বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

vరిvరిy রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র কিন্তু রাজার নাম পৰ্য্যন্ত জানিবার আগ্রহ দেখায় না । আবার এক রাজার হাত হইতে যখন রাজদণ্ড স্থলিত হইয়। অপরের হাতে যায়, তখন নিৰ্ব্বাকৃ নিস্পন্দভাবে চাহিয়া দেখে । ইউরোপের প্রজা শান্তির সময় রাজার প্রত্যেক কথাব ও প্রত্যেক কার্য্যের কৈফিয়ৎ না লইয়া চলে না, কিন্তু বিগ্রহের সময় ও বিপ্লবের সময় সে স্বয়ং রাজাব আসনে আসিয় দাড়ায় । কেন এমন হইল ? ইতিহাস কি এ কথার উত্তর দিতে সমর্থ নহে? কেবল দুষ্ট ব্রাহ্মণেব উপর দোষ চাপাইয়া দিলে প্রশ্নটার প্রতি স্নবিচার হইল বোধ হয় না। আবার অনেক স্ময়ে মনে হয়, এই প্রশ্নের কতকটা এইরূপ উত্তর দেওয়া ধাইতে পারে। — ইউরোপে ও ভারতবর্ষে এই পার্থক্যের প্রধান কারণ, ইউরোপে প্রজ। চিরকাল ধরিয়া স্বাধীন। উত্তরটা নিতান্তই হেঁয়ালি গোছের হইয়া পণ্ডিল । সাধাবণতঃ শুনা যায়, ইউরোপের প্রজা স্বাধীন ও ভাবতের প্রজাই চিবপরালীন । ইউবোপে, এক হিসাবে আবহমান কাল হইতে প্রজাতন্ত্র শাসন-নীতি চলিতেছে ; ভাবতে হিন্দু রাজার সময়েও রাজশক্তি যথেচ্ছাচার পদ্ধতিতে ক্রমে চালিত হইত। ইহাই ইতিহাসেব সৰ্ব্ববাদিসম্মত কথা। কিন্তু এই প্রচলিত মীমাংসার বিরুদ্ধে একটা কথা যখন বলিয়া ফেলিয়াছি, তখন তাহার সমর্থন আবশ্বক ; ভাষাশাস্ত্র ও যুক্তিশাস্ত্রকে টানিয়া বুনিয়া যেমন করিয়া হউক, সমর্থন করিতে হইবে। পরাধীন ও স্বাধীন শব দুষ্টট একটু বিশিষ্ট অর্থে প্রয়োগ করিয়াছি। আমি হিন্দুর রাজ্যে বা মুসলমানের রাজ্যে, কি খ্ৰীষ্টানের বাজ্যে বাস করি, তাহ দেখিয়া আমার স্বাধীনতাব পরিমাপ হইবে না। আমার নিত্যনৈমিত্তিক জীবনের কতখানি রাজার অধীন, ও কতখানি আমাব নিজের অধীন, জীবনের কতগুলা কাজ রাজার হুকুমে সম্পাদন করিতে হয়, আর কতগুলা কাজই বা আমার ইচ্ছামত সম্পাদন করিতে পারি, তাহ দেখিয়াই আমার স্বাধীনতার মাত্রা স্থির করিতে হইবে। আমি বলিতে চাহি যে, এই হিসাবে সেকালের ভারতবাসী একালের ইউরোপীয়ের অপেক্ষাও অধিকতর স্বাতন্ত্র্য সম্ভোগ করিয়াছে । ইউরোপের ইতিহাস ধারাবাহিক স্থত্রে আলোচনা করিলে আমরা কি দেখিতে পাই ? রোম নগরীর সম্প্রসারণ হইতে ইউরোপের রাজনৈতিক ইতিহাসের আরম্ভ। গ্রীস অন্যান্য বিষয়ে ইউরোপীয় সভ্যতার জননী হইলেও রাজনীতি বিষয়ে গ্রীসের সহিত আধুনিক ইউরোপের তেমন ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ নাই। বোমে রাজা ছিল না, কিন্তু প্রজার সমবেত শক্তি রাজার স্থানে কাৰ্য্য করিত। রোম ক্রমে দেশের পর দেশ গ্রাস করিয়া আপনার কলেবর সম্প্রসারিত করিতে লাগিল, এবং যেখানে যাহাকে পাইল, সকলকেই এক আইনের অধীন করিয়া সকলকেই সমান রাজনৈতিক ক্ষমতা দিয়া সমান অর্থে রোমান করিয়া ফেলিল। ইউরোপের সমগ্র দক্ষিণ ভাগে যেখানে ষে ছিল, সকলেই বিভিন্ন বর্ণ, বিভিন্ন ভাষা, বিভিন্ন আচার লইয়াও খাটি রোমক হুইয়া উঠিল, এবং অবশেষে একজন বা বহু জন সেনানীর হাতে প্রভুশক্তি অপর্ণ করিয়া রোমের বিশাল কলেবর পাশ্বস্থ শক্তগণের গ্রাস হইতে রক্ষায় প্রয়ালী থাকিল। মহাসাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হইল - রটে, কিন্তু একটা মহাজাতির স্বাক্ট হইল