পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Woo 8 বামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র আলোচনা অদ্যাপি বৈদেশিকের হস্তে রহিয়াছে । আমাদের মধ্যে র্যাহারা অত্যন্ত গম্ভীরভাবে বৈদেশিক সমাজের ইতিবৃত্ত ও সমাজতত্ত্বের আলোচনা কবেন, তাহারা স্বদেশের ইতিবৃত্ত ও সমাজতন্ত্রেব আলোচনায় সম্পূর্ণ উদাসীন। ভারতবর্ষের পুবাবুত্ত্বেব ও সমাজতত্ত্বের কথায় তাহারা হয়ত সম্পূর্ণ ঔদাসীন্য দেখান, অথবা অজ্ঞার ও অশ্রদ্ধার হাসি হাসিয় থাকেন । আমাদের প্রাচীন বা বর্তমান সমাজের প্রতি যাহাদের ভক্তি নাই বা অন্তরাগ নাই, তাহাদের কথা ছাড়িয়া দিলাম। র্যাহারা হিন্দুয়ানির নবোথিত ধ্বজার নিম্নে দণ্ডায়মান থাকিয়া আপনাদিগকে প্রাচীন সমাজতন্ত্রের ও সনাতন ধৰ্ম্মেব একান্ত পক্ষপাতী বলিয়া পবিচ্য দিয়া থাকেন, তাহদের মধ্যেও এই ঔদাসীন্য ও এই অবজ্ঞা দেখিয়া ব্যথিত হইতে হয়। পাশ্চাত্তা পণ্ডিতেরা ভারতবর্গের পুরাবৃত্ত্বের আলোচনা করিয়া যে সকল তত্ত্বের আবিষ্কাব করিতেছেন, তাহাব যাথার্থ্যে র্তাহীদের শ্রদ না থাকিতে পাবে, কিন্তু তাহারাও ত প্রকৃত তত্ত্ব নিরূপণেব জন্য শ্রম স্বীকার কবেন না, এবং পাশ্চাত্য পণ্ডিতেরা যে সকল ভ্রমসঙ্কল মিথ্যাবাদের প্রচাব কবিতেছেন বলিয়। তাহাদের বিশ্বাস আছে, সেই সকল মতের অযৌক্তিকতা প্রতিপাদনের জন্য যে পরিশ্রম যে গবেষণা, যে অধ্যবসায় আবশ্যক, তাঙ্কা ও স্বীকার করেন না। এই ঔদাসীন্যে, এই অতুলাগেব অভাবে তাহাদেব সমাজভক্তির অকৃত্রিমতায় সন্দেহ থাকিয়া যায়। আমার বোধ হয় দত্তমান শিক্ষাপ্রণালীই তাহাদের এই ঔদাসন্যের জন্য ও অবজ্ঞার জন্য দায়ী। যে প্রণালী জাতীয় ভাবের ভিত্তিব উপব স্থাপিত নহে, তাহাতে প্রক্লত স্বজাতি-অনুরাগ ও স্বদেশ-অনুরাগ অানিতে পারে না, কেবল স্বজাতির প্রতিও একটা কৃত্রিম অন্তঃসারশূন্য মৌখিক আসক্তির ছদ্ম ভাব উৎপাদন করে মাত্র। আমাদের শিক্ষিত সমাজের মধ্যে আর এক শ্রেণীর লোক আছেন, তাহারা বলেন. ভারতবর্ষে পুরাতত্ত্বে শিখিবার কথা আছেই বা কি যে, সে দিকে সময় নষ্ট করিব ? গোটকতক শিলালিপি ও খানকতক তাম্রশাসন ও কয়েকখানা প্রক্ষিপ্তোক্তিপূর্ণ কীটদষ্ট গ্রন্থ মাত্র যে পুরাতত্ত্বের অবলম্বন, তাহাব সমালোচনায় ফল কি ? গ্রীসের ইতিহাস আছে, রোমের ইতিহাস আছে, রোম সাম্রাজ্যের বিশাল কলেবর ছিন্ন ভিন্ন হইয়া যে সকল খণ্ড রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে, তাহাদেব প্রত্যেকেরই ধারাবাহিক প্রমাণিক ইতিহাস আছে । সেই সকল ইতিহাস হইতে মনুষ্য জাতির বিবিধ অবস্থাবিপর্যাসের পরিচয় পাওয়া যায়। পাশ্চাত্য রঙ্গমঞ্চে যে মহানাটকের অভিনয় ম্যাবাথনের দিন হইতে ওমদুরমানের দিন পর্য্যন্ত অভিনীত হইতেছে, তাহার প্রত্যেক দৃশ্য, প্রত্যেক অঙ্ক, প্রত্যেক অভিনেতার নাট্যপ্রণালী উজ্জলালোকে দৃষ্টিপথবর্তী হয় । ভারত-সমাজের সেরূপ ইতিহাস কোথায় ? কথাটা সম্পূর্ণ সত্য, কিন্তু যুক্তিটা সম্পূর্ণ আসার । ভারতের ইতিহাস নাই বলিয়া কি সেই ইতিহাসের উদ্ধারে আমরা প্রষত্ব করিব না ? শিলালিপি ও তাম্রশাসন ও কীটদষ্টগ্রন্থ যে কয়েকখানা আছে, তাহ৷ সকলই কি বৈদেশিকের কর্তৃক পঠিত হইয়া, বৈদেশিকের কর্তৃক ব্যাখ্যাত হইয়া ভারত-সমাজের বিকৃত ইতিহাসের স্বষ্টি করিবে ? যে দেশের প্রাচীন ইতিহাস দেশীয়গণের ভক্তি আকর্ষণে সমর্থ হয় না, সে দেশের সামাজিকগণের মধ্যে প্রকৃত স্বজাতিবাৎসল্য জন্মিতে পাকে না । সভ্যতাগবিবত