পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ లిరి ] ভাবটী অনেক ক্লেশে রক্ষা হয়, এই জন্য মাতৃভাবে সাধনায় সাধন ভ্ৰষ্ট ন হইবার কথা। কালীর যে প্রকার রূপমাধুরী, তাহ দর্শন করিলে প্রতি পলকে কণ্ঠ শুষ্ক হইয়া আইসে। সৰ্ব্বদা, ভয়ঙ্কর মূৰ্ত্তি, লোলরসন বিবৃণিত নয়নত্রয়, সুতীক্ষ শাণিত খড়গ দেখিলেই মনে হয় যেন মা রণরঙ্গিণী শিরচ্ছেদন করিবার জন্য প্রস্তুত হইয়া রহিয়াছেন। দোদুল্যমান মুণ্ড ও মুণ্ডমালার দিকে দৃষ্টি পড়িলে তমোগুণী ভয়ে চীৎকার করিয়া বলে, “মা ভয়ঙ্করা ! অসিধরা! আমায় রক্ষা কর । মা মুণ্ডমালিকে ! আমি তোমার সস্তান ।” চরণ তলে শিবের দশা দেখিয়| তমোগুণীর আর জ্ঞান থাকে না, তখন মনে হয় যে, মা সোজা মেয়ে নহেন। মুখ বিকৃতির দ্বারা জ্ঞান হরিয়া লন । আসি দ্বারা শিরচ্ছেদন করেন, আবার বক্ষে পদ সঞ্চাপনের দ্বারা পঞ্চম্ব ঘটান। তমোগুণীর মরণের ভয় অধিক, সুতরাং কালীর এইরূপ ভীষণ ভাবোদ্দীপক কালকামিনীর দ্বারা তমোগুণীর পুৰ্ব্ববৰ্ত্তী কামিনীর ভাব বিদূরিত হইয়া যায়, যখন কালকামিনী ভাব মনে প্রবিষ্ট হইয়। ধারণা হইয়া যায়, তখন তমোগুণ কমিয়া আইসে, সুতরাং সত্ব গুণ বৰ্দ্ধিত হইতে থাকে। পঞ্চ-মকারের সাধনা দ্বার যখন এইরূপ অবস্থায় সাধক উপনীত হন, তখন র্তাহাকে কৌল কহে । কৌলের ভাব সত্ত্বগুণে পরিপূর্ণ। তন্ত্রের এই সাধনাকে বীরাচার কহে। দক্ষিণাচার সাধনে সত্ত্ব রজঃ মিশ্রিত, সুতরাং তাহাতে পঞ্চ-মকারের ঐ রূপ ব্যবহার নাই। অতএব সাধনা সাধকদিগের অবস্থানুসারে, উদ্দেশ্রামুসারে এবং সময়াকুসারে সংগঠিত হইয়া থাকে। সত্ত্ব রজঃ ভাবের সাধনী—শক্তিপূজা, যাগ, যজ্ঞ ইত্যাদি। এই সকল সাধনায় অৰ্দ্ধেক ঐশ্বৰ্য্য এবং অৰ্দ্ধেক মাধুৰ্য্য ভাব । সত্ত্ব রজঃ ভাবের সাধন। সগুণ সাধনার অন্তর্গত। রজোগুণের ঐশ্বৰ্য্য তাববশতঃ এইপ্রকার সাধনার কাৰ্য্যে মাধুর্য্য এবং ঐশ্বৰ্য্য ভাব মিশ্রিত থাকে। Wo)