পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র 58ו সংস্কৃতের তুলনা করিলেও তাহাব প্রচুর দৃষ্টান্ত মিলিবে। সংস্কৃত কবিগণ ৰে ইহাদিগকে কাব্যের ভাষায় স্থান দিতে সংকোচ করেন নাই, তাহার প্রচুর দৃষ্টান্ত আছে। ভারতচন্দ্রের মত বাঙ্গালী কবির এই শ্রেণীর শব্দের প্রতি একটা বিশেষ টান ছিল, তাহা ত জানাই আছে। ভারতচন্দ্র যেখানে সংস্কৃত কবিতা রচনার চেষ্টা করিয়াছেন, সেখানেও এই পূবদ্যাত্মক শব্ব প্রয়োগের প্রলোভন সংবরণ করিতে পারেন নাই । র্তাহার “খটমট খটমট খুরোখ-ধ্বনিরুত" ইত্যাদি কবিতার উল্লেখ করা যাইতে পারে। মহাকবি ভবভূতি, বিশুদ্ধ মার্জিত ভাষার প্রয়োগে যাহার সমকক্ষ কবি সংস্কৃত-সাহিত্যে বিরল, তিনি এই ধ্বন্যাত্মক শব্দে তাহার কবিতাক সাজাইতে যেরূপ ভালবাসিতেন, তাহাও কাহারও অবিদিত নাই। মহামহোপাধ্যায় পণ্ডিত সতীশচন্দ্র বিদ্যাভূষণ মহাশয় তাহার ‘ভবভূতি' নামক প্রবন্ধে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করিয়াছিলেন, ‘সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা’ব পাঠকগণেব তাহ স্মরণ থাকিতে পারে। সাহিত্যের ভাষার পক্ষে ষাহাই হউক, চলিত ভাষায় এই প্ৰবন্তীত্বক শব্দগুলিকে বর্জন কারলে ব{সালীর কথা কহ একেবারে বন্ধ করিতে হয়। আমাদের কাজকৰ্ম্ম ঘরকরন অচল হয়। অন্তত: এই জষ্ঠ ও বাঙ্গাল। ভাযার আলোচনায় এক্ট শব্দগুলিকে বর্জন করিলে চলিবে না। কিছু নি হইল, শ্রযুক্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয় ‘বাঙ্গাল কন্যায়ক শব্দ’ নাম দিয়া একটি প্রবন্ধু সপ্তম বর্ষের ‘সাহিত্য-পরিযৎ-পত্রিকা’য় বাহির করিয়াছেন। ঐ প্রবন্ধে তন এই ধ্বন্তাত্মক শব্দগুলির একটা বিশঃতার উল্লেখ করেন, তৎপূর্বে বোধ করি, আর কেহ সেই বিশঃত লক্ষ্য করেন নাই। একটা দৃষ্টান্ত দিব । কাকে কা কা করে, আর কোকিলে কু হু করে, গাড়ী ঘর ঘ র করিয়া চলে, আর মানুষে খু ক খুক করিয়া কাশে; এই সকল পৃষ্ঠান্তে নৈসৰ্গিক ধ্বনির অনুকরণ হইয়াছে, তাহা বুঝিতে কোন কষ্ট নাই। আমরা হি হি করিয়া হাসি, আর খ ট থ ট করিয়া চলি, এখানেও স্বভাবের অনুকরণ। কিন্তু রাগে যখন গা গ শ গ শ করে, তখন কি বাস্তবিকই গা হইতে এইরূপ ধ্বনি বাহির হয় ? যখন গ ট ম ট করিয়া তাকান মায়, তখন চোখ হইতে বড়-জোর একটা জ্যোতি বাহির হয়, কোনরূপ গ ট ম ট শব্দ ত বাহির হয় না। শীতে যখন হাত পা ক ন ক ন করে, তখন মাইক্রোফল লাগাইলেও সেই ধ্বনি শোনা যায় না। বুকের ভিতরের দু র দু র নি বা ধু ক ধুক নি ষ্টেথস্কোপ লাগাইলে কর্ণগোচর হইয়া থাকে বটে, কিন্তু রাঙা টু কৃ টু কে কাপড় হইতে কোনরূপ টু কটু ক শব্দ আবিষ্কারের কোন আশা দেখি না। শ্রাবণ মাসে বৃষ্টির ধারা কখন কি ম ঝি ম, কখন ঝ ম ঝ ম, কখন বা ঝ প বা প শব্দ করে, তাহা শুনিয়াছ বটে, কিন্তু ঝি কৃ ঝি কে বেলায় ৰখন অস্তগামী স্থৰ্য্যের অরুণ কিরণ তালগাছের মাথাকে রঞ্জিত করে, তখন কোনরূপ কি ক ঝি ক শব্দ শুনি নাই। আঁধার ঘরে চ ক চ ক শঙ্কে বিড়াল কর্তৃক দুধের বাটির দুগ্ধপানবাণ ঘোষিত হয় বটে, কিন্তু চ ক চ কে * কখন চ ক চ ক শব্দ করিতে শুনি নাই। এই শব্দগুলি নৈসৰ্গিক ধ্বনির অল্পকরণে উৎপন্ন শব্দ, তাহাতে সন্দেহ মাত্র নাই; কিন্তু কোনরূপ ধ্বনি ত কখনও