পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৪১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নানাকথা ; অরণ্যে রোদন 8 à G নহে । অপিচ বিশ্ববিদ্যালয় যে উপায়ে পাণ্ডিত্য পরীক্ষা করেন সে উপায়ও পাণ্ডিত্য পরীক্ষার প্রকৃষ্ট উপায় নহে। এ দেশের সকল শিক্ষার্থীরই যে এই হীন উদ্দেশু, তাহ। আমি বলিতে চাহি না ; অন্যান্য সভ্যতর দেশেও অধিকাংশ শিক্ষাগীর উদ্দেশ্য ইহা অপেক্ষ উচ্চ নহে। কিন্তু সে দেশে সকলে বিশ্ববিদ্যালয়ে যায় না ; তাহাদের জীবিকার্জনে শক্তি প্রদানের জন্য অন্য সহস্র শিক্ষাগার বর্তমান আছে । আমাদের এক বিশ্ববিদ্যালয় মাত্র অগতির গতি, এক মাত্র উপায় । সত্য বটে, আজকাল গবর্মেন্ট দেশের লোকের জন্য কৃষি-বিদ্যালয়, চিকিৎসা-বিদ্যালয়, পশু-চিকিৎসবিদ্যালয়, গুটিপোক-বিদ্যালয় প্রভৃতি নানা বিদ্যার আলয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাহিরে স্থাপন করিতেছেন, কিন্তু তাহ দেশের কোটি সংখ্যায় গণিত লোকের পক্ষে ধৰ্ত্তব্যের মধ্যেই নহে। এ দেশে জীবনোপায়ের এক মাত্র দ্বার বিশ্ববিদ্যালয়, এব’ জীবিকাজনষ্ট শিক্ষানীতির এক মাত্র লক্ষ্য । এ দেশে বিশ্ববিদ্যালয় বিদ্যা দেন না, বিদ্যাব পরীক্ষা করেন, অন্য স্থান হইতে বিদ্যা লইয়া আসিতে হয়। এবু এই বিদ্য লইবার জন্য অনেকগুলি স্থান দেশের মধ্যে ছডাঙ্গয়া আছে । এই সকল স্থানই প্রকৃতপক্ষে এ দেশের বিদ্যালয় , বিশ্ববিদ্যালয়কে বিদ্যালয় না বলিয়। পরীক্ষালয় বলাই উচিত। বিদ্যা দিবার জন্য যে সকল আলয় আছে, তাহার কতক সরকারী, কতক বেসরকারী । বিদ্যাগীরা সেখানে পয়সা দিয়া বিদ্যা থবিদ করে। বিদ্যার মল্য সরকারী আলয়ে বেশী, বেসরকারী আলয়ে কম । কোথাকার বিদ্যা ভাল, কোথাকার বিদ্যা মন্দ, তাহ নিৰ্বাচনের ভার শিক্ষার্থীর উপব । বিদ্যাগীরা আপনাপন অবস্থা বুঝিয়া মোটের উপর যেখানে সস্তা পায়, সেইখানেই বিদ্যা খরিদ করে । বেসরকারী আলয়গুলির চেয়ে সরকারী আলয়গুলির চাকচিক্য অনেক বেশী ; আর establishment খরচার তাবতম্যে একই মাল বিভিন্ন দোকানে বিভিন্ন মূল্যে পাওয়া যায়। আর দেশী দোকানে শাদ রঙের আকর্ষণ নাই , এই কালে। দেশে সাদার অস্তিত্ব অন্ততঃ aesthetic culture এর জন্যও আবশুক । আমাদের গবর্মেন্ট এ দেশের মধ্যে শিক্ষাবিস্তাবের, নিম্ন শিক্ষা ও উচ্চ শিক্ষা, উভয় শিক্ষার বিস্তারের দায়িত্ব স্বয় ইচ্ছাপূর্বক গ্রহণ করিয়াছেন। বেটিক ও মেকলের সময় হইতে গপর্মেন্ট এ দেশের লোককে উচ্চ শিক্ষা দিবার ভার হাকিম৷ ডাকিয়া, দেশীয় প্রচলিত শিক্ষা প্রণালীকে গালিগালাজ করিয়া, স্বয়ং স্বহস্তে গ্রহণ করিয়াছেন । তাহার পরবত্তী কালেও গবর্মেন্ট কখনও আপনাকে এ দায় হষ্টতে সম্পূর্ণ মুক্তি দিবার ইচ্ছা প্রকাশ করেন নাই। সম্পূর্ণ মুক্তি বলিলাম , কেন না, ইদানীং ইংরাজ গবর্মেন্টের উচ্চ শিক্ষাবিষয়িণী নীতি একটু অন্যরূপ মূৰ্ত্তি ধারণ করিতেছিল ; রাজপুরুষগণের কণ্ঠ হইতে উচ্চ শিক্ষার কথা গুলা বাহির হইবার সময়, এক আধটুকু আটকাইয়া যাইতেছিল। ইদানী" রাজপুরুষের বলিতে আরস্ত করিয়াছিলেন, গবর্মেন্ট নিম্ন শিক্ষা বিস্তারের জন্যই মুখ্যতঃ দায়ী, উচ্চ শিক্ষার জন্য তেমন দায়ী নহেন । এই কথা বলিবার সময় একটা থিওরির আশ্রয় লওয়া হইত। কিছু দিন পূৰ্ব্বে বিলাতে পণ্ডিতদের মধ্যে একটা থিওরি উঠিয়াছিল, গবর্মেন্ট প্রজার কাজে যত হাত না দেন, ততই ভাল। গরর্মেন্টের প্রধান কাৰ্য্য, বোধ হয় এক মাত্র কার্য্য শাস্তিরক্ষা । তম্ভিন্ন প্রজার কিসে