পাতা:রামদাস গ্রন্থাবলী দ্বিতীয় ভাগ.djvu/১৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যুদ্ধ-ধৰ্ম্ম । ১৬১ মহাভারতেও প্রায় এইরূপ ব্যবস্থা দৃষ্ট হয়। যথা— “শূরান্নজলসম্পন্ন ব্রহ্মঘোষামুনাদিতম্। বঙ্গামাত্যবলে রাজা তৎপুরং স্বয়মাবিশেৎ ॥” শুর অর্থাৎ বীরপুরুষে পরিপূর্ণ, বেদশব্দে নিনাদিত, বশীভূত অমাত্য ও সৈন্ত সমূহে পরিপূর্ণ, এতাদৃশ পুরে রাজা অমাত্য সহ বাস করিবেন। এ পর্যন্ত যতগুলি দুর্গের উল্লেখ করা হইল, তৎসমস্তের মধ্যে মৃদ্ধ গষ্ট প্রায় প্রচলিত ও বিশেষ কৃত্রিম । আজি পৰ্য্যন্ত মৃত্তিক ভিত্তির স্বারা প্রস্তর ভিত্ত্বির দ্বারা ও ইষ্টক ভিত্তির দ্বারা দুর্গ প্রস্তুত হইয়া থাকে। এক্ষণকার সেই সকল দুর্গ কিরূপ কৌশল-সম্পন্ন তাহ আমরা উত্তমরূপ জানি না । পরন্তু পুরাতন কালের দুর্গনির্মাণবিধি পৰ্য্যালোচনা করিলে আধুনিক দুর্গগুলির ব্যবস্থা-কৌশল অল্পপরিমাণে বোধগম্য করা যায় । রাজবল্লভ নামক বাস্তুশাস্ত্রের দ্বিতীয় অধ্যায়ে সুদুর্গ নিৰ্ম্মাণ সম্বন্ধে বিশেষ ব্যবস্থা আছে। পাঠকগণের কুতূহল চরিতার্থ জন্য তাহার কতক অংশ আমরা প্রবন্ধাকারে অন্ত এক গ্রন্থাবয়বে প্রকাশ করিব। যুদ্ধ-ধৰ্ম্ম । প্রাচীন ভারতের সকল কার্য্যেই ধৰ্ম্ম-সংযোগ ছিল । আহার করিবে তাহাতেও ধৰ্ম্ম, ব্যবহার করিবে তা হাতেও ধৰ্ম্ম, বিহার করিবে তাহাতেও ধৰ্ম্ম, যুদ্ধ করিবে তাহাতেও ধৰ্ম্ম । কোন কাৰ্য্যই অধৰ্ম্মপূৰ্ব্বক করা বিধেয় নহে ; সকল কাৰ্য্যই ধৰ্ম্মপূৰ্ব্বক করা কৰ্ত্তব্য, এইরূপ দৃঢ়তর বিশ্বাস পূৰ্ব্বাচাৰ্য্যদিগের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত ছিল । যুদ্ধ যে এত নৃশংসের কার্য্য, পূৰ্ব্বকালে তাহাও ধৰ্ম্মের দ্বারা আবদ্ধ ছিল । মানুষ মারিব, কিন্তু ধৰ্ম্ম বা নিয়মপুৰ্ব্বক মারিব,—এরূপ ইচ্ছা, এরূপ নিয়ম, এরূপ অভিসন্ধি, এরূপ সতর্কত,— ভাবিয়া দেখিলে উহ বীরসমাজের ভূষণ বলিয়া প্রতীতি হয়। কুরুক্ষেত্রে সৰ্ব্বাস্তকর যুদ্ধ উপস্থিত হইল,—কুরপাওবসৈন্য পূর্ণ উৎসাহে পরম্পর পরস্পরের বধর্থ উদযোগ করিল,—যুদ্ধারম্ভের পূৰ্ব্বে ধৰ্ম্মনিয়ম প্রচার করাও হইল। উভয়পক্ষ হইতেই ধ্বনিত হইল যে, আমরা অধৰ্ম্ম বা অন্তায় পূৰ্ব্বক যুদ্ধ করিব না ; অরন্ধ-যুদ্ধ সমাপ্ত হইলে, পুনৰ্ব্বার আমাদের প্রীতি সংস্থাপিত

  • : r