পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামেন্দ্রস্থদের রচনাসমগ্র আছে। ফলে, সাহিত্যব্যবসায়ীরূপে সাহিত্য-চৰ্চা করিলে, জীবনযুদ্ধে তাহার সফলতা হইতে পারত ; সাহিত্য-সেবিরূপে সাহিত্যচর্চা করিলে সাহিত্যের ইতিহাসে প্রচুর যশ থাকিতে পারিত ; কিন্তু কিছুই ঘটিল না। কোন কাজেই ব্যোমকেশের অবসর ঘটিল না। কেন না, ব্যোমকেশ অন্য দেবতার নিকট আত্মসমপণ করিয়াছিল। এই আত্মসমর্পণই যজ্ঞ । ছান্দোগ্য উপনিষদে উল্লেখ আছে, ঘোর আঙ্গিরস ঋষি দেবকীনন্দন ক্লষ্ণকে বলিতেছেন, মানুষের সমস্ত জীবনটাই যজ্ঞ । ব্যোমকেশ সেই যজ্ঞে যজমান হইতে পারে নাই ; যজ্ঞীয় পশুর মত আত্মদান করিয়া চলিয়া গিয়াছে। যজ্ঞার্থ সে স্বয়ম্ভ কর্তৃক স্বল্প হইয়াছিল ; যজ্ঞেই সে নিহত হইল। আপনার প্রার্থনা করুন, সাহিত্য-পরিষদের সভ্যগণ—আপনার প্রার্থনা করুন, তাহার রক্তপাতে সাহিত্য-পরিষদের বৃদ্ধি হইবে, তাহার আলস্তনে সাহিত্যপরিষদের নবজীবন লাভ হইবে । মনুষ্য থাকে না ; তাহার কৰ্ম্ম থাকিয়া যায়। ব্যোমকেশের কৰ্ম্ম অক্ষয় হইয়া সাহিত্য-পরিষদে বর্তমান থাকিবে । সাহিত্য-পরিষদ খাটি স্বদেশী জিনিষ নয়—ইহা বিলাতী জিনিসের অনুকরণে গঠিত। সাহিত্য-পরিষং একটা যন্ত্র , সৰ্ব্ববিধ সাহিত্যের উপকরণ ঘানিতে পীড়িয়া রস নিষ্কাশনের জন্য ইহার নির্মাণ হইয়াছে। বাঙ্গালা দেশের সমুদয় ধুরন্ধরদিগকে ইহার যুগবহনে নিযুক্ত করা হহয়াছে। ভারতবর্ষের লোক যন্ত্র চালাইতে অনভ্যস্ত ; যন্ত্রচালনা আমাদের ধাতুর সহিত মেলে না। ভারতবর্ষের লোক স্বচ্ছন্দ বনজাত শাকান্নে পরিতৃপ্ত হইতে চায় ;—বসুন্ধরা আপনা হইতে যাহা দেন, তাহতেই পরিতৃপ্ত থাকিতে চায়। ভারতবর্ষে আপনা হইতে যাহা জন্মে তাহাই থাকিয়া যায়, টিকিয়া যায়। ভারতবর্ষের সমাজে আপনা হইতে যাহার উৎপত্তি হয় ও বৃদ্ধি হয়, সামাজিকের তাহাই গ্রহণ করে ; তাহাই তাহাদের রক্তমাংসমজ্জার সহিত সম্পর্কযুক্ত হয়। অন্য দেশে বন্ধর এমন উৰ্ব্বর নহেন ; মানুষ সেখানে যন্ত্রপ্রয়োগে বস্কন্ধরার নিকট আদায় করিতে বাধ্য হয়। অন্য দেশের অতুকরণে আমরা সাহিত্য-পরিষদের যন্ত্র গড়িয়াছি—যন্ত্র দ্বারা কাজও পাইতেছি ; কিন্তু যন্ত্র প্রয়োগে অভ্যাস না থাকায় চাকায় মরিচা ধরিতেছে, সময়মত আমরা তেল যোগাইতে পারিতেছি না ; চাকার ঘরঘরানিতে কাজের অপেক্ষা কর্ণপীড়া অধিক হইতেছে। যন্ত্রের কাজ করিবার ক্ষমতা খুব বেশী ; পঞ্চাশটা ঘোড়ায় যে কাজ করে একটা ছোট যন্ত্রে তাহার চেয়ে অধিক কাজ করিতে পারে। কিন্তু তৃতীয় শ্রেণীর যানবাহী ঘোড়ার ভিতরে এমন একটা পদার্থ আছে, যাহা কোন যন্ত্রের ভিতরে নাই, সেই পদার্থ টার নাম প্রাণ । যন্ত্র সম্পূর্ণভাবে আমাদের বশে চলে ; চালক যখন যে দিকে চালাইতে ইচ্ছা করেন, যন্ত্র তখনই সেই দিকে চলে। কিন্তু নিতান্ত জীর্ণ শীর্ণ টাট, ঘোড়াকেও সৰ্ব্বদা ইচ্ছামত চালাইতে পারা যায় না,—সে সৰ্ব্বদা বাগ মানে না—সময়ে সময়ে বিদ্রোহী হয়। পরিষদ যন্ত্রের যানবাহী ব্যোমকেশ মুস্তফীর ভিতর এইরূপ একটা প্রাণ ছিল। ব্যোমকেশের সহিত র্যাহারা একত্র কাজ করিয়াছেন, তাহারা ক্ষহ জানে বোয়ু সৰ্বল ৰামধ্যে ধর দিতে চাহিত না। আপনারা