পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৪৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ 8૭૧ ] পৃথিবীর যে দিকে দৃষ্টিপাত করা যায়, সেইদিকেই পদার্থদিগের এইরূপ রূপান্তর এবং কাৰ্য্যাস্তর দেখিতে পাওয়া যায়। পদার্থের মৌলিকভাবের কার্য্য একপ্রকার এবং তাহাদের অবস্থান্তর এবং যোগভাবের কার্য্য অন্য প্রকার। হীরক, কয়লা এবং গ্রাফাইট, তিনই এক জাতীয় মৌলিক পদার্থ, কিন্তু রূপান্তরভেদে বর্ণের এবং কার্ষ্যের প্রচুর প্রার্থক্য দৃষ্ট হয়। হীরকখণ্ড রাজমুকুটে শোভা পায়, অঙ্গার জুতার কালীতে ব্যবহার হইয়া থাকে। নাইট্রোজেন, অঙ্গার এবং হাইড়োজনের যোগে বলকারক ভোজ্য সামগ্ৰী উৎপাদন করে এবং উহারাই অবস্থান্তরে প্রাণান্তকারী অতি ভীষণ কালকূটসদৃশ হাইড্রোসিয়ানিক এসিডে পরিণত হয়। স্থলে পদার্থগত ঈদৃশ প্রভেদ হইলেও মূলে এক অদ্বিতীয় বস্তু। আত্মা বিষয়ে তদ্রুপ বুঝিতে হইবে। আত্মা এক অদ্বিতীয়। বিশ্বমণ্ডলে তিনিই অনন্ত প্রকারে প্রকটিত এবং অপ্রকটিত হইয়া রহিয়াছেন। অনন্ত আকার, অনন্ত প্রকার, অনন্ত ভাববিশিষ্ট এই লীলা-রঙ্গমঞ্চের রঙ্গ তরঙ্গের গতি নিবারণ করিতে সাধ্য কাহার ? অপার লীলা-জলধির কণিকা সমগ্র জলরাশির তত্ত্ব প্রদান করিতে কি কখন সমর্থ হইতে পারে? আমরা সেই অনন্তলীলাময়ের প্রকট লীলার পরমাণুবিশেষের সমষ্টিমাত্র। প্রকট লীলার বৃত্তান্তেই আমাদের অধিকার নাই, প্রকট লীলার তাৎপর্ম্য বোধ করিতেই দেখিতে দেখিতে যুগের পর যুগ চলিয়া গেল, অতি ধীশক্তি সম্পন্ন সংখ্যাতীত বিজ্ঞানবিৎ মহাত্মারা একে একে চলিয়। গেলেন। -রেদ, পুরাণ, তন্ত্র, বাইবেল, কোরাণ প্রভৃতি শাস্ত্রাদি কত কথাই বলিতে প্রয়াস পাইল, কিন্তু কোথায়, কোথায় সেই লীলারসময়ের স্বরূপকাহিনী ব্যক্ত করিতে পারিয়াছে ? আভাস—আভাস আভাস ব্যতীত আর কোন কথাই নাই ।