পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/১২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৯২
রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ।

তাহার বিষয়ে কাৰ্ত্তিকেয় চন্দ্র রায় আত্ম-জীবনচরিতে এইরূপ লিথিয়াছেন : ‘কলিকাতা নিবাসী। মাধবচন্দ্র মল্লিক নামে হিন্দুকালেজের একজন মুশিক্ষিত ছাত্র এই জেলার (নদীয়া জেলার) ডেপুটী কালেক্টর হইঙ্গা আইসেন। রামতন্তু বাবুর সহিত তাঁহার বিশেষ বন্ধুতা থাকাতে, তিনি আমাদিগকে যথেষ্ট স্নেহ করিতেন, এবং অ্যাগরাও তাহাকে গুরুজনের ন্যায় জ্ঞান করিতাম। তিনি চাদড়কে নিজালয়ে স্ত্রপ্রসাদের স্কুল লইয়া গেলেন, এবং তাহার উন্নতিসাধনে বিশেষ যত্নবান হইলেন॥ আর আমরা এখানকার যুবকবৃন্দ কুসংস্কার নিবারণের ও চরিত্রের সংশোধনের জন্ত যে উঠ্যোগ করিতেছিলাম, সে বিষয়ে বিস্তর সাহায্য করিতে লাগিলেন।

 পরে আবার বলিতেছেন;—

 “আমাদের দেশে বহুকাল হইতে। পান বিশেষ দোষাকর ও পাপ-জনক। বলিয়। কীর্তিত হইয়াছে; এবং মঠ্য পণ করিলে শরীর অপবিত্র হয়, এইরূপ বিশ্বাস এদেশস্থ লোকের মনে জন্মিয়াছে। কিন্তু আমাদের মনে এই স্থির হইল যে যখন এনন বুদ্ধিমান বিদ্বান ও সভ্যজাতীয়েরা ইহা আদর। পূর্বক ব্যবহার করিতেছেন, তখন ইহা অহিত-জনক কখনই নহে। অতএব ইহা পান না করিলে, সভাতাই বা কিরূপে হইবে আর পূর্ব কুসংস্কারই বা কিরূপে। যাইবে? হিস্কালেজের সুশিক্ষিত ছাত্ৰগণের মধ্যে যাহারা এদেশের সনাজ সংস্কার করিতে ব্ৰতী হইয়াছিলেন, তাহারা সকলেই সুরাপান করিতেন। পূর্বে বলিয়াছি, হিস্কালেজের সুশিক্ষিত মাধবচন্দ্র মল্লিক এথানে ডেপুটী কালেক্টর ছিলেন, এবং আমাদের প্রতি যথেষ্ট শ্নেহ করিতেন। আমরা চারি পাঁচ জন আত্মীয় কথন কথনও তাহার বাসায় আহারো সঙ্গে নৃত্ব নদিরা পান। করিতাম এবং বড়ই মুখী হইতাম”।

 ইহাতেই 'সকলে অনুভব করিতে পারিবেন, এদেশের ভদ্রলোকের মধ্যে সুরাপানটা কি ভাবে প্রবেশ করিয়াছিল, এবং যাহারা প্রথমে এই পথের পণিক হন; তাহার৷ কি ভাবে সে পথে পদার্পণ করিয়াছিলেন। তাহারা ইহাকে কুসংস্কার-ভঙ্গন ও চরিত্রের উন্নতিসাধনের একটা প্রধান উপায় মনে করিতেন। ডিরোজিওর শিষ্যগণ এই ভাবেই ইহাকে অবলম্বন করেন।

 ক্রমে রামতনু লাহিড়ী মহাশয় প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত হইলেন। হিন্দু কালেজে পাঠকালে তিনি গ্যামপুকুরের বাসা পরিতাগ করিয়া পাথুরিয়াঘাটাতে, প্রসন্নকুমার ঠাকুরের বৈঠকখানার সন্নিকটে, আপনার জ্যেষ্ঠতাত ঠাকুরদাস