পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৪৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নানাকথা : ব্রাহ্মণ কি গ্ৰীষ্ট । $© Ꮔ কালোক্যাদি নানাবিধ মুক্তির প্রসঙ্গ তাহাদের নিকট শোনা যায়। এই সকল মুক্তি কস্তকটা স্বৰ্গবাস বা বৈকুণ্ঠে বাস বা শিবলোকে বাসের মত। র্যাহারা চিনি হইতে চাহেন না, চিনি খেতে ভালবাসেন, তাহার এইরূপ মুক্তির প্রার্থী। এই মুক্তির মুখ্য সাধন জ্ঞান নহে, ভক্তি। এই ভক্তির পথ কঠোর পথ নহে, অপেক্ষাকৃত সহজ পথ । যাহারা অত্যন্ত ভক্ত, তাহারা বলেন, একবার তাহাকে ভক্তিভরে ডাকিলেই মুক্তিলাভ হয় ; যে ডাকিবে, তাহারই হইবে। ব্রাহ্মণ শূদ্র বিচাব হইবে না ; এমন কি, ভক্তিযুক্ত চণ্ডাল এখানে ভক্তিহীন ব্রাক্ষণের অপেক্ষ মুক্তির পথে অনেকটা অধিক অগ্রবর্তী। এই মুক্তি সহজে প্রাপ্য ও সকুলেরই প্রাপ্য। তবে সকলে ডাকিতে জানে না, সে আপন দোষ । so মুক্তির আরও সহজ উপায় স্থলবিশেষে নিদিষ্ট আছে। তীর্থবিশেষে মরিতে পাবিলেই স্বৰ্গবাস, বিষ্ণুলোকে বাস, শিবলোকে বাস ঘটে। তা যে যেমন পাপীই হউক না। এখানেও বর্ণ বিচার নাই। কাশীধামে মরিলে একেবারে খাটি মুক্তি। এখানেও বর্ণ বিচারের অভাব ৭ ফলে মুক্তির অর্থ যাহাই হউক, স্বৰ্গপ্রাপ্তিই হউক, সালোক্য সাযুজ্যই হউক, আর নির্বাণমোক্ষ, আত্যস্তিক দুঃখনিবৃত্তি ইত্যাদিই হউক এবং মুক্তির সাধন যাহাই হউক, সকলেরই দ্বাব অবারিত। ব্রাহ্মণ শূদ্রের বর্ণ-বিচাব নাই, পুরোহিতের হাতে চাবি নাই ; যথাযথ উপায় অবলম্বন করিলে সকলেই যথাসমযে মুক্তিলাভ করিবে। আর কেবল হিন্দু কেন, হিন্দু সমাজের বহিভূত ম্লেচ্ছ বা বিধৰ্ম্মী যে স্বৰ্গলাভে বা মুক্তিলাভে অনধিকারী, এরূপ কথা স্পষ্টভাবে কোথাও আছে কি ? হইতে পারে, অনাচার হেতু, তত্ত্বজ্ঞানের অভাব হেতু তাহাদের পক্ষে স্বৰ্গদ্বারে বা মুক্তিতে পৌছান কাৰ্য্যতঃ অসম্ভব। কিন্তু তাহার কস্মিন কালে কোন ক্রমে স্বর্গে পৌছিবে না বা মুক্ত হইবে না, একপ নির্দেশ কোথাও আছে কি ? এখন জিজ্ঞাস্ত এই— ১। ব্রাহ্মণজাতিকে পুরোহিতের জাতি বলা সঙ্গত কি না , ব্রাহ্মণের অনুবাদে priest শব্দ ব্যবহার করা সঙ্গত কি না ? Priestএর যাবতীয় অপরাধ ব্ৰাহ্মণের স্বন্ধে অর্পণ করা সঙ্গত কি না ? ২। ব্রাহ্মণের হাতে ধর্মের চাবি রহিয়াছে, এইরূপ নির্দেশ যুক্তিযুক্ত কি না ? • 1 stāvēšto priest-ridden country Gil Movs f Hi ? ৪ । এই priestএর অত্যাচারে ভারতবাসী হিন্দুরা ধৰ্ম্মগত স্বাধীনতাতে বঞ্চিত, এইরূপ নির্দেশ সঙ্গত কি না ? ৫ । ব্রাহ্মণের অত্যাচারকে ভারতবর্ষের অবনতির মূল কারণরূপে নির্দেশ সঙ্গত কি না? এই কয়টি প্রশ্ন লইয়া বিনীতভাবে ভারতীয় পাঠকসমাজের দ্বারে উপস্থিত হইলাম। যদি স্বধী ও শাস্ত্রজ্ঞ পাঠকগণ এই প্রশ্ন আলোচনাযোগ্য বিবেচনা করেন, তাহা হইলে এই অকিঞ্চন প্রশ্নকৰ্ত্ত কৃতাৰ্থ হইবেক । বলা বাহুল্য, এই প্রশ্নের আলোচনা ভারতী পত্রে সমাদরে প্রকাশিত হইবে, এ বিষয়ে মাননীয়া ভারতীসম্পাদিকার আশ্বাস পাইয়াছি । ( ভারতী;” চৈত্র ১৩০৮)।