পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/১৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চরিত-কথা ; ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ›፭© অধিকাংশই নীরবে সম্পাদিত হয়। কিন্তু এই মরাল কারেজটা এ দেশে নুতন আমদানি এক অপূৰ্ব্ব জিনিষ। আরও দুঃখের বিষয় যে, একালের শিক্ষার সহিত এই মরাল কারেজের কি একটা সম্বন্ধ দাড়াইয়া গিয়াছে। লোকের বয়োবৃদ্ধিসহকারে সংসারের হাইড্রলিক প্রেসের চাপ পড়িয়া ইহা অনেকটা সঙ্কুচিত ও শীর্ণ হইয়া পড়ে ; কিন্তু শিক্ষানবিস বালকগণের নৈতিক সাহসের আক্রমণটা নিরীহ পিতামাতার উপর দিয়া, নিরীহুতর প্রতিবেশীর উপর দিয়া ও নিৰীহতম মাষ্টার মহাশয়ের উপর দিয়াই নিক্ষিপ্ত হয়। বলা বাহুল্য, বিদ্যাসাগর এই মরাল কারেজের প্রতি বিশেষ রাজি ছিলেন না। স্বাধীন আত্মাকেও কোন স্থানে স্বতঃপ্রবৃত্ত হইয়া পরাধীনতা স্বীকার করিতে হয়, তাহা তিনি জানিতেন। নিজের বুদ্ধি এবং নিজের প্রবৃত্তির মুখে বল্ল। লাগাইয়। কোথায় তাহাদিগকে নিয়মিত রাখিতে হয়, তাহ। তিনি বুঝিতেন। স্বর্গের দেবতায় তাহারু কিরূপ আস্থা ছিল, জানি না , কিন্তু স্বর্গাদপি গরীয়ান জীবন্ত দেবের তুষ্টির জন্য সময়বিশেষে আপনার ধৰ্ম্মবুদ্ধিকে পর্য্যস্ত বলিদান দেওয়ার প্রয়োজন হইতে পারে, তাহা তিনি স্বীকার করিতেন। র্তাহার ন্যায় স্বতন্ত্র পুরুষ বঙ্গদেশে তখন ছিল না। কিন্তু মানবজীবনে এমন সময় আসিতে পারে, যখন সেই মুক্ত বায়ুমার্গে বিহারপ্রয়াসী স্বাতন্ত্র্যকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করিয়া রাখিতে হয় ; ইহা তিনি মানিতেন। সেই শৃঙ্খলকে কপটাচারের আয়স নিগড় মনে করিবার প্রয়োজন নাই। উহ। প্রেমের শৃঙ্খল ও ভক্তির শৃঙ্খল ;–মন্তয্যের প্রতি মন্থয্যের যে প্রেমের বন্ধন প্রকৃতি আপন হাতে নিৰ্ম্মাণ করিয়া রাখিয়াছে, যে ভক্তির বন্ধন ব্যক্তিনিহিত ক্ষুদ্র জীবনকে সমাজরূপী বিরাটুপুরুষের ঐতিহাসিক জীবনের অভ্যস্তরে আবদ্ধ রাখিয়াছে। এই প্রেমের শিকল ও ভক্তির শিকল গলায় পরিয়া মল্লযু-জীবন ধন্য ও কৃতাৰ্থ হয় ; “মণিমুক্তার মোহন মালা” ইহার নিকট স্থান পায় না। ঈশ্বরচন্দ্রের হৃদয় লইয়া আমরা সকলেই কিছু ধরাতলে অবতীর্ণ হই নাই । বালবিধবার অশ্রুজল আমাদের পাষাণ-হৃদয়ে রেখাঙ্কন করে না ; তাই আমরা ভণ্ড ব্রহ্মচৰ্য্যার মলিন পাংশুবিক্ষেপে সেই অশ্রজল মুছিতে যাই। ঈশ্বরচন্দ্রের বীরত্ব বিধবার দুঃখমোচনে সমর্থ হয় নাই। দেশাচারের জয়লাভ ঘটিয়াছে সত্য কথা, কিন্তু ইহাই বিধিলিপি, ইহাই প্রকৃতির নির্বন্ধ। স্বাভাবিক, সরল, ছদ্মবেশহীন মচুন্যত্ব ইহাতে ম্ৰিয়মাণ হইবে, সন্দেহ নাই, কিন্তু দুঃখপ্রকাশ নিষ্ফল ;–কেন না, ইহা বিধিলিপি। এই দেশাচারগুলির সম্বন্ধে আমার কিছু বক্তব্য আছে। আমাদের মধ্যে যাহাদের বিশ্বাস যে, প্রাচীন কালে এক দিন জন-কয়েক ব্রাহ্মণ পরামর্শ করিয়া লাভের প্রত্যাশায় এই জঘন্য দেশাচার-সকলের ব্যবস্থা করিয়াছেন, এবং জনসমাজ ভয়ে হউক বা নিবুদ্ধিতায় হউক, সেই সকল ব্যবস্থা নিব্বিবাদে গ্রহণ করিয়াছে, তাহাদের সহিত আমি একমত নহি । ব্যক্তিবিশেষের বা শ্রেণীবিশেষের চেষ্টায় সমাজের ধারাবাহিক জীবন যে এইরূপে বিপৰ্যন্ত হইতে পারে,_ তাহা বিশ্বাস করিতে পারি না। আজকাল মৃত্ন পীরের ثالإجسـift