পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৪১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নানাকথা : অরণ্যে রোদন 8 S \o দিয়া প্রাইভেট কালেজের অধ্যক্ষদিগকে উপকৃত করিয়াছেন। তবে ঐ সকল উন্নতি সাধনের জন্য অর্থ কোথা হইতে আসিবে, তাহার কোন উপায় নিৰ্দেশ করেন নাই। কেবল ছাত্র প্রদত্ত অর্থ হইতে আধুনিক প্রণালীর উচ্চ শিক্ষা নিৰ্বাহিত হইতে পাবে, এ কল্পনা এই আধুনিক ভাবতীর্ষ ভিন্ন অন্যত্র কার্য্যকর হইয়াছে কি না, জানি না। এ দেশের ধনিগণ উচ্চ শিক্ষার জন্য যথোচিত ব্যয়বিধানে পরাজুখ বলিয়। গালি খান ; কিন্তু ধনিগণকে গালি দিয়াও বিশেষ লাভ নাই । রাজপুঞ্চযগণ তাহাদিগকে যে ভাবে দোহন করিতেছেন, তাহাতে র্তাহাদিগের নিকট আর অধিক দুগ্ধের আশা করিলে প্রায়শ্চিত্তেব জন্য প্রস্তুত থাকিতে হইবে। আর অন্য দেশে এক এক কাণেজি এক এক নিশ্বাসে যে ঐশ্বৰ্য্য ত্যাগ করেন, আমাদের অধিকাংশ ধনীর পক্ষে তাহ নিশার স্বপন । কাজেই এই বিদ্যালয়গুলির উন্নতিব আশা দেখি, না। উন্নতির আশা ন থাকিলেও এই বিদ্যালয়গুলির উন্নতি বাঞ্ছনীয়, সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই। কিন্তু লোকে জিজ্ঞাসা করতেছে, সবকারী কলেজ গুলিব উন্নতি সম্বন্ধে কমিশন কোন কথা বলেন নাই কেন ? সব কাবী কলেজেব অবস্থা কি এতই উন্নত যে, সে সম্বন্ধে কোন উপদেশের প্রয়োজন নাই ? বল বাহুল্য, এ দেশে গবর্মেণ্ট কলেজগুলিই বেসরকারী কালেজের পক্ষে আদর্শস্বরূপ । সরকারী আদর্শ উন্নত করিলে বেসরকারী আদশকেও বাধ্য হইয়। উদ্ধে উঠতে হইলে, অথব জীবন-সংগ্রামে নষ্ট হইতে হইবে । কিন্তু আমর বলি, কমিশনের এই নীরবতার জন্যও আমাদের দুঃখিত হওয়া উচিত নহে । গবর্মেন্টকে সন্ধুপদেশ দেওয়া তাহাব| অনাবশ্যক বোধ করিয়াছেন , বাহিদেব লোককে র্তাহাব। যে উপদেশ দিয়াছেন, তাহা শিরোধাৰ্য্য করিয়৷ আমাদের কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত। তৎপরে কমিশন ভারতবর্ষের দবিদ্র ছাত্রবর্গের উপর নিতান্তই দয়াপরবশ হইয়! একটা বিধি দিয়া ফেলিয়াছেন। দুরস্ত শয়তান আমাদের দরিদ্র ছাত্রগণকে নিত স্থি অসহায় অবস্থায় পাইয়া থল সৰ্পের মত তাহাদিগকে জ্ঞানবৃক্ষের রসাস্বাদনে প্রলোভত করিয়! সৰ্ব্বনাশের পথে লইয়া যাইতেছিল । বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন সেই নিঃসহায়দিগের এক মাত্র ত্রাণকৰ্ত্ত স্বরূপে অবতীর্ণ হইয়াছেন, ইহাতে কোন ব্যক্তি তাহাদিগকে প্রেম করিতে দ্বিধা বোধ করিবে ? এই কয়েকটি নমুনা হইতেই কমিশনের রিপোর্টের ধরণটা বুঝা যাইবে । অকারণে আর পুথি বাডাইয়া কাজ নাই। সংসারকার্য্যে পুরাতনকে ভাঙ্গিয় নূতন গড়িতে হয় ; কমিশন পুরাতনকে ভাঙ্গিবার অনেক স্বব্যবস্থা করিয়াছেন, নূতন গড়িবার তেমন উপায় করেন নাই। কমিশনের রিপোর্ট পড়িয়া এই কারণেই আমাদের নৈরাশু জন্মে । আমাদের দেশের শিক্ষাক্ষেত্র জঞ্জালে ও জঙ্গলে পরিপূর্ণ, ইহা অস্বীকার করিবার কোন উপায় দেখি না। কমিশন সম্মার্জনী ও কুঠার হস্তে ক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইয়াছেন ; এবং দুই হাতে সেই সম্মার্জনীর ও কুঠারের প্রয়োগের দ্বারা জঞ্জাল ও জঙ্গল সাফ করিতে বসিয়াছেন । যে সকল কালেজের ভাল বাড়ী নাই, তাহ উঠাও ; যাহাতে লাইব্রেরি লাবরেটরি নাই, তাহ উঠাও ; যাহাতে হোষ্টেল নাই, ছাত্রদের ক্রীড়াস্থল নাই, মাষ্টারদের বসিবার স্বর নাই, সে সকল উঠাও । তার উপর যে সকল