পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/৩৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
আয়োদশ পরিচ্ছেদ।
৩১৭

মিঠার রীজের নাম প্রধানরূপে উল্লেখযোগ্য। ডি, এল, রিচাডসনের বিবরণ অগ্রেই দেওয়া হইয়াছে। রীজ সাহেব এক সময়ে সুবিখ্যাত নেপোলিয়ান বোনাপার্টির সৈন্য দলে সামান্য একজন পদাতিক সৈনিক ছিলেন। তৎপরে নানা ঘটনা ও নানা অবস্থা অতিক্ৰম করিয়া অবশেষে হিন্দকালেজের গণিতাঁধ্যাপকের কাৰ্য্যে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিলেন। গণিতে তাহার মত “পণ্ডিত লোক প্রায় দেখা যায় না। তাঁহার সংস্রবে যে বেদন .ছাত্র একবার আসিয়াছে সেই তাঁহার। গণিতবিক্ষ্যা-পারদর্শিতা দেখিল্লা আশ্চর্যান্বিত হইয়াছে। কিন্তু রাজনারায়ণ বাবু চিরদিন। গণিতকে ডরাইতেন; সুতরাং রীজকে ঘমের মত দেখিতেন।

 যাহা হউক এই সময় প্রতিভাশালী শিক্ষকের সংস্রবে আসিয়া তাহার। চিত্তে জ্ঞানশূহ উদ্দীপ্ত হইল। অপর দিকে মাইকেল মধুস্থদন দত্ত, প্যারীচরণ সরকার, জ্ঞানেন্দ্রমোহন ঠাকুর, ভূদেব মুখোপাধ্যায়, “ আনন্দ ঞ্চ বছ. জগদীশ নাথ রায়, ঈশ্বরচন্দ্র মিত্র প্রভৃতি পরবর্তীকালপ্রসিদ্ধ ব্যিিদগকে সহাধ্যায়ী রূপে পাইয়া তাহার আয়োশ্নতির বাসনা প্রবল হইল। তাহার ফলস্বরূপ তিনি কলেজের ভাল ভাল পারিতোষিক ও ছাত্রবৃত্তি প্রভৃতি পাইতে লাগিলেন। হিন্দুকলেজে পাঁচ বৎসর পাঠ করিয়া তিনি ১৮৪৪ সালে উত্ত হইলেন। পর বৎসর তাহার পিতার' দেহান্ত হইল। ১৮৪৬ সালে তিনি দেবেন্দ্রনাথ। ঠাকুর মহাশয়ের দ্বারা আকৃষ্ট হইয়া ব্রাহ্মসমাজে যোগ দিলেন; এবং উপনিষদের ইংরাজী অন্ধুবাদ করিয়াতত্ত্ববোধিনী পত্রিকা সম্পাদন বিষয়ে, অক্ষয়কুমার দত্ত মহাশয়ের সহায়ড়া করিতে প্রবৃত্ত হইলেন।

 ১৮৪৮ সাল পর্যন্ত ঐ কাৰ্য্য করিয়াছিলেন। তৎপরে ইংলঙে দ্বারকানাথ ঠাকুর মহাশয়ের মৃত্যুর পর, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয়ের বৈষরিক অবস্থা মন্দ হইলে, উপনিষদ অধুবাদকের পদ উঠিল্লা যাওয়াতে তাহারও ক গেল। তিনি প্রান্ধ দেড় বৎসর কাল বসিয়া রহিলেন। পরে ১৮৪৯ সালে তিনি কলিকাতা সংস্কৃত কালেজের দ্বিতীয় ইংরাজী শিক্ষকের পদে নিযুক্ত হইলেন। এই সময়কার স্মরণীর বিষয় একটী আছে। স্বংস্কৃত কলেজে যে তিনি কেবল ক্লাসের ছাত্রফিগকে ইংরাজী পড়াইতেন তাহা নছে, কিন্তু ঈশ্বরচন্দ্র বিন্য্যাসাগর, দ্বারকানাথ দ্বিধাভূষণ, মদনমোহন তর্কালঙ্কার, রামগতি ত্যায়রত্ন প্রভৃতি পরবর্তী সময়- প্ৰসিদ্ধ ব্যক্তিগণও তাহার নিকট ইংরাজী পড়িতেন। এই সূত্রে। রাজনারায়ণ বাবুর সঙ্গে উহাদের আত্মীয়তা জন্মে।