পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শব্দকথা : রাসায়নিক পরিভাষা } (to লোকমুখে চলিত নামও আধুনিক গ্রন্থে ব্যবহৃত হইয়া থাকে। অতি অল্প চেষ্টায় এই যথেচ্ছাচার নিরাকৃত হইতে পারে। তথাপি চলিত প্রথা এমনই স্থিতিশীল যে, রসায়ন-বিদ্যার গ্রন্থে একই দ্রব্যের এতগুলি নাম আজিও চলিতেছে। ইংরেজীতে চারিট নাম বৰ্ত্তমান আছে বলিয়া বাঙ্গালা অমুবাদের সময় চারিট নাম খুজিতে হইবে, এমন কি কথা আছে ? দোষের অন্তকরণ সৰ্ব্বথা পরিহার্য্য। একটু সাবধান হইয়া চলিলে এই সকল সামান্য দোষ আমরা পূৰ্ব্ব হইতেই পরিহার করিতে পারি । র্যাহারা এ পর্য্যস্ত বাঙ্গালায় পারিভাষিক শব্দের অনুবাদ করিয়াছেন, তাহার এইরূপ সাবধান হওয়া আবশ্বক বোধ করেন নাই। নতুব| oxygen বাঙ্গালায় অম্লজান হইত না। Carbon dioxideএর বাঙ্গালায় দ্ব্যয়জনিত অঙ্গার মধুর নহে ; উহাতে অন্য দোষও রহিয়াছে। বৰ্ত্তমান প্রথা অনুসারে ঐ দ্রব্যের নাম carbonic anhydride ; ইংরেজী বহিতে একাধিক নাম আজিও দেখা যায় , বাঙ্গালায় তাহ থাকিবে কেন ? পাশ্চাত্য রসায়ন-গ্রন্থে নামকরণ সম্বন্ধে যে প্রথা সৰ্ব্বাপেক্ষা আধুনিক ও প্রণালীবদ্ধ ও যুক্তিযুক্ত, আমরা তাহাই অবলম্বন করিয়া বাঙ্গাল অনুবাদ করিতে প্রবৃত্ত হইব । যে সকল ইংরেজী নাম কেবল প্রাচীনতার বলে ইংরেজী পুস্তকে অদ্যাপি ব্যবহৃত হইয়৷ থাকে, তাহাদের একেবারে লর্জন করিব। নিদিষ্ট পারিভাষিক অর্থে একাধিক শব্দ থাকা উচিত নহে ; এই নিয়মে দৃষ্টি রাখিয়া চলিতে হইবে। ভিন্ন ভিন্ন দেশ ও ভিন্ন ভিন্ন জাতির মধ্যে বিজ্ঞানের ভাষা ভিন্ন ভিন্ন থাকা কদাপি বাঞ্ছনীয় নহে, তাহা পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি। ভাষার ভেদ বিজ্ঞানের উন্নতির অন্তরায় হয় মাত্র। তবে দুর্ভাগ্যক্রমে বিভিন্ন দেশে প্রচলিত ভাসা বিভিন্ন, কাজেষ্ট স্বজাতির মুখ চাহিয়া জাতীয় ভাষায় বিজ্ঞানের গ্রন্থ লিখিতে হয়। ইহাতে বিভিন্ন জাতির মধ্যে জ্ঞানের আদান-প্রদানকার্য্যে ব্যাঘাত ঘটে। কিছু কাল পূর্বে ইউবোপে প্রসিদ্ধ গ্রন্থসকল লাটিন ভাষায় লিখিত হওয়া নিয়ম ছিল। নিউটনের প্রিন্সিপিয়া লাটিনে লিখিত হইয়াছিল। অদ্যাপি উদ্ভিদবিদ্যা-বিষয়ক অনেক গ্রন্থ লাটিনে লিখিত হইয়া থাকে। সার জোসেফ হুকার সাহেবের ভারতবর্ষের উদ্ভিদ-বিষয়ক বিখ্যাত গ্রন্থ লাটিনে লিখিত হইয়াছে। গ্রন্থের ভাষা ভিন্ন হইলেও গ্রন্থে ব্যবহৃত পারিভাষিক নামগুলি অন্ততঃ বিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন হওয়া উচিত নহে। স্বতরাং রসায়ন-শাস্ত্রের পারিভাষিক নামগুলি একেবারে সশরীরে আমাদের ভাষায় গ্রহণ করিবার পক্ষে প্রবল যুক্তি আছে। ইংরেজী নামগুলি অনুবাদের চেষ্ট না করিয়া কেবল বাঙ্গালা হরপে বসান উচিত, জোরের সহিত অনেকে এই বলিয়া থাকেন । রসায়ন-শাস্ত্রে প্রায় সত্তরটি মূল পদার্থের সত্তরটি নাম রহিয়াছে ; তাহ ব্যতীত সেই সত্তরটি পদার্থের ভিন্ন ভিন্ন ভাগের সমবায়ে উৎপন্ন শত সহস্ৰ যৌগিক পদার্থের শত সহস্ৰ পারিভাষিক নাম রহিয়াছে। এই শত সহস্ৰ নাম বাঙ্গালায় অনুবাদের চেষ্টা করিয়া খাট বাঙ্গালী বা সংস্কৃতমূলক বাঙ্গালা নাম প্রচলনের চেষ্টা বিড়ম্বনা। একে এইরূপ অনুবাদ সম্ভবপর নহে; দ্বিতীয়তঃ সম্ভবপর হইলেও তাহাতে কোল কশোঙ্গেী