পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৩৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ७१8 ] স্থল জগতে প্রত্যেক বস্তু স্বতন্ত্র এবং প্রত্যেক বস্তুর কার্য্য স্বতন্ত্র বিধায়, স্বভাবতঃ সকলের মনে পার্থক্য বোধ হয়। আমি অমুক, তুমি-অমুক, সে অমুক, ইত্যাকার ভাবের কার্য্য হওয়া অনিবাৰ্য্য। এইরূপ কাৰ্য্যে আত্মাভিমান আইসে। রামকৃষ্ণদেব তজ্জন্য অভিমান চূর্ণ করিবার নিমিত্ত যৎপরোনাস্তি সাধন করিয়াছিলেন । তিনি সৰ্ব্বদা বিশ্বজননী মহাকালীর নিকট কৃতাঞ্জলিপুটে সরোদনে বলিতেন, "মাগো ! আমার অভিমান চূর্ণ করিয়া দে মা ! আমি দীনের দীন, হীনের হীন, কীটাকুকীটাপেক্ষ ক্ষুদ্রতম, এইঞ্জান জন্মাইয়া দে মা ! আমি ব্রাহ্মণতনয়, আমি ব্রাহ্মণ, আমি ঈশ্বরানুরাগী, এই অভিমান আসিয়া যেন আমার হৃদয়ভূমি অধিকার করিতে না পারে।” অদ্বৈত জ্ঞান তাহার অঞ্চলে বাধা ছিল, অদ্বৈত জ্ঞানে কোথায় কিরূপে কাৰ্য্য করিতে হয়, তাহার অভিনয় আরম্ভ হইল। তিনি সৰ্ব্বজীবকে জীব হিসাবে এক বলিয়া বোধ করিলেন । একদিন মেতরকে দেখিয়া পূৰ্ব্বসংস্কার হেতু তাহাকে নীচ জাতি বলিয়া তাহার জ্ঞান হয়। তিনি তৎক্ষণাৎ মা ! মা ! বলিয়া ক্ৰন্দন করিতে লাগিলেন এবং আপনাকে শতধিক্কার দিয়া বলিতে লাগিলেন যে, “মা ! অদ্যাপি আমার অভিমান যায় নাই, অদ্যাপি আমার ভাল মন্দ জ্ঞান যায় নাই। সৰ্ব্বজীবে আমার সমজ্ঞান হওয়া দূরে থাক, এক মনুষ্যজাতির মধ্যে ব্রাহ্মণ মেতরের পার্থক্য ভাব অদ্যাপি রহিয়াছে। তবে আমার উপায় হইবে কি ?” তিনি বুঝিলেন যে, কাৰ্য্য ব্যতীত ফল ফলে না। কেবল আনুমানিক বিচারের দ্বারা কোন বিষয়ের প্রত্যক্ষ জ্ঞান প্রাপ্ত হইবার সম্ভাবনা নাই। তিনি বুঝিলেন যে, বেল কাটাকে না ভস্মীভূত করিলে তাহার বিদ্ধকরণ ধৰ্ম্ম বিলুপ্ত হয় না। নিকটে বেলকাটা রাখিয়া নয়ন মুদিয়া মনে মনে দগ্ধ করিলে