পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/৩০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪৬
রামতনু লাহিড়ী ও তৎকাল বঙ্গসমাজ।

হইতে কৃষ্ণনগরেই গমন করেন, এবং সেখান হইতে ১৮৬৫ সালে পেনশন লইয়া কর্ম্ম হইতে অবসৃত হন।

 এই কয়েক বৎসরের মধ্যে তাঁহার পারিবারিক জীবনে অনেকগুলি ঘটনা ঘটে। ১৮৫৭ সালের চৈত্রমাসে বৃদ্ধ পিতা রামকৃষ্ণ স্বর্গারোহণ করেন। লাহিড়ী মহাশয় উপবীত পরিত্যাগ করার পর তিনি মর্ম্মাহত হইয়াছিলেন; এবং শেষ দশাতে কেবল ইষ্টদেবতার নাম করিয়াই দিন যাপন করিতেন। তাঁহার অবসান কাল সেইরূপ সাধুর প্রস্থানের উপযুক্তই হইয়াছিল। অপর দুই ঘটনা তাঁহার দুই পুত্রের জন্ম। দ্বিতীয় পুত্র শরৎকুমারের ১৮৫৯ খৃষ্টাব্দে ৩রা ভাদ্র দিবসে কলিকাতা সহরে জন্ম হয়। ১৮৬২ সালের মাঘ মাসে কৃষ্ণনগরে তৃতীয় পুত্র বসন্তকুমার জন্মগ্রহণ করেন।


দশম পরিচ্ছেদ।

ব্রাহ্মসমাজের নবোত্থান।

১৮৬০ সাল হইতে ১৮৭০ সাল পর্য্যন্ত।

 এক্ষণে ১৮৬০ সাল হইতে ১৮৭০ পর্য্যন্ত এই কালের মধ্যে বঙ্গ-সমাজে যে যে বিশেষ আন্দোলনের তরঙ্গ উঠিয়াছিল তাহার কিছু কিছু নির্দ্দেশ করিতে প্রবৃত্ত হইতেছি। বলিতে গেলে রামমোহন রায়ের অভ্যুদয়, হিন্দুকালেজের প্রতিষ্ঠা, ব্রাহ্মসমাজের স্থাপন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও অক্ষয়কুমার দত্তের আবির্ভাব, মধুসূদন দত্তের প্রভাব প্রভৃতি ঘটনা-পরম্পরা দ্বারা বঙ্গসমাজে যে নব আকাঙ্ক্ষার উচ্ছ্বাস হইয়াছিল, তাহা এই কয়েক বৎসর আপনার কাজ করিয়া আসিতেছিল। এই ১৮৬০ সাল হইতে ১৮৭০ সালের মধ্যে তাহা আরও ঘনীভূত আকারে আপনাকে প্রকাশ করিয়াছিল। এই কালের মধ্যে নববঙ্গের কয়েকজন নূতন নেতা দেখা দিয়াছিলেন, এবং বঙ্গবাসীর চিত্ত ও চিন্তাকে নুতন পথে প্রবৃত্ত করিয়াছিলেন। তাঁহাদের সংক্ষিপ্ত জীবনচরিত পর পরিচ্ছেদে প্রদত্ত হইবে। আপাততঃ তাঁহাদের কার্য্যের বিষয়ে কিছু আলোচনা করা যাইতেছে।

 এই কালের প্রথম ভাগে কেশবচন্দ্র সেন মহাশয় নবোদীয়মান রবির ন্যায়