পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যন্ত্রবদ্ধ শিক্ষাপ্রণালী e >(社 •স্বার্থ একেবারে অভিন্ন । - বহু সহস্ৰ বৎসর ধরিয়া সমস্ত দেশের মধ্যে এই শিক্ষাপ্রণালী চলিয়া আসিতেছে, এবং এই প্রণালীর কল্যাণে এ পর্য্যন্ত দেশের যাবতীয় অভাব পূর্ণ হইয়া আসিয়াছে। আধুনিক পাশ্চাত্য প্রণালীর সহিত ইহা প্রতিযোগিতা করিতে পারে না ও পরিবে না, তাহ৷ সত্য কথা ; কিন্তু তাই বলিয়া এই প্রণালীকে অবজ্ঞা করিলে চলিবে না। সে দিন পর্য্যন্ত এই শিক্ষাপ্রণালী বিশ কোটি লোকের বক্স যোগাইয়াছে ; এখন পর্যন্ত এই প্রণালীই ত্রিশ কোটি লোকের অন্ন যোগাইতেছে। যাহারা হিন্দু সমাজের জাতিভেদ উঠাইবার জন্য কোমর বাধিয়াছেন, তাহাদিগকে এই কথাটা বিবেচনা করিতে অনুরোধ করি। বিদেশের প্রতিযোগিতায় তাতীর ব্যবসায় গিয়াছে বা যাইতেছে ; কিন্তু কামার, কুমার, ছুতারের ব্যবসায় আজিও উঠে নাই। কামার, কুমার, ছুতারের বিদ্যা এ-কালের প্রণালীমতে অথচ সহজে ও সস্তায় শিখাইবার ব্যবস্থা যত দিন না হইতেছে, তত দিন জাতিভেদের সহিত লড়াই করিলে ফল পাওয়া যাইবে কি ? অথচ দেশের মধ্যে এই যে পুরাতন শিক্ষাপ্রণালী বর্তমান আছে, ইহাকে যন্ত্রবদ্ধ প্রণালী বলা যায় না। এই দেশজোড় শিল্পশিক্ষার উন্নতির জন্য কোথাও কোন একটা সমিতি নাই, কেহ ইহার আয়-ব্যয়ের হিসাব করে না, কেহ ইহার বার্ষিক রিপোর্ট প্রস্তুত করে না, ইহার সম্পর্কে ডাকঘরের এক পয়সা আয় বৃদ্ধি হয় না ; ছাপাখানা হইতে কেহ একখানা বিল পাঠায় না। কোন ব্যক্তি কোন তারিখে এই শিক্ষাপ্রণালীর উদ্ভাবন করিয়াছে, কোন প্রত্নতত্ত্ববিৎ তাহ নির্দেশ করিতে পারেন না, অথচ এই প্রণালী সমস্ত দেশ জুড়িয়া আপন হইতে চলিয়াছে। সমস্ত ভারতবর্ষের জমিতে যেমন যথাসময়ে ঘাস গজায়, কেহ তাহার জন্য পূৰ্ব্ব হইতে আয়োজন করে না, সেইরূপ ভারতবর্ষ জুড়িয়া কামার, কুমার, ছুতারের যথাকালে উৎপত্তি হইতেছে। কস্মিন কালে তাহার অভাব বোধ হয় নাই। ইহাকে যন্ত্র বলা চলে না। যন্ত্রের মধ্যে অতি নিষ্কৃষ্ট যন্ত্র কলুর ঘানিও ঘূরিবার সময় কট, কট, ধ্বনি করে ; কিন্তু এই শিক্ষাপ্রণালী নিঃশব্দে চলিয়া আসিতেছে। আর একটা গুরু গম্ভীর দৃষ্টান্ত দিয়া প্রবন্ধ শেষ করিব। এবার শিল্পশিক্ষার দৃষ্টান্ত নহে ; এবার খাটি বিদ্যাশিক্ষার দৃষ্টান্ত ; যে বিদ্যার সঙ্গে বিশ্বকৰ্ম্মার সম্পর্ক আছে কি না, জানি না ; কিন্তু যাহার সহিত মা সরস্বতীর সম্পর্ক আছে। আধুনিক প্রণালী-সম্মত বিদ্যাশিক্ষার যন্ত্রের নাম ইস্কুল বা কালেজ ; এখন গ্রামে গ্রামে ইস্কুল ও নগরে নগরে কালেজ প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে ও হইতেছে। এক একটি ইস্কুল বা কালেজ এক একটি যন্ত্র। অথবা সমুদয় ইস্কুলগুলি বা কালেজগুলি লইয়া একটা “বিরাট যন্ত্র”—যে যন্ত্র চালাইতেছেন বিশ্ববিদ্যালয় বা স্বয়ং গবর্মেন্ট । এক একটা ইস্কুল কালেজকে ঐ বিরাট যন্ত্রের এক একখানা চাকা মনে করিলেও করিতে পারি। হাল আইনে একটা নৃতন কলেজ খুলিতে হইলেই উদ্যোগকারীকে কিছু অর্থ—যাহার পরিমাণ নিতান্ত অল্প নহে–লইয়া বসিতে হয়। একখানা পাকা বাড়ী চাই—তাহার এতগুলা কুঠরি দরকার—প্রত্যেক কুঠরি দীর্ঘ এত, প্রস্থ এত, খাড়াই এত—তাহাতে প্রত্যেক ছাত্রের জন্য এত ঘনফুট হাওয়া আবশ্বক ఫ్ట్, চাই । SSಘೀ"