পাতা:রামদাস গ্রন্থাবলী দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৫৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিশিষ্ট । ४ t;t পদার্থ, একই ধ্যান, একই জ্ঞান, একই প্রতীতি, একই ইচ্ছ, একেতেই অনুরাগ ও প্রতীতি । তদ্ব্যতীত বস্তুস্তরে छूटै থাকে না, জ্ঞানও থাকে ন}, স্বতরাং ভাবাভাব বা ভাবনা থাকে না, বুদ্ধের এ কথাও পতঞ্জলোক্ত যোগশাস্ত্রোক্ত “একাগ্রতা পরিণাম” ও “সমাধি পরিণাম” কথার সহিত সমান । “তৃতীয় প্রকার সমাধিতে চিত্ত উদাসীন হয় । জ্ঞান অজ্ঞান, ভাব অভাব, রাগ বৈরাগ্য, সুখ দুঃখ, আনন্দ নিরানন্দ, সম্পদ বিপদ, নিত্য অনিত্য, এ সমুদয় বোধ্যতীত হয়, আত্ম। এ অবস্থায় মধ্যব্যবস্থায় অবস্থিতি করে। নির্লিপ্ত, উপেক্ষক, অস্পৃষ্ট, অক্রিয় ও মুম্পন্দ হয়। আস্থা তখন কোন প্রকার বোধে আসক্ত নহে, অধীন নহে ও ক্রিয়াহীন।” বুদ্ধের এ উক্তিও যোগশাস্ত্রসম্মত নিরোধ পরিণামের ফল বা নাম স্তর মাত্র । শাক্যসিংহ বুথিত হইয়। অর্থাৎ সমাধি ভঙ্গের পর বা বোধিজ্ঞান লাভের পর—আর একটী কথা বলিয়াছিলেন, তাহা এই—“চতুর্থ সমাধিতে অর্থাৎ সমাধির চরমাবস্থায় আত্মস্মরণ তিরোহিত হয়, আমিত্ব বা অহংভাব ( ইহাই বুদ্ধমতের আলয় বিজ্ঞান ও জীবাত্মা ) বিদূরিত হওয়াতে চিত্ত যৎপরোনাস্তি নিৰ্ম্মল হয়, না থাকার হায় হয়। অহঙ্কারই পাপের ও সংসারের মূল, তাহার অভাবে পুণ্যের উদয়, পাপ জীবনের ও সংসারের মৃত্যু এবং ধৰ্ম্মজীবনের বা মনুষোত্তর জ্ঞানের লাভ, ইহাই চরম—এই অবস্থা আসিলেই দুঃখের অবসান, মুক্তিলাভ, শান্তির উদয়, নিৰ্ব্বাণরূপ পরম তত্ত্বের আবির্ভাব হয়। অনস্ত জ্ঞান ও সত্ত্বদর্শন হয় । সত্ব তখন প্রকৃতিস্থ ও অমর। ইহাই অমরত্ব। আর জন্ম নাই, মৃত্যু নাই, জীবন নাই, জরা নাই, বন্ধমোক্ষ নাই। সত্ত্ব অচ্যুত রাজ্যে বিচরণ, পরমানন্দ প্রাপ্ত ও অমর হয়।” বুদ্ধের এ কথা আর হিন্দুযোগীদিগের নিববীজ সমাধির ফল আত্মবিমোক্ষ সমান। হিন্দুযোগীদিগের কৈবল্যলাভের লক্ষণ, বুদ্ধের সত্ত্বদর্শন, বেদান্তের ব্রহ্মদর্শন, এ সমস্ত সমান। সত্ত্বশদও হিন্দুমতে পরমাত্মবাচী ও ব্রহ্মবাচী । বৌদ্ধের বোধিসত্ত্ব আর হিন্দুমতের জীবন্মুক্ত পুরুষ একই কথা। বুদ্ধ বলেন, শেষাঙ্গ সম্যক সমাধি, তাহা হইতে শান্তি ফল উৎপন্ন হয়, সেই শাস্তি সৰ্ব্ব প্রকার রিপু বশীভূত হওয়ার পর উদিত হয় । চিত্ত তখন স্থির, আচঞ্চল, প্রতিকূল অনুকূল কোন ব্যাপারে বিকৃত হয় না। চিত্ত তখন নিরস্তুর একই অবস্থায় অবস্থিতি করে । ইহাই শম অর্থাৎ শান্তি । এই শাস্তি নিৰ্ব্বাণ জ্ঞানের স্বাদু ফল। চিন্তু নিৰ্ব্বাণ জ্ঞানের প্রভাবে