পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

KV o রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র ঈশ্বরবাদ সগুণ অথচ বচনাতীত, অতুভবগম্য অথচ অনির্দেশু, ঈশ্বর নামক স্বষ্টিকৰ্ত্তার কল্পনা করিয়া সেই অনিৰ্ব্বচনীয় হেতুর স্থান পূরণ করে। উমেশচন্দ্র অন্ততঃ শেষ বয়সে সাংখ্য-মত হইতে কিঞ্চিৎ দূরে গিয়া এই শেষোক্ত ঈশ্বরবাদের অঙ্গীকার করিয়াছিলেন। বৈদান্তিক “সেহিহ” বাদটিই কিন্তু বিজ্ঞানদৃষ্টিতে সমীচীন বলিয়া বোধ হয় । পঠদ্দশায় ইংরেজী শিক্ষার হাওয়ায় উমেশচন্দ্র পৌত্তলিকতার প্রতি ও হিন্দুর প্রচলিত উপাসনাপদ্ধতির প্রতি আস্থা হারাষ্টয়াছিলেন । কিন্তু এই অনাস্থা কখনও তাহকে শাস্ত্রবিরোধী আচারে প্রবত্তিত করিয়াছিল, বোধ হয় না । তাহার কোন বন্ধুর মুখে শুনিয়াছি, এককালে ঈশ্বর ও পরকালে. বিশ্বাসও তিনি ত্যাগ করিয়াছিলেন। শেষ পৰ্য্যন্ত র্তাহার মত অনেকটা পরিবর্তিত হইয়াছিল, সন্দেহ নাই। উপরেই বলিয়াছি, সাংখ্যদর্শনোক্ত প্রকৃতি-পুব ষের সম্মিলনের অনিদেশু কারণের স্থলে তিনি ঈশ্বর স্থাপন করিয়াছিলেন । ঈশ্বর অর্থে তাহার fTS SfT# "An Intelligent being to whose intelligent action the present form and arrangement of that world of matter and the connection between human souls and the world are owing." এই ঈশ্বর কিন্তু অমঙ্গলের স্বষ্টিকৰ্ত্ত নহেন, তিনি অমঙ্গল হইতে মল্লযুকে উদ্ধার করেন। এই অমঙ্গল আবার জগৎ প্রকৃতির অংশ মাত্র । তাহার স্বভাষায় “Evil is a part of nature and the energy of God is directed to the purging of our nature from evil and to the raising of us to a higher state.” এই মতের সহিত র্তাহার সাংখ্যমতের সামঞ্জস্য ঠিক বুঝা গেল ন । অন্যান্য পণ্ডিতের ন্যায় তিনি বেদের বহুদেব-বাদের মধ্যে একেশ্বরবাদের আবিষ্কারের চেষ্টা করিয়াছিলেন। র্তাহার বৈদিক প্রবন্ধাবলীর মধ্যে ইহার প্রমাণ আছে। বৈদিক কালের উপাস্য দেবতার তত্ত্ব নির্ণয়ে নান মতভেদ প্রচলিত আছে। কোন মত সমীচীন, তাহ জানি না । অস্তত:, জৈমিনি-প্রমূখ যে মীমাংসক সম্প্রদায় বেদের অপৌরুষেয়ত স্বীকার করিয়া বেদের প্রভূত্ব হিন্দু জাতির সমাজতন্ত্রের মূলে স্থাপন কবিয়াছিলেন, এবং শ্রেীত ও স্মাৰ্ত্ত আচারের ব্যবস্থাপনে র্যাহাদের নির্দেশ সমস্ত হিন্দুসমাজ শিরোধার্য্য করিয়া আসিতেছে, তাহার। প্রচলিত অর্থে ঈশ্বরের অস্তিত্বষ্ট স্বীকাব করিতেন না, এরূপও শুনিতে পাওয়া ষায় । দুরূহ দার্শনিক তত্ত্বের মীমাংসায় বিভিন্ন ব্যক্তি বিভিন্ন সিদ্ধান্তে উপস্থিত হইবেন, স্পষ্টই বুঝিতে পারা যায়। কিন্তু সামাজিক ধৰ্ম্ম সম্বন্ধে আধুনিক হিন্দুর কোন পন্থ অবলম্বনীয়, এ সম্বন্ধে উমেশচন্দ্র বটব্যালের মতে কোনরূপ অস্পষ্টত ছিল না। প্রথম বয়সে "পৌত্তলিকতা" সম্বন্ধে তাহার মত যাহাই থাক, জীবনের শেষ ভাগে তিনি যন্ত্রযোগে উপাসনার সমর্থন করিতেন, এবং যন্ত্রযোগে উপাসনা ও স্তুতি মাত্র বা ধ্যান মাত্র অবলম্বনে উপাসনার মধ্যে কোন প্রকৃতিগত পার্থক্য স্বীকার করিতেন না। র্তাহার অপ্রকাশিত রচনামধ্যে ইহার স্পষ্ট উল্লেখ দেখিলাম। সমাজধৰ্ম্ম পালনে তিনি চাতুৰ্বর্ণ্যের উপর প্রতিষ্ঠিত বেদমূলক ধৰ্ম্মশাস্ত্রামমোদিত