পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৪৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3ՀԵ রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র পাতা প্রভৃতি যে সকল উদ্ভিজ্জ মানুষের অখাদ্য, তাহাকে পশুসাহায্যে পশুমাংসে পরিণত করিয়া মঠুষ্য কাজে লাগায়। সভ্য সমাজে মাতুষ উদ্ভিজ্জ ও প্রাণিজ খাদ্য প্রচুর পরিমাণে উৎপাদন করিতেছে, তথাপি কুলাইতেছে না ; সভ্যতম সমাজেও বিস্তর লোক অৰ্দ্ধাশনে বা অনশনে থাকে। তাহার মূল কারণ আহারসামগ্রীর অপ্রাচুর্য্য। তিনটা কথা পাওয়া গেল। মাংস উদ্ভিজ্জের অপেক্ষ পুষ্টিকর ; মাংস মনুষ্যের নির্দিষ্ট খাদ্য , কৃষিজাত উদ্ভিজ্জ কোন সমাজের পক্ষে যথেষ্ট ও প্রচুর নহে। স্বতবাং মঙ্গুষ্যের প্রবৃত্তি মাংসের দিকে। মনুষ্য প্রাকৃত নিয়মে জীবন রক্ষার জন্য ও স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য মাংস ভোজনে বাধ্য । এই কয়টি কথার প্রতিকূলে বিবোধ উত্থাপন ভ্রম। তথাপি কেহ কেহ বিবাদ তুলেন। কেহ বলেন, অনেক নিরামিষাশী ব্যক্তিকুে সুস্থ, বলিষ্ঠ ও দীর্ঘজীবী দেখা যায়। এটা কোন কাজের কথা নহে। মনুষ্যের দীর্ঘজীবিত্ব ও স্বাস্থ্য এত বিভিন্ন কারণে নিয়মিত হয় যে, ব্যক্তিবিশেষ বা শ্রেণীবিশেষের উদাহরণ দ্বারা ইহার কারণ নির্দেশ করা চলে ন| | কেহ দেখান, উদ্ভিজ্জাশী জীবজন্তু দীর্ঘজীবী , যেমন হাতী ঘোডা, ইত্যাদি। এ কথাটাও বিজ্ঞানসম্মত নহে। জীববিজ্ঞান অন্যরূপ ব্যাখ্যা দেয়। আহার ও পরমাযুব মধ্যে সম্বন্ধ আছে সন্দেহ নাই। উপরেই বলিয়াছি, উদ্ভিদজীবী কলেবরও বৃহৎ হয় ; বৃহৎ কলেবরের সহিত দীর্ঘ পরমাযুরও একটা সম্বন্ধ আছে, তাহা জীববিজ্ঞান স্বীকার করে। ইহার ব্যাখ্যা হাৰ্বাট স্পেন্সারের গ্রন্থে আছে। কিন্তু প্রাকৃতিক নির্বাচন ফলে কোন জাতির পরমাযুর পরিমাণ একেবারে নির্ধারিত হইল৷ গেলে আর খাদ্য নিৰ্বাচন দ্বারা তাহার পরিবর্তনের সম্ভাবনা নাই। সংক্ষেপে এ তত্ত্ব বুঝান চলে ন৷ , ইহার ভিতরে অনেক কথা আছে। এই পৰ্য্যন্ত গেল বিজ্ঞানের কথা। অর্থশাস্ত্র কি বলে দেখা যাউক । জীবনরক্ষ। অত্যন্ত আবখ্যক ব্যাপার, উপরের জালার মত জালা নাই। স্বাভাবিক কারণ মতুন্যের মধ্যে অধিকাংশই দরিদ্র ; কারণ, যত মানুষ আছে, তত খাদ্য নাই । মাংস যেখানে সস্তা, মনুষ্য সেখানে মাংসই খাইবে ; ইহাতে আপত্তি নিরর্থক । নিরামিষ ভোজনের পক্ষপাতী পাঠক এত ক্ষণ আমার উপর খডগহস্থ হইয়াছেন । কিন্তু মাভৈঃ । এখনও আশা আছে। এখনও ধৰ্ম্মাধৰ্ম্মের কথা আছে। আমিষ আহার ধৰ্ম্মসঙ্গত কি না, এ প্রশ্নের উত্তর আবশ্যক। সচরাচর এইরূপ উত্তব দেওয়া হয় । মাংস ভোজনে স্বভাব হিংস্র হইয়া থাকে। মাংসভোজী পশু হিংস্র, কুর, নিষ্ঠুর। -কথাটা ঠিক নহে। মাংস খাইয়া সিংহ ব্যাঘ্ৰাদি হিংস্র স্বভাব পাইয়াছে বল। সঙ্গত নহে। বয়স বাড়িলে ব্যাভ্রের হিংস্রত্ব বাড়ে, তাহার প্রমাণ নাই । পুরুষানুক্রমে তাহদের নিষ্ঠুরতা বাড়িতেছে, তাহাও নহে। হিংস্র না হইলে ব্যান্ত্রের চলে না, সেই জন্য ব্যাঘ্র হিংস্র । নিরীহস্বভাব ব্যান্ত্রের এ জগতে স্থান নাই। প্রকৃতি ঠাকুরাণী যে দিন থর নখর ও থরতর দস্তু দ্বারা ব্যাস্ত্ৰাবয়বকে