পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শব্দকথা : ধ্বনি-বিচার . १७ মোলায়েম করে। র গ, র গ র গ, র গড়, র গড় া ন, র প টা ন প্রভৃতি কয়টি র-কারাদি কাঠিন্যস্থচক শব্দ পাওয়া যায় ; বড় বেশী পাওয়া যায় না। - দস্ত্য ল’য়ে কোমল ও চঞ্চল ভাব আনে। দন্ত্য বর্ণের ইহাই স্বভাব, তাহ পূর্বেই বলিয়াছ । পুরুষ পুরুষকে ডাকে রে কিংবা ও রে বলিয়া, স্ত্রীলোককে ডাকে েল ৷ এবং ও লে ! বলিয়া । বহুকাল হইতে এই রীতি বৰ্ত্তমান ; শকুন্তলার সখীরা শকুন্তলাকে হ ল ৷ শউন্তলে বলিয়া ডাকিতেন। রুটি কোমলতা পাইয়া কি লুচি তে পরিণত হইয়াছে ? ল কৃ ল কৃ, লি কৃলি ক, লি ক লি কে প্রভৃতি শব তরল চাঞ্চল্যের পরিচয় দেয়। সংস্কৃতে যাহাকে লে । ল জিহবা বলে, উহা লে লিহা ন হইয়া ল ক ল ক, করে, তখন উহাতে ল ৷ ল ৷ ( সংস্কৃত ? ) নিঃস্থত হয়। উপাদেয় খাদ্য দেখিলে জিহবায় ল ৷ ল পড়ে, উহার জন্য লা লা নি হয় । ল চ পচ তারল্যের ব্যঞ্জক ; লে ৷ চচ্চ । অতি তরলপ্রকৃতির মানুষ ; সংস্কৃত ল ম্প ট শব্দের বাঙ্গাল উহাই। ‘ল টপ ট জটাজুট সংঘট গঙ্গা’ এই বাক্যে মহাদেবের চাঞ্চল্য প্রকাশ করিতেছে। ল ট ল ট, ল টা , ল ট r স, লট ঘ ট প্রভৃতিও ঐরূপ ভাবের পরিচয় দেয়। লি টপি টে লোকে কাজের শেষ করিতে পারে না ; একই কাজে তরল পদার্থের মত আপনাকে জড়াইয়া কাল গৌণ করে বা লি টি র পি টি র করে। ল ড় লড়, ল ড় বড়, লু র লুর, ল পল প প্রভৃতি এবং ল শ ল শে, লি ং লিঙে প্রভৃতি ল-কারাদি শব্দে তারল্য, চাঞ্চল্য ও দেীৰ্ব্বল্যের ভাব মিশ্রিত হইয়া আছে। লে লে শব্দে কুকুর লে ল ৷ ন হইতে এক জন মানুষের পিছনে অন্য জনকে লে ল ৷ ই য় ৷ দেওয়া আসিয়াছে। ল । ফ (লম্ফ ) দেওয়া, লুফি য় । লওয়া, লুকি য়। থাকা, লুটি য় । চলা প্রভৃতির ল’য়ে ঐ ভাবের কোন সম্পর্ক আছে কি না, বিচারের বিষয়। ল ত i র মত ও লু তার মত থাটি সংস্কৃত শব্দের ল-কারাদিত্বও সন্দেহজনক। সংস্কৃতে বা বাঙ্গালায় যেখানে ল’য়ের বাহুল্য সেইখানেই যেন অ i লু ল ৷ য়ি ত কুন্তল অর্থাং এ লো চুলে র মত ল ট প ট হইয়। এ লি য় । পড়ার ভাব আসে। মধুর-রস- েলা লুপ বৈষ্ণব কবির স্বভাবতই তাহাদের কবিতা মধ্যে কোমল দস্ত্য বর্ণের, বিশেষতঃ ন-কারের আর ল-কারের ছড়াছড়ি করেন ; নতুবা আমরা ললিত-লবঙ্গ-লতা-পরিশীলন-কোমল-মলয়-সমীরে, কলিন্দ-নন্দিনী তটে ননন্দ নন্দ নন্দন, ‘কালিন্দী-জল-কল্লোল-কোলাহল-কুতুহলী’ ইত্যাদি কবিতা পাইতাম না। বাঙ্গালায় বৈষ্ণব পদাবলী মধ্যেও ইহার প্রচুর দৃষ্টান্ত মিলিবে । বাঙ্গালায় যুক্তবর্ণ ব্যতিরেকে অন্যত্র উষ্ম বর্ণের ত্ৰিবিধ উচ্চারণ ( শ, ষ, স) বজায় নাই ; এই যুক্তবর্ণের অধিকাংশই আবার সংস্কৃত শব্দ বা সংস্কৃতমূলক শব্দ। খাটি বাঙ্গালায় ঐ তিন উষ্ম বর্ণের পার্থক্য রাখার বিশেষ হেতু নাই। সেকালের পুথিপত্র লেখাতে এক স’ তিনের কাজই চালাইত। আমর যদৃচ্ছাক্রমে স ও শ দু-ই ব্যবহার করিব। বলা বাহুল্য যে, উষ্ম বর্ণ বিশেষতঃ বায়ুর চলাচল স্মরণ কবাইয়া দেয়। বায়ুর সহিত উহার সম্পর্ক অতি নিকট। কণ্ঠনিঃস্থত বায়ু জিহবার পাশ কাটাইয়া,