পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ৩৬ ] পরিহাসচ্ছলে নাম উচ্চারণ করিলেও জীবে পরিত্রাণ পাইবে এবং রামকৃষ্ণদেব বলিয়া গিয়াছেন যে, “জাস্তে বা অজান্তে, ভ্রান্তে বা অভ্রান্তে, যে কেহ নামোচ্চারণ করিবে, সেই পরিত্রাণ পাইবে।” পরিহাসচ্ছলেই হউক, ভগবানের নাম জানিয়াই হউক কিম্বা না জানিয়াই হউক, অথবা অভ্রান্তে বা ভ্রাস্তিযুক্ত হইয়াই হউক, ঈশ্বরেরর নাম যাহার মুখে উচ্চারিত হয়, সেই ব্যক্তিই পরিমুক্তি লাভ করিতে পারে; তাহা হইলে সাধনা সম্বন্ধে একপ্রকার কারণ নিদিষ্ট হইতেছে না। যদ্যপি বাস্তবিক কলির জীবের পক্ষে সত্ত্বগুণ ব্যবস্থা না হইয়া, কেবল রজোতমোর সাধনার দ্বারা—পরিহাসচ্ছলে—ভগবানের বিমল প্রেমমূৰ্ত্তি দর্শন করিতে পার স্থির হয়, তাহ হইলে সাধনতত্ত্বই একেবারে ভুল হইয়া যায় এবং যুগচতুষ্টয়ের মধ্যে কলিযুগই সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ যুগ বলিয়া পরিগণিত করিতে হয় । সত্যযুগে, সদা সত্যনিষ্ঠ সত্ত্বগুণযুক্ত সাধক প্রবরেরা সহস্ৰ সহস্র বর্ষ সাধন করিয়া ও বিফল মনোরথ হইতেন ; ত্রেতায়, সাধ্যমত সত্ত্ব গুণাবলম্বনপূর্বক মহা যজ্ঞাদির অনুষ্ঠান করিয়া বাসন চরিতার্থ করিতেন ; দ্বাপরে, বিশুদ্ধ সাত্ত্বিকভাবে সেবা সাধনায় আত্মনিবেদন পূৰ্ব্বক অবস্থিতি করিয়া কতকাল কাটাইয়া যাইতেন, তথাপি তাহাদের অতিলাস পূর্ণ হইত না ; কিন্তু কলিকালে সে প্রকার কোন সাধনাই নাই, কেবল মুখে নাম বলিলেই সৰ্ব্ব বাসন সিদ্ধ হইবে, ইহা কি প্রকৃত কথা ? না শাস্ত্রের অন্য কোন অভিপ্রায় আছে ? শাস্ত্রেই দেখিতে পাওয়া যায় যে, সত্যযুগে পূর্ণ পুণ্য ভাব ছিল, ত্রেতায় এক চতুর্থাংশ, দ্বাপরে অৰ্দ্ধেক এবং কলিতে তিন চতুর্থাংশ কমিয়া গিয়াছে ; অর্থাৎ সত্যে সত্ত্বগুণ পূর্ণ ছিল ; ত্রেত হইতে সত্ত্বগুণ ক্রমে সিকি, অৰ্দ্ধেক এবং বার আনা রকম হ্রাস হইয়া কলিকালে সিকি ভুলগে পর্য্যবসিত হইয়াছে। এই সিকি ভাগ সত্ত্বগুণাবলম্বন করিতে