পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৪৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ 8x8 J ক্লেশ ছিল না। রাজা সকলের সহিত পুত্রবৎ ব্যবহার করিতেন, সুতরাং কেহ কখন রাজসন্নিধানে গমনাগমন করিতে ভীত হইত না। রাজধানীর প্রান্তভাগে একটী বিস্তীর্ণ বঁাশবন ছিল। উপদেবতার ভয়ে কেহ কখন সেই স্থানের সন্নিহিত হইত না। প্রজাদের আভ্যন্তরিক ব্যবস্থা এবং রাজশাসনের প্রতি তাহাদের অস্তরের ভাব অবগত হইবার জন্ত রাঙ্গা একাকী রাত্রকালে ছদ্মবেশে পথে পথে ভ্রমণ করিয়া বেড়াইতেন । একদা এইরূপ পরিভ্রমণ কালে তিনি সহসা ঐ বঁাশবনের নিকটে উপস্থিত হইলেন। তিনি পূর্বেই শুনিয়াছিলেন যে, কেহ ভয়ে বাশবনের নিকটে যাইতে চাহে না । কিন্তু সে কথায় নিভাক রাজার হৃদয়ে ভয়ের উদ্রেক না হইয়া, বরং তাহার মনে হইল যে, হয়ত এই নিভৃত স্থানে চোর দস্থ্য প্রভূতি ব্যক্তিরা আশ্রয় লইয়া তাহাদের আপন আপন কু-অভিপ্রায় চরিতার্থ করণার্থ অবস্থিতি করে। এই ভাবিয়া তিনি সাহসে ভর করিয়া বাশবনের ভিতরে প্রবেশ করিলেন । তথায় যাইবামাত্র কে বলিয়া উঠিল, “মহারাজ সাত ঘড় টাকা লইবেন ?” রাজা আশ্চৰ্য্যাম্বিত হইয়া চারিদিক সাধ্যমত নিরীক্ষণ করিয়া কাহাকেও দেখিতে না পাইয়া, কহিলেন, “কে তুমি নিকটে আইস, তাহার পর আমি তোমার কথার উত্তর দিব।” পুনরায় পূৰ্ব্ববৎ কথা শুনিলেন। রাজা তখন মনে মনে চিন্তা করিলেন যে, লোকে উপদেবতার কথা কহিয়া থাকে, বোধ হয় তাহার কারণ এই ৷ পুনরায় তিনি শুনিলেন, কে বলিতেছে —“মহারাজ শীঘ্ৰ করিয়া বলুন, সাত ঘড়া টাকা লইবেন কি না ?” রাজা ভাবিতে লাগিলেন যে, জামায় টাকা দিতে চাহে কেন ? এবং কে বা টাকা দিতে চাহিতেছে ? জিজ্ঞাসা করিয়াও উত্তর পাইলাম মা । তিনি অতঃপর কহিলেন, “যে সাত ঘড়া টাকা দিতে চাহিতেছ, তাহা জমা না খরচের ?”