রোডে, শরৎকুমারের গৃহের সম্মুখে, জনতা ! আমরা উপরে গিয়া দেখি বৃদ্ধ লাহিড়ী মহাশয় চিরনিদ্রাতে অভিভূত্ব আছেন। যে মুখ কতবার ভক্তিঅশ্রতেসিক্ত বা ধৰ্ম্মোৎসাহে প্রদীপ্ত, বা পাপের প্রতি বিৰুগে আরক্তিম দেখিয়াছি, সেই মুখ সেই মুহূর্বে স্বপ্তমীন হ্রদের স্থায়, অথবা মাতৃক্রোড়ে নিদ্রিত শিশুর মুখের স্তা, নিরুপদ্রব শাস্তিতে পরিপূর্ণ। চাহিয়া চাহিয়া রহিলাম, মনে হইল সেই দেবশিপ্ত জগত-জননীর কোলে ঘুমাইয়া পড়িয়াছেন। হায়! এজীবনে কত মানুষ হারাইলাম, মানুষ আসে মানুষ যায়, সকল মানুষ ত মধুর স্বপ্নের স্মৃতির ন্যায় হৃদয়ে স্মৃতি রাখিয়া যায় না ! কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে এ জীবনে কতকগুলি মানুষকে দেখিয়াছি যাহারা যাইবার সময় প্রাণে কিছু রাখিয়া গিয়াছেন,—যাহারা ভবধাম ত্যাগ করিলেই অন্তরাত্মা বলিয়াছে, “হা কি দেখিলাম, কি সঙ্গই পাইয়াছিলাম, এমন মানুষ আর কি দেখিব !” সে দিন দাড়াইয়া দাড়াইয়া কাদিলাম, আর ভাবিলাম এই সেই দলের একজন মাহুষ গেলেনু।
যথা সময়ে আমরা বহুসংখ্যক ব্যক্তি লগ্নপদে র্তাহার মৃত-দেহ বহন করিয়া শ্মশানাভিমুখে যাত্রা করিলাম। সেদিন কি কেবল শরৎকুমার ও বসন্তকুমার পিতৃকৃত্য করিতে গেল ! তাহা নহে; আমরা অনেকে পিতৃকৃত্য করিতে গেলাম। পথে আরও অনেক লোক যুটিল। জনতা দেখিয়া লোকে বলে—“কে যায়? কে যায়?”—উত্তর;—“রামতনু লাহিড়ী যান?” 'अमनि শিক্ষিত ভদ্রলোকের মুখে একই বাণী—“যাঃ, দেশের একটা সাধুলোকু গেল।” রোমের পোপ অনেক খ্ৰীষ্টীয় নর নারীকে 'সাধু উপাধি দিয়াছেন-ইহাকে সাধারণ লোকে “সাধু” উপাধি দিয়াছিল। ক্রমে আমরা শ্মশানঘাটে প্লোছিয়। তাহার নশ্বর দেহ চিতানলে অৰ্পণ করিলাম; অবিনশ্বর যাহা, তাহা অমৃতের ক্রোড়ে অগ্ৰেই আশ্রয় লইয়াছিল।
মুখ সময়ে শরৎকুমার ও বসন্তকুমার বন্ধুবান্ধবকে নিমন্ত্রণ করির পিতার আদ্যশ্ৰাদ্ধ সম্পন্ন করিলেন। ,ৰে মঙ্গলময়, পুরুষের প্রতি লাহিড়ী মহাশয় জীবদ্দশায় অবিচলিত আস্থা রাখিয়াছিলেন, তাহারই অর্জনাপূর্বক শ্ৰাদ্ধ ক্রিয়া সম্পন্ন হইল। সভাস্থলে রাজা প্যারীমোহন মুখোপাধ্যায়, ঢাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকার, মিঃ কে, জি, গুপ্ত প্রভৃতি পরলোকগড় সাধুর অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিগণ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। শ্রাদ্ধস্থলে একম বন্ধ আমাকে কাণে কাণে একটী চমৎকার কথা বলিলেন। তাৰু এই—"ওরূপ চরিত্রের আলোচনা করিবার