পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/২৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অষ্টম পরিচ্ছেদ।
১৯১

রাজকার্য্যের সুশৃঙ্খলা না হইয়া ঘোর বিশৃঙ্খলাই উপস্থিত হয়। ক্রমে সে নিয়ম রহিত হইয়া বিচারকার্য্যের সুশৃঙ্খলা বিধানের জন্য কলিকাতাতে সুপ্রিমকোর্ট স্থাপিত হয়; এবং দেওয়ানী আদালতের ন্যায় নানা স্থানে ফৌজদারী আদালত স্থাপিত হয়। মফস্বলে কোম্পানির ফৌজদারী আদালত স্থাপিত হইল বটে, কিন্তু মফস্বলবাসী ইংরাজগণকে তাহার অধীন করা হইল না। তাহারা নামত সুপ্রিমকোর্টের এলাকাধীন রহিলেন; কিন্তু, কার্য্যতঃ নিরঙ্কুশ হইয়া রহিলেন; কিন্তু কার্যতঃ নিরঙ্কুশ হইয়া রহিলেন। ইহার ফল হইলে সকলেই তাহা অবগত আছেন। মফস্বলবাসী ইংরাজগণের অত্যাচার প্রজাকুলের অসহ্য হইয়া উঠিতে লাগিল। নদীয়া, যশোহর প্রভৃতি জিলাতে নীলকরগণ যথেচ্ছাচারী দুর্দ্দাস্ত রাজার ন্যায় হইয়া উঠিলেন। অথচ সে অত্যাচার নিবারণের উপায় রহিল না। অত্যাচারী ইংরাজগণ আপনাদিগকে কোম্পানির ফৌজদারী আদালতের বাহিরে রাখিয়া, সুপ্রিমকোর্টের দোহাই দিয়া, স্বচ্ছন্দে বিহার করিতে লাগিলেন। ১৮৪৯ সালের পূর্ব্বে এই সকল অত্যাচার এতই অসহ্য হইয়া উঠিয়াছিল যে ইংরাজ কর্ম্মচারীদিগের ও কোম্পানীর কর্তৃপক্ষের মধ্যে অনেকে এই অনিষ্টকর নিয়ম রহিত করিবার জন্য নূতন রাজবিধি প্রণয়নের পরামর্শ দিতে লাগিলেন। তদনুসারে তৎকালীন ব্যবস্থা-সচিব বীটন সাহেব চারিখানি আইনের পাণ্ডুলিপি প্রস্তুত করিলেন। তাহার সংক্ষিপ্ত বিবরণ এইঃ—

 1. Draft of an Act abolishing exemption from the jurisdiction of the East India Company's criminal courts.

 2. Draft of an Act declaring the privileges of Her Majesty's European subjects.

 3. Draft of an Act for the protection pf judicial officers.' 4. Draft of an Act for trial by jury in the Company's courts.

 পাঠকগণ দেখিতে পাইতেছেন তদানীন্তন ইংরাজগণ যে কেবল এদেশবাসী অসহায় কৃষ্ণবর্ণ প্রজাকুলের প্রতিই অত্যাচার করিতেন তাহা নহে। তাহাদের অত্যাচার হইতে কোম্পানির জুডিশিয়াল অফিসারদিগকেও বাঁচান আবশ্যক হইয়াছিল।