পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৪৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ৪৬৬ ] যে যে পদার্থ দ্বারা আমরা বৰ্দ্ধিত হই, তাহারা জড় বলিয়া কথিত হয় । দুগ্ধকে চৈতন্য পদার্থ বলিতে কাহার শক্তি আছে ? অন্নব্যঞ্জনই বা চৈতন্য পদার্থ বলিয়া উল্লিখিত হইবে কিরূপে ? কিন্তু এই পদার্থগুলিই আমাদের শরীর ধারণের একমাত্র উপায়। আহার কমিয়া যাইলে আমরা দুৰ্ব্বল হই । আহার বাড়িলে বলিষ্ঠ হইয়া থাকি। চৈতন্য বস্তু সকল সময়েই আছেন, তবে এরূপ পরিবর্তনের হেতু কি ? এক পদার্থ পদার্থবিশেষের প্রয়োজনানুসারে রূপান্তরবিশেষে পরিণত হইয়া জগতের কার্য্যাদি সমাধা করিয়৷ থাকে। ইহাই প্রকৃতির নিয়ম । জলপান করিলে পিপাসার শাস্তি হয়। কিন্তু জলের উপাদানকারণ হাইড্রোজেন এবং অকৃসিজেন বাপগুলি সেবন করিলে পিপাসা নিবারণ হয় না কেন ? প্রকৃতপক্ষে উভয়স্থলে একই পদার্থ ব্যবহার করা যাইতেছে, কিন্তু অবস্থাবিশেষে একেরই অবস্থান্তর না করিলে কাৰ্য্য সম্পন্ন হওয়া সম্বন্ধে প্রত্যবায় ঘটিয়া থাকে। যেমন জলের পরিবর্তে হাইড্রোজেন এবং অকৃসিজেন ব্যবহার করা যায় না, তেমনি অন্যাগ পদার্থ সম্বন্ধেও ঐরূপ নিয়ম দেখিতে পাওয়া যায় । অঙ্গার, নাইট্রোজেণ হাইড্রোজেন প্রভৃতি পদার্থ সকল দ্বারা আমাদের জীবন ধারণোপযোগী বলকারক ভোজ্যসামগ্ৰী সকল স্বষ্টি হইয়া থাকে। ঘূত, দুগ্ধ, আটা, ডাল, মৎস্ত, মাংস প্রভৃতি পদার্থ সকল তাহার দৃষ্টান্তস্থল। এই সকল পদার্থের পরিবর্তে ইহাদের উপাদানগুলি ভক্ষণ করিলে সেরূপ ফললাভ করা যায় না, ইহা স্বাভাবিক ঘটনা। উদ্ভিদগণের পুষ্টর জন্য অঙ্গারের প্রয়োজন, কিন্তু বৃক্ষমূলে অঙ্গাররাশি অনন্তকাল ঢালিয়। রাখিলে কোন ফল দর্শিবে না। অঙ্গারকে রূপান্তর করিয়া দিলে তবে উদ্ভিদগণের আহারোপযোগী হইতে পারে।