পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

პ ®«ჯ রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র ঘোষণা করিতে হইবে, ইহা আমি মনে করি নাই। চারি বৎসর পূর্বে যখন আমি পীড়িত হইয়া পরিষদের কৰ্ম্মভার ত্যাগ করিয়াছিলাম, তখন বরং ইহার বিপরীতই আমার মনে ছিল। যাহা মনে করি নাই, তাহা কাজে করিতে হইল, ইহা নিয়তি । নিয়তির জয় হউক । সাহিত্য-পরিষৎ আর ব্যোমকেশ যে অভিন্ন ছিল, তাহা আপনাদিগকে জানাইয়া দিতে হইবে না। যাহা অভিন্ন থাকে, তাহাও ভিন্ন হয়। সৰ্ব্বশক্তিমানের ইহা খেলা, ইহার উদ্দেশু আমব বুঝি না। সাহিত্য-পরিষদে বোমকেশ আপনাকে মিশাইয়া দিয়াছিল, সাহিত্য-পবিষদে আপনাকে উংসর্গ করিয়াছিল,—আপনাকে অর্পণ করিয়াছিল। জীবন অর্পণের কথা, জীবন উৎসর্গের কথা পুথিতে পড়িয়াছি, বক্তৃতামুখে শুনিয়াছি, কিন্তু কাৰ্য্যতঃ অধিক দেখি নাই । ব্যোমকেশ তাহ দেখাইয়া গিয়াছে। আমিও দেখিয়াছি, আপনারাও দেখিয়াছেন—ইহার প্রমাণ প্রয়োগ অনাবশ্যক । স্থতিকাগৃহে যাহারা পরিষদের ধাত্রীর কাজ করিয়াছিলেন, র্তাহাদের কেহ কেহ আজ উপস্থিত আছেন। ব্যোমকেশ তাঁহাদের মধ্যে ছিল না। প্রথম দুই বৎসর ব্যোমকেশকে পরিষদে দেখিয়াiছলাম কি না, তাহ আমার মনে নাই। পরিষৎ সেই শৈশব কালে হামাগুড়ি দিতেছিলেন, তখনও পরিষদের মুখ ফোটে নাই, পরিষৎ তখন আধ আধ ভাষায় কথা কহতেছিলেন মাত্র। কি বলিবেন, কি করবেন, তাহাও স্থির ছিল না। ব্যোমকেশ তখন পরিষদে প্রবেশ করিয়া থাকলেও আমার সহিত তাহার পরিচয় ছিল না । পরিষদের তৃতীয় বর্ষে এক দিন 'কুষ্ণরামের রায়মঙ্গল’ নামে একটি প্রবন্ধ পঠিত হইল। প্রবন্ধপাঠক ছিলেন ব্যোমকেশ মুস্তফা। প্রবন্ধটি আমি অবহিত হইয়া শুনিয়াiছলাম। প্রবন্ধ শুনিয়াই আমার বোধ হইল, পরিষদের এইবার কথা ফুটিয়াছে ; পরিষদের এইবার কাজ জুটিয়াছে। বাঙ্গালার প্রাচীন লুপ্ত সাহিত্যের উদ্ধার করিতে হইবে,—ইহা পরিষদের একটা প্রধান কাজ। কাহারও কাহারও মনে এই কথাটা অস্পষ্টভাবে জাগিতেছিল ; ব্যোমকেশ মুস্তফীর প্রবন্ধ তাহা স্পষ্ট করিয়া জাগাইয়া দিল। আমি বুঝিলাম, পারষদের কাজ জুটিয়াছে, একজন কৰ্ম্মীও জুটিয়াছে। পরিষদের ষষ্ঠ বৎসরে ব্যোমকেশ সহকারী সম্পাদকের কৰ্ম্মে নিযুক্ত হন ; সেই বৎসরই পরিষৎ-পত্রিকা’ সম্পাদনের ভার আমার উপর পড়ে। সেই অবধি তাহার সহিত আমার পরিচয় ঘনীভূত হয়। পাচ বৎসর কাল পত্রিকা সম্পাদনের পর আমি পরিষদের সম্পাদকের কৰ্ম্মভার পাইয়াছিলাম ; সেই সূত্রে ব্যোমকেশের চরিত্রের অন্তস্কলটা পৰ্য্যস্ত আমি দেখিতে পাইয়াছিলাম । আমার যতটা সুযোগ ঘটিয়াছিল, এতটা বোধ, করি, আর কাহারও ঘটে নাই। ব্যোমকেশের সমস্ত ভিতরটা আমি দেখিয়াছিলাম ; দেখিয়া মুগ্ধ হইয়াছিলাম, স্তব্ধ হইয়াছিলাম। একটি লোকের আমি সন্ধান পাইলাম, যে সাহিত্য-পরিষংকে ই৪দেবতাস্বরূপে গ্রহণ করিয়াছে। ষে ব্যক্তি, দিন নাই, রাত্রি মাই, সময় নাই, অসময় নাই—শয়নে ৰঙ্গনে জাগরণে অপবিত্র পবিত্র বা সৰ্ব্বাৰাং গতোহপি বা সাহিত্যপরিষদের