পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৪০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নানাকথা : অরণ্যে রোদন \אלכס শিক্ষায় উহ। জাতীয় বলবৃদ্ধিব বা মল্লযুত্ববৃদ্ধির অনুকূল হইতে পারে না। কাজেই লিবারাল এজুকেশনের কথাটা হাসিয়া উড়াইয়। দিলে চলিবে না। অপর পক্ষ যে ইহ অস্বীকার করেন, তাহ নহে ; তাহারা বলেন, ঐরূপ উন্নত অর্থে লিবারাল শিক্ষা বড় ভাল কথা ; এমন কি, আর একটু নীচে যাইয় প্রত্যেক ব্যক্তিরই মাত্য হই *ে হইলে সকল বিষয়েই কিছু কিছু জ্ঞান থাকা আবশ্বক, উহাও অস্বীকার্য্য নহে। কিন্তু ইহারা বলিপেন, বিশ্ববিদ্যালয় ঠিক এইরূপ শিক্ষার স্থান নষ্ঠে । সকল শাস্বে কিঞ্চিং অভিজ্ঞতা, যাহা সভ্যদেশে মন্ত মাত্রেরই আবশ্যক, তাহা বিশ্ববিদ্যালমের নিম্ন পর্যায়ে যে শিক্ষা দেওয়া হয়, সেখান হইতেই আনা উচিত। তার ঐ যে খুব লম্ব কথাটা—সৰ্ব্বাঙ্গীন স্ফুক্তিসাধন, তাহা কোন বিদ্যামন্দিরেব প্রাচীবের মধ্যে ঘটিতে পারে না । সেই স্কৃত্তিসাধনের জন্য বিদ্যামন্দিরের প্রাচীর লঙ্ঘন কবিয়। মনুষ্যসমাজের স্ববৃহং কৰ্ম্মক্ষত্রে প্রবেশ কৱিতে হইবে ; বিদ্যামন্দিরেব অন্তর্গত ক্ষ দ্র সমাজে তাহীর অনুকৰণ বা অভিনয় হইতে পারে বটে ; কিন্তু প্রকৃত মনুস্থ ত্ব শিক্ষার স্থান অন্যত্র। স্বষ্টিকৰ্ত্ত সকল মানুষকে এক ছাচে ঢালিয়। গড়েন নাই । বিভিন্ন ব্যক্তির রুচি প্রবৃত্তিব শক্তি বিভিন্ন দিকে। সেই জন্য প্রত্যেক ব্যক্তির কচি প্রবৃত্ত ও শক্তি বুঝিয়া সেই সেচ ব্যক্তিগত শক্তিবৰ্দ্ধনেব চেষ্টা করিলে অধিক ফললাভের সম্ভাবন।। সকলকে এক ভাবে গডিতে গেলে কোনটার গঠনই মজবুত হয় না ; পত্যেকের কাঠামোর বিশিষ্ট দিকে নজর দিয়া বিশিষ্ঠভাবে গডিবাব চেষ্টা করিলে, তাহার বলবিধানে অধিকতর সফলতা ঘটতে পারে। পৃথিবীর কৰ্ম্মক্ষেত্র অতি ভাষণ, এখানে কেহ কাহাকে ও খাতির করে না ; এখানে দয়া নাই, মমতা নাই ; এখানে সকলেই আপনাকে বাচাইবার জন্য ব্যতিব্যস্ত। এই বিশাল কৰ্ম্মক্ষেত্রে প্রবেশ করিবার পূৰ্ব্বে সম্মুখসমবের উপযোগী বল সঞ্চয় করিয়া রাখা আবশ্যক। যে ব্যক্তি যে পথে গেলে শক্তিসঞ্চা করিতে পারিবে, তাহাকে সেই পথে যাইতে স্বাধীনতা দিলে তবেই সে যথাযথ শক্তিসঞ্চয়ের অবসর পাইবে ; নতুবা একটা কাল্পনিক সৰ্ব্বাঙ্গসম্পূর্ণ আদশ খাড়া করিয়া অন্ধ, খঞ্জ, মূক, বধিব সকলকেই নিজ নিজ স্বাভাবিক বিরুতি ও হীনত। হইতে মুক্ত করিয়া সেই আদর্শের গঠন দিতে গেলে, অনৰ্থক পরিশ্রম ভিন্ন বিশেষ ফল হইবে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পক্ষে সেই শক্তিসঞ্চয়ের স্থান। শিক্ষার্থী যখন নাবালক থাকে, যখন সে নিজের মতি গতি প্রকৃতি কোন দিকে, তাহ নিজেই জানে না, তখনই নিম্নতর বিদ্যালয়ে তাহার যথাসম্ভব লিবারাল শিক্ষার বিধান কর, এবং পরে সে বয়ঃপ্রাপ্ত হইয়া যখন আপনাকে চিনিতে পারে, তখন তাহাকে আপন রুচি ও প্রবৃত্তি অনুসারে নির্দিষ্ট পথে স্বাধীনভাবে চলিতে দাও ; সকলকে জোর করিয়া এক রাস্তায় চলিতে বাধ্য করিও না ; তাহা হইলেই প্রত্যেকের পক্ষে মঙ্গল হইবে ও সমাজের পক্ষেও মঙ্গল হইবে । উভয় পক্ষের বাদ প্রতিবাদের গণ্ডগোলে আর সময় নষ্ট করিবার দরকার নাই। ফলে, উভয় পক্ষের উক্তিতে কিছু না কিছু সত্য আছে। মন্ত্রন্থের প্রবৃত্তি ও রুচি অনুসাবে তাহার এপদেশের গঠন দ্বারা তাহার বলবিধান অতি উত্তম কথা এবং মহস্যের সমস্ত বৃত্তির সামঞ্জস্য বিধান করিয়া তাহার মনুষ্যত্বকে পূর্ণতা প্রদান আরও উত্তম কথা। কিন্তু যে উদ্দেশুটা যত উত্তম, সেই উদ্বেগু