পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নানাকথা : সামাজিক ব্যাধি ও তাহার প্রতিকার א שלא অনুরাগ স্থাপনে সমর্থ হয়েন নাই। সুতরাং আমার আশা নাই যে, আমি ইহার সম্যকৃ আলোচনায় সমর্থ হইব । দারিদ্র্যের কথা আনিতে গেলেই আমাদের আয়-ব্যয়ের কথা, টাকা আন গণ্ডার ভীষণ ট্যাটক্টিক্স আসিয়া পড়ে, এবং পাটীগণিত শাস্ত্রে ব্যুৎপত্তির অভাবে আমার ঐ লোমহর্ষণ অনুষ্ঠানে হাত দিতে স্বতই শঙ্কা হয়। পাঠশালায় পড়িবাব সময় সঙ্কলন, ব্যবকলন, সস্তৃয় সমুখান প্রভৃতি শব্দপরস্পর কেবল রাত্রিযোগে দুঃস্বপ্নের স্বষ্টি করিত। আমার এরূপ ক্ষমতা নাই যে, হিসাব করিয়! আমাদের আর্থিক অবস্থা সম্বন্ধে একটা যথাযথ উত্তর দিব। তবে পরের মুখে দুই চারি কথা যাহা শুনিতে পাওয়া যায়, তাহারই সার সঙ্কলনপূৰ্ব্বক আপনাদিগের উপর উপস্থিত করিতে চেষ্টা করিব। 函 আমরা দরিদ্র, সে বিষয়ে কাহারও কোন সংশয় নাই ; কিন্তু সেই দারিদ্র্য বাডিতেছে কি না, এই প্রশ্নের দুই রকম উত্তর শুনিতে পাওয়া যায়। এক উত্তর সরকারী, অন্য উডুব বেসরকারী। অন্য দেশের কথা জানি না, কিন্তু আমাদের দেশে সাধারণতঃ প্রাকৃতিক ঘটনার তথ্যনির্ণয়েও সরকারী ও বেসরকারী দুই রকম সিদ্ধাস্ত সচরাচর প্রচলিত আছে। দেশে দুভিক্ষ হইয়াছে কি না ? বেসরকারী উত্তর দুভিক্ষে অৰ্দ্ধেক লোক মরিয়া গেল ; সরকারী উত্তর—দুভিক্ষ কোথায় ? শহরে প্লেগ আসিয়াছে কি না ? সরকার যখন বলেন—প্লেগে বিস্তর লোক মরিতেছে, সাধারণের তখন স্থির সিদ্ধাস্ত, এ সমস্তই কবিকল্পনা । দারিদ্র্য সম্বন্ধে সরকারী উত্তর—দেশ দরিদ্র, কিন্তু ইংরাজ শাসনের কল্যাণে উত্তরোত্তর ধনবৃদ্ধি হইয়া দারিদ্র্য দূরীভূত হইতেছে ; বেসরকারী উত্তর-ইংরাজের শাসনে আমরা অত্যন্ত মুখে আছি সন্দেহ নাই, কিন্তু কিছু দিন পরে দেশে আর কানা কডিটিও থাকিবে না। এ রহস্য মন্দ নহে ; কিন্তু রহস্তের সমালোচনায় কৌতুক ও শিক্ষা আছে। উভয় পক্ষে বহু দিন হইতে বিতণ্ড চলিয়া আসিতেছে ; উভয় পক্ষের তৃণীর হইতে ক্ষুরধার যুক্তির বাণসমূহ সৰ্ব্বদা প্রক্ষিপ্ত হইতেছে ; কিন্তু সমরে জয় পরাজয়ের অদ্যাবধি মীমাংসা হইল না। বেসরকারী পক্ষ বলেন, তোমরা হোম চার্জ বলিয়া যে টাকাটা বৎসর বৎসর আপন দেশে লইয়া যাইতেছে, তাহা আমাদের নিছক লোকসান ; ইংরাজ সৈনিক, ইংরাজ রাজপুরুষ যে টাকা এ দেশ হইতে লইয়া যায়, তাহার এক কড়াও আর এ দেশে প্রত্যাবর্তন করে না। দেশীয়ের হাতে শাসনকাৰ্য্য ও শাস্তি রক্ষার ভার দিলে দেশের টাকাটা দেশে থাকিত । সরকারী পক্ষ বলেন, ঠিক। কিন্তু এত কাল ত তোমরা দেশ শাসন করিয়া আসিতেছিল, কিন্তু শান্তি রক্ষা করিতে সমর্থ হও নাই। বাহিরের শক্ৰ আসিয়া মাঝে মাঝে তোমাদের সর্বস্ব লুঠিয়া লইত। অভ্যস্তরে দস্ক্য-তস্কর, বর্গী: পিণ্ডারীর অনুগ্রহে কাহারও ধন প্রাণ নিরাপদ ছিল না, আমরা তোমাদিগকে শাস্তি দিয়াছি। বহিঃশত্রুর ভয় নাই ; ভিতরে নিবিবাদ শাস্তি ; সকলে এখন মনের সুথে পরিশ্রমের ফল ভোগ করিবার অবসর পাইয়াছে। সহস্ৰগুণ দিংরি জন্য স্থৰ্য্যদেব রস গ্রহণ করেন ; আমরাও পরিশ্রমের বেতনস্বরূপ একগুণ গ্রহণ