পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/১৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামেন্দ্রস্থদের রচনাসমগ্র وف جی وی নিকট কিছুই অবহেলার বিষয় নহে ; কিছুই অকিঞ্চিৎকর নহে। ধূলিকণায় ষে তত্ত্ব নিহিত আছে, সৌরজগতের তত্ত্ব তাহা অপেক্ষা গুরুতর না হইতেও পারে । সংস্কৃত, প্রাকৃত, হিন্দী, মরাঠা প্রভৃতির সহিত বাঙ্গালার তুলনা করিতে হইবে। প্রাদেশিক লৌকিক ভাষা-সমুদয় পরস্পর তুলনা করিতে হইবে। পারিভাষিক শবরাশি সংগ্ৰহ করিয়া বিভিন্ন প্রদেশে তাহাদের প্রচলন পরীক্ষা করিতে হষ্টবে। ধাঙ্গড়ের ভাষা, সাওতালের ভাষা, কোল দ্রাবিড় ভূটিয়ার ভাষা খুজিতে হইবে ; কে বলিতে পারে, ঐ সকল ভাষার সহিত বাঙ্গালার সম্বন্ধ কি : কে জানে, উহাদের কাছে বাঙ্গালার কতটা ঋণ আছে। কাৰ্য্য অতি বৃহৎ । দশ জনের বা দশ বৎসবের চেষ্টায় ইহা সম্পন্ন হইবে না। কোনও দেশে হয় নাই ; কোনও কালে হয় নাই। বিজ্ঞান কখনও সম্পূর্ণ হয় না। বিজ্ঞানের গতি কেবল পূর্ণতার অভিমুখে । বঙ্গীয়-সাহিত্য-পরিষৎ যদি সেই কৰ্ম্ম কিঞ্চিৎ অগ্রসর করিয়৷ যাইতে পারেন, তাহা হইলে পরিষদের অস্তিত্ব নিরর্থক হইবে না । 嘯 বৈজ্ঞানিক পরিভাষা আমার মনের ভাব তোমাকে জানাইবার জন্য ভাষা ; এই উদ্দেশ্য যত সহজে, যত অল্প শ্রমে ও যত সম্পূর্ণরূপে সাধিত হয়, ততই ভাষার সার্থকতা। শবদ লইয়া ভাষার শরীর ও ভাব লইয়া ভাষার জীবন, এ কথা বলিলে নিতান্ত ভূল হয় না। ভাবের সহিত শব্দের একটা সম্বন্ধ আছে। এ সম্বন্ধটা বিধাতার নির্দিষ্ট কি না, তাহ নিৰ্দ্ধারণের চেষ্টায় আমার কোন প্রয়োজন নাই । অধিকাংশ স্থলে শব্দের ও অর্থের সম্বন্ধ মানুষেরই কল্পিত, সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই। শব্দ একটা সঙ্কেত মাত্র। পাচ জনে মিলিয়া মিশিয়া সঙ্কেতটা সৰ্ব্বত্র সৰ্ব্বদা এক অর্থে প্রয়োগ করিলেই জীবনযাত্রা চলিয়া যায় ও ভাষার উদ্দেশ্যও সাধিত হয়। মানুষের মনে যত কিছু ভাবের উদয় হইতে পারে, তাহার প্রত্যেকের জন্য এক-একটি পৃথকৃ সঙ্কেত থাকিলে বোধ করি, ভাষাকে সম্পূর্ণ ভাষা বলা যাইতে পারিত। আমাদের মনে ভাবের সংখ্যার সীমা নাই, কিন্তু আমাদের শব্দসঙ্কলনশক্তি সঙ্কীর্ণ। ফলে কয়েকটি মাত্র শব্দ বা সংঙ্কেত লইয়া অসংখ্য মনের ভাব ব্যক্ত করিতে হয়। এইখানে ভাষার প্রধান অপূর্ণতা। কিন্তু এই অপূর্ণতা পরিহারের উপায় দেখা যায় না। এই-দোষ কথঞ্চিৎ পরিহারের জন্য নানাবিধ কৌশল প্রযুক্ত হয়। পাচটা ভাব একজাতীয় হইলে আমরা একটা শব্দকেই উপসর্গ প্রত্যয়াদি যোগে নানা উপায়ে গড়িয়া পিটিয়া নানাবিধ আকার দিয়া থাকি। কিন্তু ইহাতেও কুলায় না। অগত্য বাধ্য হইয়া একটা শব্দ কখন কখন পাচটা অর্থে ব্যবহার করিতে হয় । ইহা ভাষার নিৰ্দ্ধনতাস্থচক। আবার একই অর্থে কখন কখন পাচটা শব্দও ব্যবহৃত হইয় থাকে ; ইহা নিৰ্দ্ধনের ধনবতার আড়ম্বর। এই আড়ম্বর না