পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3 Σ 8 রামেশ্রদের রচনাসমগ্র প্রতিষ্ঠাতা। কিরূপে একটি বিশুদ্ধ স্বরের সহকারে তাহার উৰ্দ্ধতনগ্রামবৰ্ত্তী স্বরাবলী সমবেত ও জড়িত হইয়া ঐ মূল স্বরটিকে বিবিধ নাদে ধ্বনিত করে ; কখন স্বরের সহিত স্বরের মিল ঘটিয়া প্রীতি জন্মে, কখন মিলের অভাবে প্রীতির ব্যাঘাত হয় ; নরকণ্ঠনিঃস্থত বিবিধ স্বরকে বিশ্লিষ্ট করিয়া কি কি মৌলিক সুর বাহির করা যায়, কিরূপে যন্ত্রোদগত কতিপয় মৌলিক স্বরকে সংশ্লিষ্ট করিয়৷ বিভিন্ন নরকণ্ঠাগত স্বরে উৎপাদন করিতে পার যায় , ইত্যাদি নানা কথা এবং এই সকল শবদধ্যাপারের সময়ে শব্বসঞ্চালক বায়ুমধ্যে ৪ শব্দোংপাদক কঠিন দ্রব্যে কিরূপ আণবিক গতি স“ঘটিত হয়, হেলম্ হোলৎজের শব্দবিজ্ঞান সংক্রান্ত মহাগ্রন্থ প্রচারের পূর্বে এ সমৃদয়ই আঁধারে ছিল। শ্রবণেন্দ্রিয়ের সংগঠনপ্রণালী, এবং কিরূপে বায়ুসঞ্চারী উৰ্ম্মিগুলি শ্রবণেন্দ্রিয়ের কোন অঙ্গে কিরূপে প্রতিহত হইয়া কিরূপ কাণ্ড ঘটাইয়া দেয় ; এ সমুদয় তত্বের সূক্ষ্ম বিচার পূৰ্ব্বে ছিল না । স্বববিজ্ঞান ও সঙ্গীতবিজ্ঞানের সহকারে যে যে মনোবিজ্ঞানঘটিত গভীর সমস্ত আপনা হইতে উপস্থিত হয়, হেলমহোলৎজের পূৰ্ব্বে কে তাহার মীমাংসায় সাহসী হইত ? 鰻 শব্দবিজ্ঞানের পর দৃষ্টিবিজ্ঞান। হেলমহোলৎজের আবিষ্কৃত দৃষ্টিবিজ্ঞানঘটিত তথ্যগুলির মাহাত্ম্যের উপলব্ধি করাই কঠিন। তাহার আবিষ্কৃত চক্ষুরাক্ষণ (opthalmoscope) যন্ধের উল্লেখ বোধ করি অনাবশ্যক। চক্ষুর অভ্যন্তর পরীক্ষার জন্য আজকাল এই যন্থ ডাক্তারদের এক মাএ অবলম্বন । দৃষ্টি সম্বন্ধে অনেক বহস্য, যাহা সৰ্ব্বদা আমাদের জ্ঞানের ভিতর আইসে না, তাহা হেলমহোলংজ প্রথমে দেখাইয় দেন। রেটিন নামক স্বায়বিক পদার গঠন কিরূপ, চোখের পবকলার কোথায় কতটা বক্রতা, দর্শনেন্দ্রিয়ের গঠনে কি কি নানাবিধ সাধারণ ও অসাধারণ দোষ বৰ্ত্তমান রহিয়াছে, দূরদৃষ্টির ও নিকটদুষ্টির সময়ে কিরূপে দর্শনেদিয়ের বিভিন্ন অংশ ঘুরাইতে ফেরাইতে হয়, কিরূপে বিভিন্ন পদার্থের দূরত্বের উপলব্ধি হয়, কিরূপে দ্রব্য মাত্রকে দৈৰ্ঘ্য, বিস্তার, বেধ, তিনগুণবিশিষ্ট বলিয়। বোধ জন্মে ; বর্ণের উজ্জলতায় কিরূপে ছোট জিনিষকে বড দেখায় ; কিরূপে তিনটি মাত্র মূল বর্ণের বোধ স্বীকার করিয়া লইলে সেই তিনটি মৌলিক অন্তভুক্তিরই বিবিধ বিধানে সংমিশ্রণদ্বারা অসংখ্য বিচিত্র বর্ণজ্ঞানের উৎপত্তি বুঝান যাইতে পারে , কিরূপে হঁহারই মধ্যে একটি মৌলিক বোধের অভাব ঘটিলে মানুষে রঙ কাণ হইয়া যায়, দৃষ্টিগোচর দ্রব্য মাত্রেরই কোন অংশটা বস্তুতঃ আমাদের ইন্দ্রিয়গোচর, আর কোন অংশটাই বা মানসগোচর মাত্র, অর্থাৎ একটা বস্তুর কতটা আমার বাস্তবিক দেখিতে পাই, আর কতটাই ব| মনে মনে কল্পনা দ্বারা গড়িয়া লই , ইত্যাদি বিবিধ বিষয়ে হেলমহোলৎজ যে সকল রহস্তের উদঘাটন করিয়াছেন, তাহার নামোল্লেখ মাত্র দ্বার বিবরণ দেওয়াই অসম্ভব । অতি প্রাচীন কাল হইতে শুনিয়া আসিতেছি, ইন্দ্রিয়গণ জ্ঞানের দ্বারস্বরূপ । কিন্তু জ্ঞান কিরূপে বাহির হইতে এই দ্বারপথে প্রবেশ লাভ করে, তাহার সম্বন্ধে আমাদের পরিচয় এ পর্য্যন্ত নিতান্ত সঙ্কীর্ণ ও পরিমিত ছিল। বাহিরে জড় প্রকৃতিতে নানাবিধ আনাগোনা আন্দোলনের তরঙ্গ উঠিয়েছে ; ইন্দ্রিয়গণ সেই সকলের বাৰ্ত্তা, কোনও মতে মস্তিষ্কের হেড আপিসে পৌছাইয়া দেয়, এবং আমাদের অন্তঃকরণ সেই সঙ্কেতগুলি বাছিয়া গোছাইয়া সাজাইয়া নানাবিধ প্রণালীতে গঠন প্রস্তুত করে, কতক