পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৪৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ৪৬৯ ] বসিয়া অনন্ত সৎ চিন্তায় অঙ্গ ঢালিয়৷ দিয়া সমাধিমন্দিরে চলিয়া যাইতেন। তঁপহাদের এই অবস্থা লাভ করিতে দীর্ঘকাল কাটিয়া যাইত । তাহারা সৰ্ব্বপ্রথমে বর্ণাশ্ৰমধৰ্ম্মানুসারে ব্রহ্মচৰ্য্যাদির ভাবে গুরুর আশ্রমে শিক্ষা করিতেন। এই শিক্ষা সমাপ্ত করিতে নুনিকল্পে ত্রিশ বৎসর লাগিত। বেদাধ্যয়ন করাই তাহদের জীবনের একমাত্র উদ্দেপ্ত ছিল । সৰ্ব্বপ্রথমে সংস্কৃত ভাষাজ্ঞান লাভপূর্বক বেদমৰ্ম্মে প্রবেশাধিকার জন্মিবার নিমিত্ত র্তাহাদিগকে বেদাঙ্গ এবং দর্শন শাস্ত্রাদি অধ্যয়ন করিতে হইত। বেদাঙ্গ ছয়ভাগে বিভক্ত। যথা শিক্ষা, ছন্দ, ব্যাকরণ, নিরুক্ত, জ্যোতিষ এবং কল্প। কিরূপে লঘু গুরু করিয়া বৈদিক শ্লোক উচ্চারণ করিলে সুশ্রাব্য হয়, তাহা অভ্যাস করাই শিক্ষার অভিপ্রায়। পদ্যের ভেদবোধক সংজ্ঞাকে ছন্দ কহে । বৈদিক ভাষার তাৎপর্য্য বোধগম্যের নিমিত্ত বৈদিক ব্যাকরণ অধ্যয়ন কর কৰ্ত্তব্য । বেদের ব্যাখ্যান অর্থাৎ দুরূহ শব্দের ভাবার্থ নির্ণয়ক গ্রন্থকে নিরুক্ত বুঝায়। বেদবিহিত কাৰ্য্যাদি সাধনার নিমিত্ত দিন নক্ষত্র সময় নিরূপণ করিবার যোগ্যতা লাভের উদ্দেশ্যে জ্যোতিষ শিক্ষার আবশ্যকতা হইত। বেদবিহিত কাৰ্য্যাদি সম্পন্নের নিয়মমালাকে কল্প কহ যায়। এই বেদাঙ্গ বা ষড়ঙ্গে অধিকারী না হইলে বৈদিককার্য্যে পারদর্শিতা জন্মিতে পারে না। কেবল বেদান্ত শাস্ত্রে ব্যুৎপত্তি জন্মিলেই যে বেদের মৰ্ম্মোদ্ধার হইয়া যায়, তাহা নহে। দর্শনাদি শাস্ত্র সকল বেদশিক্ষার অদ্বিতীয় পথস্বরূপ । দর্শনশাস্ত্রও ছয় খানি। যথা, ন্যায়, বৈশেষিক, সাংখ্য, পাতঞ্জল বা যোগ, মীমাংসা এবং উত্তরমীমাংসা। শেষোক্ত দর্শনদ্বয় বেদান্ত বলিয়া উল্লিখিত হইলেও, পূৰ্ব্বমীমাংসা, এবং উত্তরমীমাংসা বেদান্ত শব্দে অভিহিত ।