পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/১৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চরিত-কথা : ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর 〉。ゅ চেষ্টা করিয়াছেন, তাহার বোধ হয়, এই অভাবের ও অস্তুবিধার বিশেষ ভূক্তভোগী। এরূপ স্থলে বিদ্যাসাগরের মত মহাশয়গণের স্পশে যিনি কখন আসিবার স্থবিধা পাইয়াছেন, যিনি কোন-না-কোন স্থত্রে তাহার চবিত্রের কোন একটা দোষ দেখিতে পাইয়াছেন, তৎসমস্ত সাধারণের নিকট ব্যক্ত কবা তাহাদেব পক্ষে কর্তব্য। এই কৰ্ত্তব্যের অনুরোধে আমার যাহা কিছু বলিবার আছে, ব্যক্তিগত হইলেও তাহ বলিতে সাহসী হইতেছি। বঙ্গদেশের মধ্যে ছোট বড এমন ব্যক্তি অল্পই আছেন, যিনি কোন-না-কোন প্রকারে বিদ্যাসাগরের নিকট ঋণগ্রস্ত নহেন। দূর মফস্বলের পল্লীগ্রামের মধ্যেও তাহার প্রভাব কতদূর্ব বিস্তার লাভ করিয়াছিল, তাহ চিন্তার অগোচব । মহাকবির বাক্যে আছে যদধ্যাসিতমৰ্হদ্ভিস্তদ্ধি তীৰ্থং প্রচক্ষতে। মহতেব আসনভূমি তীর্থস্বরূপ । বঙ্গদেশেব পল্লীতে পল্লীতে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা যে সময়ে বিদ্যাসাগবের কৰ্ম্মবহুল জীবনের অন্যতম ব্যবসায় ছিল, সেই সময়ে, আমার পিতামহেব ক্ষুদ্র কুটার এক দিন বিদ্যাসাগরেব পাদস্পর্শ তীর্থস্থলে পরিণত হইয়াছিল। শৈশবকালে সেই গৌরবান্বিত দিবসেব প্রসঙ্গক্রমে বিদ্যাসাগর সম্বন্ধে নানা কথা অন্তঃপুববাসিনীগণের মুখেও শুনিতে পাইতাম। পাঠশালায় প্রবেশলাভেব পব বর্ণপরিচয় প্রথম ভাগ, দ্বিতীয ভাগ, কথামালা, আখ্যানমগ্নবী প্রভৃতি পুস্তকপবম্পবাব শুভ্ৰ মলাটেব উপব একই নাম অঙ্কিত দেখিয় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগবেব সহিত পাঠশালা ও লেখাপড ও ছাপাব বহি ও পণ্ডিত মহাশয়েব বেত্ৰদণ্ডেব কিরূপ একটা অনিৰ্ব্বচনীয় সম্বন্ধ কল্পনায় স্থিব করিয়া লইয়াছিলাম। বিদ্যাসাগরের আকৃতি ও পবিচ্ছদ ও কার্য্যাবলী সম্বন্ধে যে সকল গল্প শুনিতাম, তৎসমুদয় সেই কল্পনাব সহিত বিজডিত কবিয়া অন্তঃকবণ একটা বিদ্যাসাগরযুক্তি গডিয়া ফেলিয়াছিল। বটতলার পুস্তকের বোঝা মাথায় করিয়া চটিজুতাধারী রুক্ষবেশ পরুষমূৰ্ত্তি এক ব্যক্তি আমাদের পল্লীগ্রামে মাঝে মাঝে দেখা দিত। শ্রোতৃগণ মার্জন কবিবেন, সেই লোকটাই যে নিশ্চিত বিদ্যাসাগর, এই ধাবণ হইতে অব্যাহতি পাইতে আমাকে উত্তরকালে অনেক প্রয়াস পাইতে হইয়াছিল। আমাব মনস্তত্তবিং বন্ধুগণের উপর এই বিষম সমস্যার মীমাংসার ভার থাকিল। ১২৮৮ সালের ২১ শে মাঘ তারিখে আমি কলিকাতা শহরে আসি ; এবং ২৩শে তাবিখে তীর্থযাত্রীর আগ্রহেব সহিত পিতৃব্যদেবের সমভিব্যাহাবে চিরাকাঙ্ক্ষিত বিদ্যাসাগরদর্শনলালসা তৃপ্ত করিয়া জীবন ধন্য করি। শৈশব কালের কাল্পনিক বিদ্যাসাগরের সহিত প্রকৃত বিদ্যাসাগবের সাদৃশ্ব দেখিয়াছিলাম কি না, সে কথা উত্থাপনেব প্রয়োজন নাই। কিন্তু সেই দিবস তাহার মুখ হইতে যে কয়েকটি বাক্য শুনিতে পাইয়াছিলাম, আজি পৰ্য্যন্ত তাহ আমার কর্ণবিবরে ধবনিত হইতেছে। আশা করি, সেই উদার প্রশস্ত স্নেহপূর্ণ হৃদয় হইতে নিহত হইয়া সেই পবিচিত কণ্ঠস্বর বঙ্গেব ষে সকল পুত্রকন্যার শ্রবণপথে প্রবেশ লাভ করিয়া হৃদয়ের ভিত্তিমূলে আঘাত দিয়াছে, তাহারা চিরদিন সেই কণ্ঠস্বরের স্মৃতিকতৃক প্রেরিত হইয়া সংসারের কৰ্ম্মক্ষেত্রে বিচরণ করিবেন। সেই প্রাচ্য মচুন্যত্বের আদর্শ র্তাহাদের জীবনকে যুগপৎ প্রণোদিত ও সংযমিত রাখিবে। আমাদের এই ছুদিনেও যদি মহন্তত্বের