্ণদেবের অভিপ্রায় নহে । সাধারণ হিন্দুমতে অদ্বৈতজ্ঞানকে ব্রহ্মস্বরূপ কহ৷ যায় এবং সেই জ্ঞান লাভ করিতে হইলে স্থল জগৎকে মায়। বলিয়া পরিত্যাগ করিতে হয়। এমন কি, আপনার শরীর, মন এবং মানসিক বৃত্তি ও তৎপ্রস্থত কাৰ্য্যকলাপ সমুদয় মিথ্যা বলিয় সম্পূর্ণ ধারণা এবং বিশ্বাস না করিতে পারিলে অদ্বৈতজ্ঞানী হওয়া যায় না। এইরূপ অদ্বৈতজ্ঞানে ভাব, প্রেম, শ্রদ্ধা, ভক্তি কিছুই স্থান পায় না, ব্ৰহ্ম এবং