পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

፰ ጫሀ» রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র 喙 তিনি আমাদিগকে শিখাইতেছেন, কিরূপে উৎকট যৌগিক পদার্থকে বিশ্লেষণ দ্বারা তাহার অভ্যস্তরের প্রচ্ছন্ন মূল উপকরণগুলি বাহির করিতে পাবা যায়। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি কেবল কিমিয়া বিদ্যাব একচেটিয়া নহে। ঐতিহাসিকেরাও সেই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি আশ্রয় করিয়া আমাদের এই যৌগিক সমাজকে বিশ্লেষণ দ্বারা তাহার অন্তর্গত মূল উপাদানগুলি আবিষ্কাবে সমর্থ হইতে পাবেন। আমার বন্ধু শ্রযুক্ত হেমচন্দ্র দাসগুপ্ত, যিনি বঙ্গীয়- সাহিত্য-পরিষদের অন্যতম প্রতিনিধিস্বরূপে এই সভায় উপস্থিত আছেন, তিনি আমাদিগকে বুঝাইবেন, কিরূপে পদ্মা মহানদীর তীবদেশের মাটি খুডিয়া প্রচ্ছন্ন জীবাস্থিব বা উদ্ভিজ্জদেহের আবিষ্কার দ্বার। দেখান যাইতে পাবে, পদ্মাদেবী কিবপে এবং কত বৎসবে হিমালয়ের বুক চিরিয়া, হিমাদ্রি পাষাণকে এবীভূত করিয়া, সেই প্রবীভূত পাষাণেব স্তরের উপর স্তর গাথিয়া, এই সুজল৷ স্বফল বরেন্দ্রভূমিকে গড়িয়া তুলিয়াছেন। কোন ইতিহাসলেখক এই পদ্মাদেবীব এই বিচিত্র কাহিনী লিপিবদ্ধ করিয়া যান নাই, কিন্তু আমবি ভূতত্ত্ববিৎ বন্ধু পদ্মদেবীর কত লক্ষ বৎসবেব ইতিবৃত্ত এক নিশ্বাসে আপনাদিগকে শুনাইয়া দিতে কিছু মাত্র সংকোচ বোধ করিবেন না । সেইরূপ আমি বলিতে চাহি, আপনাদেব বর্তমান এই বরেন্দ্রসমাজেব অভ্যন্তবে প্রাচীন সাহিত্য, প্রাচীন ভাষা, প্রাচীন রীতি নীতি, আচাব, ব্যবহার, গ্রাম্য গীত ও লৌকিক বচন, উপকথা ও ব্ৰতকথা, ছেলেভুলান ছড়া ও দিদিমায়েব রূপকথামধ্যে যে সকল প্রাচীন নিদর্শনের ভগ্নাবশেষ প্রচ্ছন্নভাবে নিহিত আছে, তাহাব আবিষ্কাব দ্বার। শত শতাব্দ ধবিয বেব উপব স্মর গাথিয়। যে মানব-সমাজ গঠিত হইযাছে, তাহাব ধাবাবাহিক ইতিবুও সঙ্কলনেব আশা দুবাশী নহে । এই ইতিহাস সঙ্কলনে সাহায্য প্রার্থনা করিয। আমবা অতিথি ও ভিক্ষুককপে আপনাদেব দ্বারদেশে আজ আঘাত কবিতেছি । বঙ্গীয়-সাহিত্য-সম্মিলন যেথায, যে জেলায় উপস্থিত হইয়া গৃহস্থেব দ্বাবে করাঘাত কাবলে, তখন সেই দ্বাবে দাডাইয়। আমবা আমাদেব প্রার্থন জানাইব । সকলেব সমবেত চেষ্টায আমাদেব অর্থাৎ এই নবজীবনেব স্পন্দনে স্পন্দমান বাঙালী জাতব, জাতীয়তাব মূল উৎস আবিষ্কৃত হইবে ও ইহার মূল ভিত্তি প্রকাশিত হইবে। সেই উৎস হইতে ধাবাসেচনে ক্রমশঃ পুষ্টিলাভ করিয়৷ আমাদেব জাতীয়তা কলনদিনী স্রোতস্বর্তী ত বাঙ্গনী পদ্মাব প্রাবৃঢ়কালেব বিপুলকায় ধারণ কবিবে, সেই ভিত্তিব উপব দণ্ডায়মান হইয়া আমাদের জাতীয় ভাবের স্বরম্য হৰ্ম্ম্য গগনমূলে উঠিয়া আমাদিগকে আশ্ৰয দিবে। এক বৎসরে এই কাধ্য সম্পন্ন হইবে না। বঙ্গায়-সাহিত্য-সম্মিলন যদি শত বৎসব জীবিত থাকে, তবে সেই শতবৎসর পরে আমাদের প্রপৌত্রগণ এই রাজসাহী নগরে পুনবায় সম্মিলিত হষ্টয়া এই কাৰ্য্যের আংশিক সফলতা দেখিয়া আনন্দ লাভ কবিবেন । আমব সেই কার্য্যের আরম্ভ করিয়া যাইতে পারিলেই চবিতাৰ্থ হুইব এবং বঙ্গদেশেব সাহিত্যিক সমাজের মুখপাত্রস্বরূপ বঙ্গীয়-সাহিত্য-পরিষদেব পক্ষ হইতে আমরা যে কয় জন আপনাদের সাদর আহবানে উপস্থিত হইয়া, আপনাদের বোঝার উপর এই শাকের ষ্ঠাটি চাপাইতে বসিয়াছি, তাহারাও কৃতার্থম্মন্য হইবেন । ( বঙ্গীয় সাহিত্যস্বন্মিলনের কার্য্যবিবরণ, ২য় বর্ষ, ১৩১৫ ) । 瞬