পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/৩৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩২৪
রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ

হিন্দু সন্ন্যাসী তাহাকে দেখিবার জন্ত ও তাঁহার কাছে কুয়েক দিন থাকিবার জন্ত বৈনাথের নিকটস্থ তপো পাহাড় হইতে নামিয়া আসিয়াছেন। ইহা কিছুই• আশ্বৰ্য্য নয়, যে তাঁহার সহাধ্যায়ী বন্ধু প্রসিদ্ধ ভূদেব মুখোপাধ্যায় একবার নিজের গলদেশ হইতে উপবীত লইয়া তাহার গলে দিয়া বলিয়াছিলেন, “রাজনারায়ণ তুমিই প্রকৃত ব্রাহ্মণ, আমরা তোমার তুলনায় কিছুই নহি।”

 এইরূপে সৰ্ব্বশ্রেণীর,“সৰ্ব্ব সম্প্রদায়ের, সৰ্ব্বজনের খ্ৰীতি ও শ্রদ্ধায় প্রতিষ্ঠিত থাকিতে থাকিতে ১৮৯৯ সালে পক্ষাঘাত রোগে তিনি গতাস্থ হন। ইনি রামতনু লাহিড়ী মহাশয়ের একজন সন্মানিত বন্ধু ছিলেন।

আনন্দ মোহন বসু।

 চরিত্রবান মানুষই একটা জাতির প্রধান সম্পত্তি। কোন দেশে কহু ধন। ধাগ্য আছে, তাহা দিয়া সে দেশের মহত্ত্বের বিচার নহে, কিন্তু সে দেণ ক’ত চরিত্রবান্, গুণী, জ্ঞানী, মানুষকে জন্ম দিয়াছে, সাহিত্য বিজ্ঞান প্রভৃতিতে কত প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়াছে, সদদুষ্ঠানে কত কৃতিত্ব লাভ করিয়াছে, এই সকলের দ্বারাই সেই মহত্ত্বের বিচার। বঙ্গদেশ যে নব্যভারতে গৌরবান্বিত হইরাছে তাহা ইহার ধন ধান্যের জ্য কখনই নহে। যে দেশ রামমোহন রায়কে জন্ম দিয়াছে, বাহাতে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ত্যায় মানুষ দেখা দিয়াছে, যে দেশে। দেবেন্দ্ৰ নাথের স্বাধিত, কেশবের বাগিতারাজেন্দ্র লালের পাণ্ডিত্য। মহেঞ্জের সত্যানুয়াগ, বঙ্কিমের প্রতিভাকৃষ্ণদাসের কৃতিত্ব, আরও ছোট বড় কত কত ব্যক্তির মনুষ্যত্ব প্রকাশ পাইয়াছে, সে দেশ কি লোকচক্ষে বড় না হইয়া যায়! আনন্দ মোহন বস্তু, শিক্ষা ও সাধুতাতে এই গৌরবাম্বিত দলের। একজন অগ্রণী ব্যক্তি ছিলেন। নব্যবগের তৃতীয় যুগের নেতৃবৃনের মধ্যে তিনি একজন প্রধান পুরুষ। সুতরাং তাহার জীবন চরিত সংক্ষেপে বৰ্ণন করিতে। যাইতেছি:

 আনন্দমোহন বঙ্গের ময়মনসিংহ জেলাস্থিত জয়সিদ্ধি নামক গ্রামে ‘১৮৪৭ খ্রীষ্টাব্দে জন্ম গ্রহণ . ঝরেন। তাহার পিতার নাম পদ্মলোচন বস্তু। পদ্মলোচন ময়মনসিংহ নগরে। শেরেস্তাদারী কাজ করিতেন; এবং পদে ও সন্ত্রমে বড় লোক ছিলেন। হরমোহন ও'মোহিনী মোহন নামে পদ্মলোচন বসু মহাশয়ের আর দুই পুত্র ছিলেন; হরমোহন সৰ্বজ্যেষ্ঠ এবং মোহিনী মোহন সর্ব্ব-কনিষ্ঠ,আানন্দমোহন দ্বিতীয়।