পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/৩৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২৯০
রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ

কাশীতে গিয়া কাশীবাসী অনেকের বিশেষতঃ পাণ্ডীগণের মধ্যে ধৰ্ম্ম ও নীতির দুরবস্থা দেখিয় তাহার প্রাণে বড় আঘাত লাগে। তিনি হৃদয়ের সেই ভাব ব্যক্ত করিয়া “ৰিশ্বেশ্বর-বিলাপ’ নামে একখানি কাব্যপুস্তক রচনা করেন। তৎপরে দেশে ফিরিয়া আর পূৰ্ব্বের ন্তায় সোমপ্রকাশের কার্য্য করিতে পারিতেন না।

 ইহার উপরে ভানেকিউলার প্রেস श्रांद्प्ले (Vernacular Press Act) নামক আইন বিধিবদ্ধ হইলে, অমৃত বাজার পত্রিকা যখন ইংরাজী কাগজে পরিণত হইল, তখন তিনি কিছুদিনের জন্ত সোমপ্রকাশ তুলিয়া দিলেন, তথাপি নব প্রণীত অপমানকর আইনের অধীন হইতে পারিলেন না। এই সময়ে বঙ্গের লেপ্টনাণ্ট গবর্ণর সার রিচার্ড টেম্পল তাহাকে নিজ ভবনে ডাকাইয়া, সোম প্রকাশ তুলিয়া না দিবার জন্য অনেক অনুরোধ করিয়াছিলেন। পরে ঐ গৰ্হিত আইন উঠিয়া গেলে সোমপ্রকাশ আবার বাহির হইল বটে কিন্তু পূৰ্ব্বপ্রভাব আর রহিল না। তাহাও ক্রমে হস্তান্তরে গেল। ইহার পরে তিনি “কল্পদ্রুম” নামে এক মাসিক পত্রিকা কিছুদিন বাহির করিয়াছিলেন; তাহাও তাহার অসুস্থত বশতঃ অধিক কাল রহিল না। চরমে তিনি পীড়িত হইয়া রে গুরা রাজ্যের অন্তর্গত সাতনা নামক স্থানে গিয়া বাস করেন। সেখানে গুরুতর পৃষ্ঠত্রণ রোগে ১৮৮৬ সালের ২২শে আগষ্ট দিবসে গতাস্থ হন।

 লাহিড়ী মহাশয় কিছুদিন বাড়ীতে বসিয়া বিদ্যাভূষণ মহাশয়ের পিতা হরচন্দ্র দ্যায়রত্ন মহাশরের নিকট পড়িয়াছিলেন। তাহা অল্পদিনের জন্ত; কিন্তু লাহিড়ী মহাশয়ের প্রকৃতিতে গুরুভক্তি ও সাধুভক্তি এমনি প্রবল ছিল যে সেই অল্পদিনের সম্বন্ধ তিনি কখনও ভুলিতে পারেন নাই। চিরদিন হ্যায়রত্ন মহাশয়ের নাম স্মৃতিতে ধারণ করিয়া আসিয়াছেন। দ্যায়রত্ন মহাশয়ের স্বসম্পৰ্কীয় লোফদিগের প্রতি, বিশেষত বিদ্যাভূষণ মহাশয়ের প্রতি, শ্রদ্ধা প্রচুর পরিমাণে ছিল। সেই কারণেই বোধ হয় আমাকে দেখিবামাত্র দ্যায়রত্ন মহাশয়ের দৌহিত্র বলিয়া প্রেমালিঙ্গনের মধ্যে লইয়াছিলেন।

ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকার।

 বঙ্গদেশকে যত লোক লোকচক্ষে উচু করিয়া তুলিয়াছেন এবং শিক্ষিত বাঙ্গালিগণের মনে মনুষ্যত্বের আকাঙ্ক্ষা উদ্দীপ্ত করিরাছেন, তাহাদের মধ্যে