পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৪৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ব্যাধি ও প্রতিকার se o বরং লোকে কানাকানি করে, তখন এত দুভিক্ষ ছিল না, ম্যালেরিয়া ছিল না, কলের ছিল না ইত্যাদি। যাক, এত বড় একটা বিশাল দেশের কাজকৰ্ম্ম স্তৃপাকার করিলে বিশালই হয় এবং সেই বিশাল কাজকৰ্ম্ম যত ছোট আকারেই হউক, সে কালে চলিয়া যাইত এব" রাজার সম্যকৃ সাহায্য ব্যতীতও দেশটা বৰ্ত্তমান ছিল ; দেশ জুডিয়া এই জনসজাও বৰ্ত্তমান ছিল। রাজ শাসনেব অভাবে বঙ্গদেশ বঙ্গসাগরে ডুবিয়া যায় নাই । বঙ্গদেশ ছিল বলিয়। ইংরেজ আজ উডিয়া আসিয়া জুডয়া বসিয়াছেন। পুৰাতন চোঁদ পুরুষে কোন রকমে কায়ক্লেশে দেশটাকে এতদিন ধরিয়া রক্ষা কবিয়া আসিয়াছে বলিয়াই ইংরেজ আজ এখানে দাডাইবার স্থান পাইয়াছেন। 酶 যাহারা এতকাল ধরিয়া এই বিচিত্র দেশের বিচিত্র জনসজেঘর যাবতীয় কাজ চালাইয়। আসিয়াছে, তাহাদেরই অধস্তন পুরুষেরা এই কল্প বৎসর মধ্যে কাজ করিবার শক্তি এককালেই হারাইয়া বসিল, এ কিরূপ ? এখন লোকে কাজ করিতে পারে না, কেবলই চীৎকাব করে , যে কাজ করিতে বলে, সেও কেবল চীৎকারই বাড়ায় । ইংরেজ-রাজত্বের আগে দেশের সমস্ত কাজ আমরাই চালাইতাম, কিন্তু ইংরেজ রাজত্বে আমরা যেন নিশ্চিন্ত হইয়া পড়িয়াছি। আমরা আজকাল কাজ করি না, ইংরেজ সবকারের হাতে কাজ করিবার অধিকার অর্পণ করিয়াছি এবং তাহারা যে কাজটুকু আমাদের হাতে দিতেছেন, তাহাদের সম্পূর্ণ অধীন, অনুগত হইয়৷ সেইটুকুতেই তৃপ্ত থাকিতেছি। ভগবান আমাদিগকে কৰ্ম্মে অধিকার দিয়াছিলেন, ফলের অধিকাব দেন নাই ; আমরা কিন্তু কৰ্ম্মের অধিকাবট ই-বেজ বাজার হাতে দিয়াছি এবং তাহার ফলে অধিকারী হইবার আশায় সন্তুষ্ট আছি। এ কালে যাহাকে Self Government বলে বা স্বায়ত্তশাসন বলে, তাহার অর্থ কি ? আমাদেব স্বায়ত্ত শাসনেব অর্থ ইংরেজ রাজার আয়ত্ত শাসন। বড় জোর তাহার অল্পমতি ও অনুগ্রহক্রমে র্তাহার অন্তগত থাকিয়া যে শাসনক্ষমতাটুকু আমরা পাই, তাহাঙ্গ আমাদের স্বায়ত্তশাসন। ইংরেজেব স্থাপিত বা তাহার নিয়ন্ত্রিত ছোট বড় শাসনযন্ত্র আমাদিগকে উচ্চশিক্ষা, মধ্যশিক্ষা, নিম্নশিক্ষা দিতেছে, আমাদের শাস্তিরক্ষ হইতে দুভিক্ষে অন্নদান পৰ্য্যস্ত করতেছে, আমাদের পথ ঘাট তৈয়ারী করা হইতে নৰ্দ্দম। পরিষ্কার পর্য্যন্ত করিতেছে, আমাদের চিকিৎসা করিতেছে, আমাদের ধৰ্ম্মরক্ষা করিতেছে, এবং সম্ভবতঃ আর কিছু দিন পরে আমাদের রন্ধনশালায় ও বাসরঘরে প্রবেশলাভ করিবে । আমরা পরতন্ত্র হইয় পড়িয়াছি ও ক্রমশঃ সৰ্বতোভাবে পরডস্থ হইয়! পড়িব । আমাদের সমুদয় কাজ রাজার হাতে দিয়া আমরা অতুল শাস্তি ও চিত্তপ্রসাদ লাভ করিতেছি, ইহা সত্য কথা ; কিন্তু ইহা প্রতিরোধের উপায় কি ? ইহার উত্তর হইবে,—কেন তোমরা পরের হাতে এ সকল দিতেছ? ঐ সকল কাজ রাজার হাতে না দিয়া নিজের হাতে গ্রহণ কেন করিতেছ না ? রবীন্দ্রবাবু বলিয়। অসিতেছেন, রাজার হাতে কাজের ভার দেওয়াট। ঠিক হয় নাই। কৰ্ম্মভার স্বহস্তে গ্রহণ কর, ইহাই রবীন্দ্রবাবুর উপদেশ এবং আজিকার স্বদেশী আন্দোলনের মজ্জাগত শিক্ষাই ইহাই। আমি এখানে প্রশ্ন তুলিব, 'বাস্তবিকই আমরা কৰ্ম্মে অধিকার ইংরেজের হাতে আপনা হইতেই তুলিয়া