পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/৩৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩১০
রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ

এই সমাজে উপদেশ দিতাম। ধৰ্মসংস্কার, সমাজ সংক্ষার, সাধারণ জ্ঞানো মতি প্রভৃতি বিষয়ে উপদেশ হইত। মধ্যে মধ্যে আমরা ২০০। ৩০০ ছাত্র লাইমা শিবপুরের কোম্পানির বাগান প্রভৃতি স্থানে যাইতাম, এবং নানা প্রকার সদালোচনাতে সমস্ত দিন যাপন করিয়া' আসিতাম॥ এই প্রকারে ছাত্র দলের মধ্যে কিছু দিনের জন্ট নবোৎসাহের সঞ্চার হইয়াছিল। ছাত্রসমাজ অত্যাপি। বৰ্ত্তমান আছে।

এক্ষণে এই কালের মধ্যে পূর্ববঙ্গে কি প্রকার আন্দোলনের তরঙ্গ উঠিরা। ছিল তাঙ্গ কিঞ্চিৎ নিৰ্দেশ করিতে প্রবৃত্ত হইতেছি। দশম পরিচ্ছেদে বলিয়াছি যে কেশব চন্দ্র সেন মহাশয় তাহার বিলাত গমনের পূর্বে ১৮৬৯ সালের শেষ ভাগে চাকার ব্রাহ্মমন্দির প্রতিষ্ঠা করিবার জন্য ঢাকাতে গমন করেন। তৎপূর্ব চৈত্র মাসে তিনি দ্বিতীয় বার ঐ সহরে গিয়াছিলেন; এবং একমাস কাল তথায় বাস করিয়া ব্রাহ্মধৰ্ম্ম প্রচার করিয়াছিলেন। কিন্তু ১৮৬৯ সালের শেষ ভাগে। যে আবার গমন করেন তাহার ফল কিরূপ দাড়াইয়াছিল তাহা নির্দেশ করা হয়। নাই। তাহার কিঞ্চিৎ বিবরণ সুপ্রসিদ্ধ কালী প্রসন্ন ঘোষ মহাশয় এক স্থানে। এই ভাবে দিয়াছেন।

“স্বনাম-ধন্য কেশবচন্দ্র তাহার কতিপয় শিষ্যসহ ঢাকায় আগমন করিলেন; কেশব ইংরাজীতে ও তৎপরে বাঙ্গলায় বক্ততা করিলেন; তাহার বক্ত, ত৷ শ্ৰবণ করিয়া ঢাকায় সকল সম্প্রদায়ের লোক মোহিত ও বিস্মিত হইল। ব্রাহ্মধর্মের জয় পতাকা ঢাকার নগর সঙ্কীৰ্ত্তনে প্রথম উত্তোলিত হইল। যাহারা কোন অংশেও ব্রাহ্ম নহে, তাহারা ও নগর সঙ্কীৰ্ত্তনে বহির্গত, ঋষিবেশে। সুশোভিতরির্পদ, কেশবচন্দ্রকে ধ্য পুরুষ মনে করিয়া নমস্কার করিল; এবং ব্রাহ্মধর্মকে একটা” আশ্চর্য ও অতি পবিত্র বস্থ জ্ঞানে সম্মান করিতে শিথিল।”

কিন্তু এই সময় হইতে।ঢাকাস্থ ব্রাহ্মসমাজের মূৰ্ত্তি পরিবর্তিত হইল। উহ৷ এখন আর ব্রহ্মোপাসনার মন্দির মাত্র, এই ভাবে লোকের চক্ষে প্রতিভাত হইল না। ব্রাহ্মগণ সমাজ-বদ্ধ হইয়া যথারীতি দীক্ষিত হইতে আরম্ভ করি লেন। এই উপলক্ষে পিতাপুত্রে বিচ্ছেদ, জাতিপাত, সমাজ ত্যাগ, দলাদলি আরম্ভ হইল, দেশে একটাহৈ চৈ পড়িয়া' গেল। বহু ব্ৰাহ্মণ যুবা উপবীত ত্যাগ করিয়া ব্ৰাহ্ম হইলেন। তাহাদিগের মধ্যে নবকান্ত, নিশিকান্ত ও তনুজ শীতলাকান্তের নাম বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। টাহারা ভিন ভাতাই