পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/৪৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩৬৮
রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ

দিন চলিল না। অচিরকালের মধ্যে ইলুমতী দারুণ যক্ষ রোগে আক্রান্ত श्ब्रां পড়িলেন। তখন ধর, ধর, খেকা থেক পড়িয়া গেল। পায়ে ও মন্তকে স্থই স্থানে এক সঙ্গে কৃষ্ণসৰ্পে দংশন করিলে যেমন হয় লাহিড়ী মহাশয়ের পরিবারের দশা যেন তেমনি হইল? নবকুমারের পীড়া বরং রহিয়া বসিয়া বাড়িতেছিল; চোকে কাণে দেখিবার০শুনিবার অবসর দিতেছিল; কিন্তু ইন্দুমতীর যক্ষা মণ্ডুকল্প,তিতে বাড়িতে লাগিল। ১৮৭৭ সালের মধ্যভাগে পীড়া এতই বাড়িয়া উঠিল, যে ঐ সালের অক্টোবর মাসে র্তাহাকে ভাগলপুর হইতে আরাতে লইয়া যাওয়া স্থির হইল। তখন শরৎকুমার ও লীলা ব্যতীত অপর সকলে আরাতে একত্র বাস করিতে লাগিলেন। আঁরাতে গিয়া নবকুমার বা ইন্দুমতীর পীড়ার কোনও প্রকার উপশম না হউক, আর একটা দুর্ঘটনা, ঘটিল। লাহিড়ী মহাশয়ের সর্বকনিষ্ঠা কন্যা মৃদুমতী, আড়াই বৎসরের বালিকা, সেখানে বিষম জর-রোগে অকালে প্রাণত্যাগ করিল। এদিকে এক মাসের মধ্যেই ইন্দুমতীর জীবনের আশা চলিয়া গেল; চিকিৎসকগণ জবাব দিলেন। এই সঙ্কটাবস্থায় পরম বন্ধু বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পরামর্শে, ইন্দুমতীর অবসান কাল কৃষ্ণনগরে যাপন করিবার উদ্দেশে, লাহিড়ী মহাশয় পরিবার পরিজনকে লইয়া স্বদেশাভিমুখে যাত্রা করিলেন। তখন ইন্দুর এমন অবস্থা যে তাছাকে হুগলীতে নামাইয়া নৌকাযোগে কৃষ্ণনগরে লইরা যাইতে হইল।

কৃষ্ণনগরে পৌঁছিয়া ইন্দুমতী শেষ - শ্য, মৃত্যু-শয্যা, পাতিলেন। লাহিড়ী মহাশয়ের পত্নীর কথা আর কি লিখিব। ংে, পাঠক ! যদি মানুষের হৃদয় থাকে তবে একবার ধারণা করিবার চেষ্টা কর, সেই ভয়হৃদর মাতা কি ভাবে সংসারের কাজ ও পীড়িত সন্তানদের সেবা চালাইতে লাগিলেন। সাধে কি নারী জাতীকে এত"শ্রদ্ধা করি, ইন্দুমতী মরিতে মরিতেও কেবল জ্যেষ্ঠ সহোদরের চিন্তাই করিতেন। পিতা, বা মাতা নিকটে আসিয়া বসিলে, সুস্থির হইয়া বসিতে দিতেন না; বলিতেন, “তোমরা দাদাকে দেখ, তোমরা ধাদাকে দেখ, আমার কাছে বস্বার দরকায় নেই; আমার কাছে দিীর আছেন।” এইরূপ প্রায় প্রতিদিন তুলিয়া দিতেন। ওদিকে নৰকুমার বুঝিলেন ভগিনীর আসন্নকাল উপস্থিত; এবং ইন্দু তাহার জন্তই মরিতেছে; সুতরাং তিনি নিজের অমুখ ভুলিয়া গির ভগিনীর শুশ্রুষার জন্য ব্যস্ত হইলেন। বার বার উঠিয়া ভগিনীকে দেখা, সময়ে ঔবধ পড়িতেছে